পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩১৪ বাগানের ব্যাপার ধরা পড়েছে, ছেলে ছোকরার অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে তা ত জানিসই । সরকার সন্দেহ করছেন এখনও অনেকে ধরা পড়বে, আর বেছে বেছে যত বাঙ্গালীদেরই ডিটেকটিভ আর দারোগ ইনস্পেক্টার এই সব পদে বাহাল করছেন। আমি বলি কি, তুই এ চাকরীর ওপর লোভ করিসন, তোদের অন্নের ভাবনা ভাবতে হবে না। এরপর বরং অন্য কোনো কাজে লেগে পড়িস।” কেদার বললে - “আমি ত ভাই, একাজে কিছুই দোষ দেখছিনা, পুলিশের লোকদের একটু ঘুর্ণাম আছে বটে, কিন্তু শুধু অর্থ আর ঘুষের ওপর লক্ষ্য না রেখে কৰ্ত্তব্য-বুদ্ধি নিয়ে যদি আমরা একে-একে এ-লাইনে ঢুকতে পারি হয় ত অল্পকালের মধ্যেই পুলিশ বিভাগের দুর্ণাম দূর হয়ে যেতে পারে। ঘুষ অবহু মানুষ অনেক সময় অভাবগ্রস্ত হ’য়ে নিয়ে থাকে। ঈশ্বর-কৃপায় অর্থাভাব যে আমার নেই তা তুমি জানছ।” প্রবাল একটু যেন অন্যমনস্ক হয়ে বললে—“কে জানে ভাই আমার বড় ভাল ঠেকৃছে না, তুমি প্রাণের বন্ধু তাই বলছি এ সময়টা যে রকম ধর-পাকড় চারদিকে আরম্ভ হয়েছে কে জানে ব্যাপার কদর গড়াবে ?” বাধা দিয়ে কেদার বলে “আমার প্রতি তেলামার অন্ধ স্নেহই তোমায় মিছে ভাবিয়ে তুলেছে, ব্যাপার আর কদূর গড়াবে কি ? গোটা কত মাথা ক্ষ্যাপা বাপে-খেদানে মায়ে-তাড়ানো ছেলে জুটে মাণিকতলায় কি বোমা-বারুদ তুবড়ী ত'য়ের করেছে তাতে কি আর ইংরেজ বাহাদুরের সিংহাসন ভাঙবে না কেল্লা ফাটুবে ? সরকার ছেলেগুলোকে ধ’রে এনে দিনকতক খাচায় ভ’রে রেখে দিলেই সব ঠিক হ’য়ে যাবে।” বলা বাহুল্য তখন স্বদেশী হাঙ্গামা সবে স্বরু হয়েছে । প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রবাল কিছু উত্তর দিলে না দেখে কেদার আবার । বললে—“পুলিশে নতুন এপয়েন্টমেন্ট নিচ্ছে বেশী-বেশী মাইনে দিয়ে—নইলে আমার মতন কাচা লোককে এক কথায় একশ টাকা দেবে কেন ? আমার ইচ্ছে ছিল দুই বন্ধুতেই যাই ; তা তুই বলছিস্ দেশ ছেড়ে যাবি না। পুরুষ হ’য়ে দেশের মায়া কাটিয়ে চাকরীর খাতিরে বিদেশ যাবি না এ কেমন গে। তোর বুঝি না।” প্রবাল বললে “না বোঝাই তোর মূখতা। বাড়ীতে বাবা ঐ রুগ্ন ; মা একা—এদের ফেলে কোথা যাব আমি ? তা ছাড়া পড়ে আর পড়িয়ে আমি যথেষ্ট আনন্দ পাই। নালিশ দাঙ্গা, মারপিট আর তার উণ্টো বিচার এ-সব ঝঞ্চাট আমি মোটেই সইতে পারব না। আর আনন্দ যে ভুলেও এ-সবের ত্রিসীমায় পা দেবে না তা আমি খুব বিশ্বাস করি।” এই সময় রুণ-ঠুন ক’রে চুড়ি বাজিয়ে ও চাবীর গোছা নেড়ে প্রিয়ত্রতা নিজের আবির্ভাব ঘোষণা করতেই দুই বন্ধু চেয়ে দেখলে রেকারী-ভরা মিষ্টি ফল ও ডিবা-ভর পান এনে প্রিয় টেবিলে রাখছে। কেদার বলে উঠল, “ঐ দ্যাখ তোর কি রকম মিষ্টি মুখের জোগাড় ইয়েছে। আচ্ছা ভাই তুই যে এত আনন্দ খুজে বেড়াস নতুন বউএর নতুন হাতের এই সেবাগুলিতে যে আনন্দ আছে তাকে তুই তবে আমল দিতে চাস না কেন ?” প্রিয় আর একবার ছুটে পালিয়ে গেল। প্রবাল মিষ্টি স্বরে গান ধরলে— “নূতন প্রেমে নূতন বধু আগা গোড়া সবই মধু হুলের খোচা কেবল রে ভাই অভাব অনটনে।” ক্রমশঃ ধনবিজ্ঞানের পরিভাষা শ্ৰী নরেন্দ্রনাথ রায় অনেকে আমার নিকট ধন-বিজ্ঞানের বাংলা পারিভাষিক তাহারই কতকগুলি প্রকাশ করিলাম। সবই ষে আমার শব্দগুলি জানিতে চাহিয়াছেন। আমি আমার প্রবন্ধ-গুলি ও পুস্তকে যে সকল শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকি স্বকপোল-কল্পিত তাহা নহে। এই গুলির মধ্যে (১) কতকগুলি অপর লেখকদিগের উদ্ভাবিত (২) কতকগুলি ব্যবসা