পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] যাহা হউক, বহুব্যয়সংকুল কমিশন ত নিযুক্ত হইল । এখন তাহার দ্বারা ভাল কাল্প হইলেই মঙ্গল । আমাদের দুটি আশঙ্কা আছে। ১ম, কমিশন বসার ফলে কতকগুলি উচ্চবেতনভোগী ইংরেজ কৃষিবিং নিযুক্ত হইবে ; ২য়, কমিশন যদি বা ভারতীর কৃষির উন্নতির জন্য ভাল কিছু প্রস্তাব করেন, তাহা কার্ষ্যে পরিণত কমিবার নিমিত্ত যথেষ্ট টাকা মিলিবে না । কমিশনের সভাপতি নিযুক্ত হইয়াছেন, একজন ইংরেজ লর্ড ; নাম মার্ক ইস্ অব লিনলিথ গো । তিনি ৪২৬০০ একার অর্থাৎ প্রায় একলক্ষ ত্ৰিশহাজার বিঘা জমীর মালিক, এডিনবরার রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটির সভ্য, ১৮৮৭ সালে জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন, এবং ইউরোপীয় যুদ্ধে লড়িয়াছিলেন । ইহার মধ্যে র্তাহার কৃষিবিদ্যায় পারদর্শিতার কোন লক্ষণ ত দেখিতেছি না। জমী থাকিলে কৃষিবিদ্যার প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভের সুবিধা হয় বটে ; কিন্তু বাংলাদেশে বিস্তৃত জমীদারীর মালিক অনেক আছেন র্যাহারা কৃষিবিদ্যার “ক’ও জানেন না। ইংরেজরা নিজেই যতটুকু স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছেন, তাহা হইতেই জানা যায়, যে, কৃষিতে র্তাহারা পাশ্চাত্য অনেক দেশের পশ্চাতে পড়িয়া আছেন। যথা চেম্বাসের নূতন এনসাইক্লোপীডিয়াতে দেখিতে পাই লিখিত হইয়াছে— “Although agricultural research has never received in this country the attention that has been `ಗ್ಗಿನ್ಗ್ಸಿಲ್ಗಳ್ದ agricultural stations, , and one that has done the most to lay the foundations of agricultural science”. কৃষিগবেষণায় ইংলণ্ড আমেরিকার ওইউরোপের অনেক দেশের পশ্চাতে পড়িয়া আছে, স্বীকার করিয়াও বলা হইতেছে, যে, ইংলণ্ডে সৰ্ব্বপ্রাচীন কৃষিচর্চার প্রতিষ্ঠান আছে এবং তাহাতে কৃষিবিজ্ঞানের ভিত্তিস্থাপনের জন্য সকলের চেয়ে বেশী কাজ করা হইয়াছে। তাহ মানিয়া লইলেও, একথাটা ত সত্য, যে, সেই ভিত্তির উপর কৃষিবিজ্ঞানকে স্থাপিত করিয়া অন্য জাতিরা উহাকে যত উন্নত করিয়ছে, ইমরেজরা তাহা করিতে পারে নাই । বৰ্ত্তমান এপ্রিল মাসের ওয়েলফেয়ারে বিখ্যাত জানালিষ্ট অর্থাৎ সাংবাদিক সেন্ট নিহাল সিংহ ( ইহা

  • 3

বিবিধ প্রসঙ্গ-কৃষি-কমিশন ২২৫ তাহার ছদ্ম নাম, আসল নাম লাল সিংহ ) লিখিয়াছেন, এখন কোন কোন স্ববুদ্ধি ইংরেজ স্বীকার করিতেছেন, যে, কৃষিবিদ্যা শিখিবার জন্ত তাহাদিগকে 'অন্ত কোন কোন জাতির পাদমূলে শিক্ষার্থীরূপে উপবেশন করিতে হইবে। বিলাতের সরকারী কৃষিমন্ত্রীর অধীন ষ্টাটিষ্টিক্যাল বিভাগের কৰ্ত্ত টম্সন সাহেব একটি প্রবন্ধে কৃষিবিষয়ে ডেন্মার্কের শ্রেষ্ঠতা প্রদর্শন করিয়াছেন । According to that authority, agricultural production in , Britain falls short of such production in Denmark by more than fifty per cent. Ole hundred acres in Denmark yield £954, while in Great Britain the return from the same area is Only £612. Not only does the Dane get more out of his land than does the Briton. But the Dane is also able to provide employment to a greater number of persons on a given measure of land than the British farmer can do. In Denmark 57 cultivators find profitable employment on 1,000 acres of land, while in Britain the same area gives work to only 40 persons. ইংলণ্ড যদিও অন্য অনেক পাশ্চাত্য দেশ অপেক্ষা কৃষিতে অকুন্নত, তথাপি কৃষি-কমিশনে যে-সব বিদেশী লোক নিযুক্ত হইয়াছেন, তাহারা সবই ইংরেজ । দেশী সভ্যদের মধ্যেওঁ কেহ কৃষিতে বিশেষজ্ঞ নহেন । কয়েক জন ডেনকে কিম্বা কৃষিবিদ্যায় কাৰ্য্যতঃ পারদর্শী অন্য কোন জাতীয় কয়েকজন লোককে নিশ্চয়ই কমিশনের সভ্য নিযুক্ত করা উচিত ছিল। কিন্তু তারাতে ইংরেজের ইজ্জৎ থাকিবে না ! কিন্তু ইজ্জতের কথা ছাড়িয়া দিয়া যদি কাজের কথা ধরা যায়, তাহা হইলে দেখা যাইবে, যে, শুধু কৃষিতে নহে, অন্য অনেক বিদ্যাতেই মাঝারী রকমের বা নিরেস রকমের ইংরেজ বিশেষজ্ঞকে যত বেতন দিতে হয়, তাহার চেয়ে কম বেতনে ইংরেজের চেয়ে সরেস অন্যজাতীয় বিশেষজ্ঞ পাওয়া যায়। আমেরিকার বিখ্যাত সমাজতত্ত্ববিং অধ্যাপক রস ভারতভ্ৰমণানন্তর দেশে ফিরিয়া গিয়া সেঞ্চুরী ম্যাগাজিনে যে প্রবন্ধ লিখিয়াছেন, তাহাতে বলিয়াছেন, ভারতবাসী ইংরেজ চাকর্যেরা যত বেতন পায় তাহা তাহাদের মত লোকদের স্বদেশে রোজগারের দ্বিগুণ ! যাহা হউক, দুঃখ করিয়া লাভ নাই। পরাধীনতার শাস্তি এই, যে, টাকা বেশী দিয়া ফল মোটেই পাওয়া যায় না কিম্বা কম পাওয়া যায় ।