পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిe প্রিযুত্রত ও কেদার দুজনেই বুঝতে পেরেছিল । তাতেই সে রাত্রে প্রিয়কে পড়া দিতে বলতেই সে ছলছল চোথে বলে উঠ ল “আমায় আর পড়াতে হবে না, গুরুমশাই ; নিজের পড়া ভাল ক’রে মুখস্থ কর । আজ বাদে কাল এগ জামীন আসছে—নিজে পড়াশুনো না করে ফেল হবে—আর সবাই তখন আমার দোষ দেবে। কেন গো, আমি বুঝি তোমায় পড়া করতে মানা করি!” কেদারের চমক্‌ ভাঙল, সত্যিই ত পড়াশুনে তার মোটেষ্ট এগোচ্ছে না । গেল ক’মাসে যে লেকচারগুলো সে এটেও করেছে সে স্বধু শরীর দিয়েই ; মনের সঙ্গে তার যোগ ছিল না । অবশ্য প্রিয়র কথা শুনে সে স্টেসে তার চুল নেড়ে দিয়ে তার চাবাঁ কেড়ে নিয়ে, নানা রকম ক’রে তাকে ভুলিয়ে ব্যাপারটাকে বেশ লঘু ক’রে দিয়েছিল। এখন কিন্তু দুপুর বেলা ছুটীর দিনে বই খাত খুলে বসে সে বেশ বুঝতে পেরেছে এ-বছর পরীক্ষায় তার 'ফেল' হওয়া অবশ্যম্ভাবী। হয়তে এটা “অদৃষ্টেরই লিখন", কিন্তু লোকে ত না বুঝে গলা জাহির ক’রে কত কি বলবে। এই রকম সাত পাচ কথাই সে ব’সে-ব’সে ভাবছিল, কোকিলের কুহুস্বর শোনবার দিকে তার মোটেই মন ছিল না। প্রবালের পড়া ছেড়ে দেবার কথা শুনে সে বরং একটা পথ দেখতে পেলে । এই অজুহাতে সেও পড়া ছেড়ে দিয়ে এক রকম নিশ্বাস ফেলে বঁাচতে পারে । মাতুষ কি নিষ্ঠুর, বইএর ভিতর দিয়েই যত কিছু মানব জীবনের নূতন-নূতন ভাবগুলির আস্বাদ পায়, সেগুলোকে সাক্ষাৎ জীবনে পরখ করতে গেলেই অমুনি সৰ্ব্বনাশ ! সবারি চোখ তাতে টাটিয়ে না উঠে আর যায় না। কেউ বা আবার লগুড় হাতে ছুটে আসবে। কবিরা যৌবনকে স্বর্ণযুগ ব’লে উল্লেখ করেছেন। এই যৌবন যখন মানুষের জীবনে তার রঙীন জয় পতাকা উড়িয়ে এসে গৰ্ব্বভরে বলছে “এ এখন আমার” তখন কি না সংসারের দশ দিক্ থেকে দশ রকম ব্যাপার চীৎকার ক’রে বলছে “এই কোথা যাও, এ কাজটা হয়নি, এটা শেষ ক’রে যাও ইত্যাদি ” । যাই হোক কেদার অতঃপর একেবারে মন ঠিক ক’রে ফেললে যে সে পড়াশুনে ছেড়ে দিয়ে বরং একটা কোনো প্রবাসী –জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ ২৬শ ভাগ, ১ম ও কাজে কৰ্ম্মে লেগে যাবে। আলসে কুঁড়ের মতন জমীদারী চাল চেলে বাপের ভাত যে পায়ের ওপরে পা দিয়ে বসে ধ্বংস করতে থাকৃবে না এ ঠিক্‌ ৷ • oftS বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি বেলা দুপুর—রোদ ঝা-বf করছে, গরমে প্রাণ আই-ঢাই, বাতাস সে ধে ক’রে আগুনের ইন্ধ নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে । পল্লীর গৃহিণীরা এই রোদেই তাদের সাধের কাস্থন্দি ; আম্স প্রভৃতি আচারগুলি নিয়ে নাড়া চাড়া করছেন। প্রবালের মা যশোদা ও বাদ পড়েননি ; দশ বছরের মেয়ে সুমতি • মার কাজে সাহায্য করছে । দুদিন আগে একটা বড় ঝড় হ’য়ে গিয়ে বিস্তর আমি পড়েছিল। এই সুযোগে সকলেই সেই আম সংগ্ৰহ ক’রে আচার করতে ব্য হয়েছেন। প্রবালের প্রৌঢ় কুর পিত। কাশীনাথ ঘরে মধ্যে শুয়ে এই গরমেও কাস্ছেন, আর মাঝে-মাঝে “স্থf জল দিয়ে যু|” “এক ছিলিম তামাক দেরে” বলে ডাক দিচ্ছেন। প্রবালদের সাংসারিক অবস্থা মোটেই স্বচ্ছঃ না। বাড়ীতে কাশীনাথ আর তার স্ত্রী ; ছেলে মেয়েদে মধ্যে প্রবাল আর স্বমতি । কিন্তু কাশীনাথের বৃদ্ধ ম আর একটি বিধবা বোন তিন চারটি ছেলে মেয়ে নিে চিরকাল তার ঘরই পূর্ণ করেছিলেন । কাশীনাথ স্কুল মাষ্টারী ক’রে মাসিক পঞ্চাশটি টাকা মাত্র তনখা পেতেন তাও কিছু বরাবর অতটাও ছিল না ; গোড়ায় কুf থেকে স্বরু হয়েছিল। সামান্য কিছু জমি-জমা ছিল বীে কিন্তু বিধবা মা বোনের বার ব্ৰত-উপবাস-পাৰ্ব্বণ, ব্রাহ্ম ভোজন পুরোহিতে দক্ষিণ বাবদ তাকে বিনা বাক্যব্যা মাহিনীর এক অংশ ছেড়ে দিতেই হ’ত সুতরাং সাধার গৃহস্থদের অবশ্যম্ভাবী যা পরিণাম তার হাত থেকে তিনি মুক্তি পাননি । অল্প-অল্প ক’রে ঋণের বোঝা বেড়ে চলেছিল। বছর খানেক পূৰ্ব্বে তার মার পরলোক প্রাf হয়, তার শ্রাখ-শাস্তি উপলক্ষেও আবার কিছু ঋণ হয়েছে মেয়েটির ইতিমধ্যে বিবাহ দিতে হয়েছে। ধান, জমী আ বসত বাটীর সংলগ্ন বাগানটি তার জন্যে মহাজনের কাে বন্ধক পড়েছে। এগুলো অবগু শতকরা সত্তর জন বাঙা গৃহস্থের সাধারণ জীবনের নক্স—এতে নূতনত্ব কিছু নেই