পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] প্রণীত হইয়াছে । সতর্ক না করিয়া দিয়া জনতার উপর গুলি চালান বন্ধ করিবার জন্য সরকার প্রথমে নিজেই একটি বিল পেশ করিয়া পরে তাহ প্রত্যাহার করেন। তাহার পর বেসরকারী সভ্যদের সেইরূপ ব্যবস্থা প্রণয়ন করিবার চেষ্ট সরকার ব্যর্থ করিয়াছেন । শাসন ও বিচার কার্য্য একই শ্রেণীর কৰ্ম্মচারীর হাতে থাকায় জুলুম ও অবিচারহয় ; কিন্তু বহুবৎসর পূৰ্ব্বে হইতে এই দুই কাৰ্য্যের পৃথকৃকরণ আবশ্বক বলিয়া স্বীকৃত হইলেও বিলাতের ভূতপূৰ্ব্ব প্রধান বিচারপতি রেডিঙের আমলেও এই সংস্কার সাধিত হয় নাই । ব্রিটিশ উপনিবেশ সকলে ভারতীয়দের অবস্থা ও অধিকার সম্বন্ধে লর্ড রেডিং লর্ড হার্ডিঙের মত দৃঢ়তা দেখাইতে পারেন নাই । মাননীয় শ্রীনিবাস শাস্ত্রীর চেষ্টায়, অষ্ট্রেলিয়ায় যে অল্পসংখ্যক ভারতীয় আছে, তাহাদের কিছু স্থবিধা হইয়াছে। অন্ত কোন উপনিবেশে সুবিধা ত হয়ই নাই, দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থা খুব খারাপ হইবার নিশ্চিত সম্ভাবনা হইয়াছে । ব্রিটিশ গিয়ানুতে কুলীচালান ভারতীয় কোন রাজনৈতিক দলের অমুমোদিত নহে। তাহা কিন্তু রেডিং সাহেবের আমলে মঞ্জুর করা হইয়াছে। তিনি ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভা দ্বারা প্রণীত ব্রিটিশ উপনিবেশসমূহের প্রতি প্রতিশোধের আইন জারী করেন নাই,এবং উহার প্রস্তাব অনুসারে দক্ষিণ আফ্রিকার কয়লার উপর আমদানী করও বসান নাই । একজন বিখ্যাত ভারতীয় জনসেবক দক্ষিণ আফ্রিকার খৃষ্টীয় সভাসমিতিগুলিকে ভারতীয়দিগের পক্ষসমর্থন করাইবার নিমিত্ত – বার পাসপোর্ট ( ছাড়পত্র বা অনুমতিপত্র ) চাহিয়াছিলেন। তাহা তাহাকে দেওয়া হয় নাই । ভারতবর্ষের সৈন্যদলকে “ভারতীয়” করিবার জন্য যে আস্তরিক চেষ্টা কাৰ্য্যতঃ হওয়া উচিত, লর্ড রেডিং তাহ ఇp" করেন নাই। উচ্চ সেনানায়কদের সকল বা অধিকাংশ , পদে ভারতীয়ের নিয়োগ স্বদূরপরাহত হইয়া রহিয়াছে। ভারতীয় রণতরি বিভাগের বহুবাড়ম্বর পূর্বক স্বচনা কেবল হাস্তোদ্দীপনই করে। ইঞ্চকেপ কমিটি যে ভারতের সৈনিক ব্যয় পঞ্চাশ কোটি করিতে বলিয়াছিলেন, তাহ রেডিঙের আমলে প্রধান সেনাপতি অসম্ভব বলিয়াছেন । বিবিধ প্রসঙ্গ— સ ૭૭ লবণশুদ্ধ বৃদ্ধি প্রভৃতি কত কর বৃদ্ধি এবং কত নামঞ্জুর বরাদ পুনর্মগ্র যে রেডিং ভারতশাসনার্থ অবশুপ্রয়োজনীয় বলিয়া সার্টিফিকেট দিয়া করিয়াছেন, তাহার লম্বা তালিকা এখানে দিবার স্থান নাই । বেসরকারী সভ্যদের প্রস্তাবিত অনেক অত্যাবশ্বক বিল রেডিংএর গবন্মেণট বর্জন করিয়াছেন। নূতন ট্যাক্স যে কত প্রকারের কত বসিয়াছে, তাহার পূরা ফর্দ দিবার জায়গা নাই, এখন সময়ও নাই। নানা প্রকার ডাকমাশুল বৃদ্ধি ইহার একটা সৰ্ব্বজনবিদিত দৃষ্টান্ত। মোটের উপর বলা যায়, যে, প্রায় গত ছয় বৎসর ধরিয়া পঞ্চাশ কোটি টাকার উপর অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায় হইয়া আসিয়াছে। এমন করিয়া দরিদ্রপেষণ ও দরিদ্রশোষণ দ্বারা ভারতগবন্মেন্টের আসন্ন-দেউলিয়া বদনাম দূর করা কোন শ্রেণীর বাহাদুরী, বলা অনাবশু্যক । পুরাতন আইনের বেআইনী অপব্যবহারের দ্বারা এবং নূতন বেআইনী আইন প্রণয়ন দ্বারা দেশের লোকদের উপর কত যে অত্যাচার হইয়াছে, তাহার বর্ণনা প্রবাসীর সমস্ত পাতা গুলাতেও কুলাইবে না । গান্ধীজি, আলী ভ্রাতৃদ্বয়, লাজপৎ রায়, চিত্তরঞ্জন দাশ, মোতীলাল নেহরু, জবাহেরলাল নেহরু, আবুল কালাম আজাদ, প্রভৃতি কত দেশনায়ক তথাকথিত বিচারের পর কারারুদ্ধ হইয়াছেন, কোন নৈতিক নিয়ম ভঙ্গ করার জন্য নহে কিন্তু রাজনৈতিক প্রয়োজনে । বহুসংখ্যক জনসেবক বিনাবিচারে বন্দী হইয়া আছেন। রেডিংএর আমলে যত হাজার লোক কোন দুনীতির কাজ না করিয়াও জেলে গিয়াছে, আর কোন বড়লাটের আমলে তত যায় নাই। মোপ লা বিদ্রোহ দমনার্থ অত্যাচার হইয়াছে। নিরপরাধ, প্রতিশোধসমর্থ অথচ স্বেচ্ছায় প্রতিশোধে পরাজুর্থ আকালী শত শত বীরকে কাপুরুষের মত নিষ্ঠুর প্রহার এবং জেলে অমানুষিক নিৰ্য্যাতন, রাজবন্দী ও রাজনৈতিক বন্দীদের প্রতি নিষ্ঠুরতা ও তাহার ফলে তাহাদের অনেকের প্রায়োপবেশন সরকারী কৰ্ম্মচারীদের দ্বারা নির্দোষ লোকদের সম্পত্তি লুট, চরমনাইরের অত্যাচার, অনেক কংগ্রেস ও খিলাফং আফিস্ ও তৎসমুদ্বয়ের কাগজপত্র ধ্বংস, জাতীয়