পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૪8 অনটন কল্পনা করিয় তাহার সত ন কষ্ট হইয়াছিল তাহার সচ্ছলতার সংবাদ জানিয়া তদপেক্ষ যেন বেশী :থ বোধ হইল। এর সাধনার পথে ত জঞ্জালের বন্ধন নাই। এ বদ্ধ নয়। এ যে অন্ধ। শিশিরের কাছে তাহার মত কিছু আশ। ভরস ছিল আজ হঠাৎ যেন সেসমস্ত শূন্যে মিলাইয় গেল। এই ধূলির ব্যাপারীর কাছেই সে রত্বের আশা রাপিয়াছিল । শিশির বলিল, ব্যবসা দু’দিন বাদে খুললে ও করে। কাছে জবাবদিহি নাই । কিন্তু কপি যে আজই চাই । নতুব অমিত নিতান্ত সাদা ভাবে বলিল, নাই বা থাকুল এবারে আমার লেখ । —ও সৰ্ব্বনাশ ! তাহ’লে সঙ্গদয় পাঠকবৃন্দ চিঠির বানে আমাকে উড়িয়ে দেবেন। এমন সময়ে স্থশাস্ত প্রবেশ করিল ! বিজ্ঞানে ডাক্তার উপাধি লইয়া মুশাস্তু অল্পদিন হুইল দেশে ফিরিয়াছে। কলিকাতায় নামিয়াই অসহ গরম লোপ হওয়ায় দার্জলিংএ ছিল । সম্প্রতি পাহাড় ইষ্টতে ফিরিয়৷ কলেজের কার্য্যে যোগদান করিয়াছে । অমিত নমস্কার করিয়া অভ্যর্থনা করিয়া কহিল, এই যে এসেছেন । তারপর শিশিরের পরিচয় দিয়া কঠিল, ইনিই ‘মন্দিরের পুরোহিত । এরই কথা কাল আপনাকে বলেছিলাম । শিশির-বাবুর কবিতা পড়েন নি ? স্থশাস্তু চিস্তা করিয়া কতকট আপন মনে কহিল, শিশিরকুমার । শিশিরকুমার । । পড়েছি বই কি ! তবে কি জানেন, কাব্যরস যে টেষ্ট, টিউবে ভ’রে পড়া যায় না ভাই বৈজ্ঞানিকের তা নিয়ে নাড়াচাড়া কেমন যেন অনধিকারচচ্চ বলে ঠেকে । শিশির পূৰ্ব্বে স্থশাস্তকে দেখে নাই । অমিতার সঙ্গে পরিচয় আছে তাহাও জানিত না । তাহার অঙ্গে বিলাতী পোষাক পরিপাটি করিয়া পরিহিত। উজ্জ্বল মুখে সৌজন্য ফুটিয়া বাহির হইতেছে । কথায়-বাৰ্ত্তায়, কায়দা-কামুনে দুরন্ত । শিশির সমীহের সহিত কহিল, আজ্ঞে, কাব্যের জাতিভেদজ্ঞান নেই। সকলেরই সমান অধিকার কিন্তু আপনার বিজ্ঞানের দরজা আমাদের কাছে একবারে রুদ্ধ। বিলাত ইষ্টতে প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড বিদ্রোঙ্গ ক’রে অনধিকার প্রবেশের জন্য মাথা ঠুকূলে মাপ ফেটে যাবে তবু একটু ফাক হবে না। সুশাস্ত হাসিল । ইউরোপে একাধারে কেমন কবি ও বৈজ্ঞানিক, ঔপন্যাসিক ও গণিতজ্ঞ দেখিয়া আসিয়াছে তাহ বলিল এবং তাহারই রেশ টানিয়া ক্লাসিকরোমান্টিক আধুনিকতম সমস্ত সাহিত্য সম্বন্ধে অনেক কথা বলিল । স্বশাস্ত কথায়-বাৰ্ত্তায় কেমন একট। উচ্চ স্তর ফুটাইয়া তুলিল মমিত। তাঁহারই সঙ্গে তাল রাখিতে, ভাবিয়া চিন্তিয় দিব্য গুছাহয়। উত্তর দিতেছে । মশান্ত হঠাৎ অমিতাকে কহিল আপনার লেপায় একটা জিনিষ বিশেস ক’রে লক্ষ্য হয়— অমিত উদগ্রীর হইল, শিশিরও মনোযোগ দিল এবং অমিতার লেখার বিশেষুত্বের প্রসঙ্গে এ সম্বন্ধে নোবেলপ্রাইজ-প্রাপ্ত কোন কোন বিশ্বসাহিত্যিকের সঙ্গে তাহার কি আলাপ হইয়াছিল তাহাও উভয়ে শুনিল । * সাহিত্যের এমন গভীর আলোচনা অমিত। পূৰ্ব্বে কপন শোনে নাই । উৎসাহে আনন্দে তাহার মন নাচিয়া উঠিল ; তাহার মন সাহিত্যের হাওয়ায় ফানুষের মতন ভাসিতে চায়। প্রসঙ্গের পর প্রসঙ্গ তুলিয়া, প্রশ্নের পর প্রশ্ন করিয়া আলোচনাট টানিয়াই রাপিল এবং বর্তমান সাহিত্য-বিচার-অস্তে ভাবী সাহিত্য সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী পর্য্যন্ত চলিল। তারপর সুশান্ত বিদায় লইল । কিছুপূৰ্ব্বে অমিতার মনটা ভারী হইয়া উঠিয়াছিল । এই কথায়-বাৰ্ত্তায় তাই। কাটিয়া গেল। সে উচ্ছসিতকণ্ঠে শিশিরকে কহিল এদেশে বৈজ্ঞানিক কাব্যের ধার পারে না । আর কবি বিজ্ঞানের ছোয়াচ এড়িয়ে চলে । এমন দেশে সুশান্ত-বাবুর মতন লোক ভারী আশ্চৰ্য্য, না ? শিশির বলিল, আমাদের কাগজের জন্ম ওঁর লেখা চাই । 毒 泰 赛 毒 孩 পরদিনই স্বশাস্ত যখন অমিতাকে ইনষ্টিটুটে তাহার “ব্যোম’ বিষয়ক প্রবন্ধ-পাঠ-সভায় যাইবার জন্য নিমন্ত্রণ করিল। তখন সঙ্কোচ কাটাইয়া চট্‌ করিয়া অমিতা রাজী হইতে পারিল না। অমিতার বাহিরের পথ বন্ধ