পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ) বিবিধ প্রসঙ্গ—অতি প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার অবশিষ্ট প্রমাণ ২২১ স্ত্যার উমার হাইয়াৎ খা । তিনি লিখিয়াছেন, যে, ইহঁাদের কাহারও কাহারও কুলজী আনাইয়া তিনি দেখিয়াছেন, করিবার কোন কারণ নাই । র্তাহার। আরও বলেন, যে, মোহেন-জো-দড়োর বর্তমান স্তরের আরও অনেক নীচে যে, তাহাতে কেবল বিদেশী নামই আছে ; কিন্তু বস্তুতঃ র্তাহীদের অনেকের “রাজা” উপাধি এবং পারিবারিক বিবাহাদি নানা অনুষ্ঠানে হিন্দু আচার ও পদ্ধতির অনুসরণ প্রমাণ করে, যে, তাহার। হিন্দুবংশীয়, রাজপুতবংশীয়। এইরূপ সব পরিবারের পূর্বপুরুষেরা কেন হিন্দু বা বৌদ্ধ ধৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়াছিলেন, হিন্দু মহাসভা তাহা ভাবিয়া দেখিলে ভাল হয়। কারণ, ইহা নিশ্চিত, ধে, কেবল 'অস্পৃশ্য” ৪ “অনাচরণীয়” লোকদের মধ্য হইতেই মুসলমান সম্প্রদায় পুষ্টি লাভ করে নাই, অন্যান্য শ্রেণীর মধ্য হইতেও করিয়াছে। অতি প্রাচীন ভারতীয় সম্ভ তার অবশিষ্ট প্রমাণ এযাবৎ প্রস্তর মূৰ্ত্তি, শিলালিপি, মুদ্র প্রভৃতি ভারতবর্যের প্রাচীন সভ্যতার প্রমাণ ঋগ্বেদাদি প্রাচীন গ্রন্থ ছাড়া আর যাহা ছিল, তাহ পাশ্চাত্য পণ্ডিতদিগের মতে খৃষ্টপূৰ্ব্ব সহস্ৰ বৎসর পূর্কেরও নহে। কিন্তু শ্ৰীযুক্ত রাখাল দাস বন্দ্যোপাধ্যায় সিন্ধুদেশের মোহেন-জো-দড়ে নামক স্থানে এবং শ্ৰীযুক্ত দয়ারাম সাহনী পঞ্জাবের হরপ্পা নামক স্থানে যখন অতি প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার নিদর্শন স্বরূপ অট্টালিকা, সীলমোহর, অলঙ্কার, অস্ত্রশস্ত্র প্রভৃতি আবিষ্কার করিলেন, তখন পাশ্চাত্য পণ্ডিতদের ও মতে ঐ সভ্যতার বয়স খৃষ্টপূৰ্ব্ব তিন হাজার বৎসর অতুমিত হইল । বালুচীস্তানেও এইরূপ সভ্যতার চিহ্ন আবিষ্কৃত হইয়াছে। মোহেন-জে-দড়োতে এপয্যন্ত যত দূর খনিত হইয়াছে, তাহাতেই তত্ৰত্য ভারতীয় সভ্যতার বয়স এখন হইতে ৫০০০ বৎসর আগেকার বলিয়া পাশ্চাত্য পণ্ডিতদিগের দ্বারা অনুমিত হইয়াছে। র্তাহারী:ভারতীয় কোন জিনিষকে যথাসম্ভব আধুনিক প্রমাণ করিতে যতটা উৎসাহী, প্রাচীন বলিয়া প্রচার করিতে ততটা উৎসাহী নহেন। অতএব এক্ষেত্রে তাহাদের কথা পক্ষপাতদুষ্ট বলিয়া মনে পৰ্য্যস্ত প্রাচীনতর সভ্যতার নিদর্শন আছে। তন্মধ্যে প্রাচীনতমগুলি হয় ত ৮৯ হাজার বৎসর পূৰ্ব্বের। সালে যুগ্ম হরিণ-মুখ-যুক্ত অশ্বথ বৃক্ষ যাহা হউক, ৫০ ০০ বৎসর আগে যে সভ্যতা সিন্ধুদেশে ছিল, তাঙ্গ বেশ উচ্চ রকমের ছিল বলিয়াই মনে হয়। কারণ, দেখা যাইতেছে, যে, তখন লিপি প্রচলিত ছিল । আমরা যে তিনটি সীল মোহরের প্রতিলিপি দিলাম, তাহ হইতে তখনকার অক্ষরের চেষ্টার বুঝা যাইবে । উহা একপ্রকার চিত্রলিপি ( Pictograph ) । ঐ লিপি ও তাহার ভাষা এখনও পঠিত হয় নাই। মোহেন্‌-জেদড়োতে একটি ছোট রৌপ্যমুদ্রা পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে প্রাচীন বাবিলোনীয় লিপি আছে। যদি প্রাচীন বাবিলোনীয় এবং প্রাচীন সিন্ধুদেশীয় উভয় অক্ষরে লিখিত একই কথা কোন প্রাচীন জিনিষে অতঃপর পাওয়া যায়, তাহা হইলে প্রাচীন সিন্ধু দেশের লিপি পড়িবার সুবিধা হইবে। প্রাচীন সিন্ধুদেশের বাসভবন বেশ প্রশস্ত ও ইষ্টকনিৰ্ম্মিত ছিল । কামরা গুলি বড় বড় ছিল, এবং এক একটি কুঠরী সংলগ্ন আলাদা কূপ ও পাকা স্নানাগার ছিল। তা ছাড়া, রাস্তার দুপাশে প্রায় দুই হাত নীচে ইটের পাকা নদাম ছিল ৷ নদামা গুলি ইটে আচ্ছাদিত । প্রত্যেক বাড়ী হইতে সংকীর্ণতর নৰ্দ্দামা দিয়া জল আসিয়৷ রাস্তার নদীমায় পড়িত। বৰ্ত্তমান কালে ত আমরা খুব সভ্য হইয়াছি মনে করি, কিন্তু এখনও আমাদের অধিকাংশ শহরে পাকা ইষ্টকাবৃত ভাল নৰ্দ্দামা নাই, গ্রামে ত নাই-ই ;