পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইহার পরে তিনি নিজেই আনন্দের নিকটে গমন করিয়া নারীগণের আগমনের কথা উত্থাপন করিলেন এবং জিজ্ঞাস করিলেন—“র্তাহারা কি কিছু উপহার দিয়াছেন ?” আনন্দ বলিলেন, “র্তাহারা পাচ শত বহিৰ্ব্বাস দান করিয়াছেন " তখন রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন— “আপনি পাচ শত বহিৰ্ব্বাস দ্বারা কি করিবেন ?" আনন্দ বলিলেন—“মহারাজ, যে সমুদায় ভিক্ষুর চীবর জীর্ণ হইয়াছে, তাহাদিগের মধ্যে বিভাগ করিয়া দিব ?” রাজা । পুরাতন জীর্ণ চীবর দ্বারা কি করিবেন ? আনন্দ । এ সমুদায় দ্বারা উত্তরাস্তরণ ( সম্ভবতঃ বালিশের ওয়াড় ) করিব । রাজা । পুরাতন উত্তরাস্তরণ দ্বারা কি করিবেন ? আনন্দ । বালিশের খোল করিব । রাজা । পুরাতন বালিশের খোল দ্বারা কি করিবেন ? আনন্দ। ভূমির আস্তরণ করিব । রাজা । পুরাতন ভূমির আস্তরণ দ্বার। কি করিবেন ? আনন্দ । পাদপুঞ্ছনী ( অর্থাৎ পা পুছিবার কাপড় ) করিব । o রাজা । পুরাতন পাদপুঞ্ছনী দ্বারা কি করিবেন ? আনন্দ । রজোহরণ ( অর্থাৎ ঝাড়ন ) করব । রাজা । পুরাতন রজোহরণ দ্বার কি করিবেন ? আনন্দ । পুরাতন রজোহরণ কর্তন করিয়া সেই সমুদায়কে মৃত্তিকার সহিত মদন করিব এবং তাহা দ্বারা প্রাঙ্গণ লেপন করিব । ইহা শুনিয়া রাজা বলিলেন, “শাক্যপুত্রীয় শ্রমণগণ সমুদায় বস্তুরই সদ্ব্যবহার করেন, কোন বস্তুরই অপচয় করেন না ।” ইহার পরে তিনি আনন্দকে আরও পাচ শত থানা বস্ত্র প্রদান করিলেন । আনন্দ ও ভিক্ষুসঙ্ঘ বুদ্ধ মহাকশ্বপকে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ শিষ্য বলিয়। মনে করিতেন। সম্ভবতঃ এই জন্যই বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণের পরে ভিক্ষুগণ তাহাকেই নেতরূপে গ্রহণ করিয়াছিলেন । প্রবাসী —জ্যৈষ্ঠ, S “ එළු [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড বুদ্ধের জীবিতাবস্থায় তাহার উপদেশসমূহ মুখে মুথেই চলিয়া আসিতেছিল। র্তাহার পরিনিৰ্ব্বাণের পরে সকলেরই মনে হইল যে র্তাহার উপদেশসমূহ সংগ্রহ করা আবশ্বক এবং সংগ্ৰহ করিয়া সম্মিলিত ভাবে সেই সমুদায় কীৰ্ত্তন করাও আবশ্যক। ভিক্ষুগণ মহাকশুপকে এই কার্য্যের জন্য ভিক্ষু নিৰ্ব্বাচন করিতে অনুরোধ করিলেন । তদনুসারে চারি শত নিরানব্বই জন নিৰ্ব্বাচিত হইল । কিন্তু তিনি আনন্দকে নিৰ্ব্বাচন করিলেন না । ইহা দেখিয়া ভিক্ষুগণ মহাকশ্যপকে বলিলেন :– “আয়ুষ্মান আনন্দ এখনও অস্ত্ৰ লাভ করেন নাই সত্য, কিন্তু তিনি আসক্তি, দ্বেষ, মোহ, বা ভয়বশতঃ বিপথে গমন করিতে পারেন ন! এবং তিনি ভগবানের নিকটে থাকিয়া ধৰ্ম্ম ও বিনয় বিষয়ে শিক্ষা লাভ করিয়াছেন। সুতরাং আয়ুষ্মান আনন্দকেও নির্বাচন করা হউক ।” - তখন মহাকশ্যপ আনন্দকে ও নিৰ্ব্বাচন করিলেন । এই সময়ে বুদ্ধের উপদেশকে দুই ভাগে ভাগ কর} হইত। ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীদিগের আচার ব্যবহারের জন্য যে বিশেষ বিশেষ নিয়ম তাহাকেই ‘বিনয়’ নাম দেওয়া হইয়াছিল। বৌদ্ধ ধৰ্ম্মের মতামত এবং ধৰ্ম্মজীবন গঠন করিবার জন্য যে উপদেশ তাহার নাম "ধৰ্ম্ম” ৷ উপালি ‘বিনয়’ বিষয়ে এবং আনন্দ "ধৰ্ম্ম’ বিষয়ে সৰ্ব্বাপেক্ষা দক্ষ ছিলেন । এই জন্য ইহঁাদিগকেই প্রশ্ন করিয়া ঐ ঐ বিষয়ে বুদ্ধের মতামত স্থিরীকৃত হইয়াছিল। আনন্দকে নি গ্রহ এই সময়ে মহাকতাপপ্রমুখ ভিক্ষুগণ আনন্দকে নিগৃহীত করিয়াছিলেন । যে যে বিষয়ে তাহাকে অপরাধ বলিয়া মনে করা হইয়াছিল তাঙ্গা এই— মৃত্যুর পূন্সে বুদ্ধ আনন্দকে বলিয়াছিলেন—সঙ্ঘ যদি ইচ্ছা করে তাহা হইলে ক্ষুদ্র ও অনুক্ষদ্র নিয়মসমূহ বর্জন করিতে পরিবে । কোন কোন বিধি ক্ষুদ্র ও অমৃক্ষড় আনন্দ তাহা বুদ্ধকে জিজ্ঞাসা করেন নাই । এখন মহাকগুপপ্রমুখ ভিক্ষুগণ আনন্দকে বলিলেন, “আবৃষ আনন্দ । তুমি ভগবানকে জিজ্ঞাসা ক,