পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

«©Rს8 প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১০৩e [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড চঞ্জকাস্ত দেব ঘোষ ও খাদি প্রতিষ্ঠানের স্ত্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র দাশগুপ্ত মহাশয়ও অমঞ্জিত হইয়াছিলেন। স্থানীয় বহু মহিলা ঐ সভায় যোগদান করিয়া বিশেষ উৎসাহের পরিচয় দেন । এই সমিতির উদ্যোগে বালিকাগণের মধ্যে চরকা-কাটার প্রতিযোগিতারও অনুষ্ঠান করা হইয়াছিল । স্থানীয় ৫০টি বালিকা এই প্রতিযোগিতায় যোগদান করিয়ছিল । চরক পারদশী যুক্ত সতীশচন্দ্র দাশগুপ্ত মহাশয় ঐসময়ে উপস্থিত থাকিয় চরকা কাটিবার উৎকৃষ্ট প্রণালী বালিকাগণকে ও তাহদের শিক্ষকদিগকে বুঝাইয় দেন। লীযুক্ত ডাক্তার প্রফুল্লচন্দ ঘোষ এই উৎসবের সংশ্লিষ্ট মহিলা শিল্প প্রদর্শনীর দ্বীরোদঘাটন করেন। প্রায় ৭০০ শিল্প-দব। ইহাতে প্রদর্শিত হইয়াছিল। বিভিন্ন রকমের সীবন কাৰ্য্য, স্বচৗকায়া, কাপেটের উপর নক্স ও ছবি স্বনিপুন উল ও জরির কাজ ইত্যাদি দর্শকবৃন্দের চিত্ত. কর্ষণ করিয়ছিল । এতদ্ব্যতীত আশ্রমের সভ্যগণের স্বতীয় প্রস্তুত বহুবিশুদ্ধ ও অন্ধ খন্দরের ধুতি, শাড়ী প্রদর্শনীর শোভা বর্জন করে। বিদ্যাসাগর বাণীভবন— নারীজাতির মধ্যে শিক্ষা-বিস্তীর-কল্পে নারী-শিক্ষা-সমিতি যখন গ্রামে গ্রামে বালিকা বিদ্যালয় খুলিবার কাজে ব্যস্ত ছিলেন, তখন অনেক i. গ্রামেই দেখা গেল যে, লেখাপড়া এবং কিছু কাৰ্য্যকরী গৃহশিল্প শিথিতে ইচ্ছক বিধবার সংখ্যা নিতাস্ত কম নয়। আমাদের দেশে শিক্ষকতা করিবার জন্য শিক্ষা-প্রাপ্ত। শিক্ষয়িত্রীর সংখ্যা খুবই অল্প। নারীশিক্ষা *মিতি স্থির করিলেন যে, গ্রামে গ্রামে যে-সব বিধবার অবসর সময় rান, অথচ শিক্ষার অভাবে সে সময়ের সদ্ব্যবহার করিতে ੋਜ ন, তাহাদিগকে কিছু শিক্ষা দিয় যদি শিক্ষয়িত্রীর কাজে, "সবার কাজে এবং অর্থকরী শিষ্ঠকাজে নিযুক্ত করা যায় তবে দেশের ত কল্যাণ হইতে পারে। এই উদ্দেশ্য লইয়। ১৯২২ খ্ৰীঃ অব্দের ২৯শে ই কলিকাতায় “ৰাণ-ভবন" নামক প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হইয়াছিল। ম যাহার এখানে শিক্ষাধিনী হইয় প্রবেশ করিয়াছিলেন তাহার ই যে বিধবা ছিলেন তাহা নহে, বিধবা, সধবা ও কুমারী ই এই বিদ্যায়তনে , প্রবেশাধিকার দেওয়া হইয়াছিল, fখনও হয় । তবে অধিবাসিনী শিক্ষার্থিনীদের মধ্যে বিধবার “A বেণী ও বিধৰাঁর সকল প্রকার আচার নিয়ম যাহাতে করিয়া চলিতে পারেন, সে বিষয়ে পুর্ণদৃষ্ট রাখা হয়। বিধবাদের ধই এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত সেইজষ্ঠ বুরলাদেশের f যতীন্দ্রনাথ কুর বিধবাদের দুঃখৰণতর ও হিতৈষী বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নাম ইহার সহিত যুক্ত হইয়াছে। প্রথমে এখানে অল্প লেখাপড়া শিক্ষার সঙ্গে হুচশিল্প, ও জ্যাম, জেলি, আচার ইত্যাদি তৈয়ার করিবার প্রণালী এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে বোতলজাত করিবার প্রণালী শিক্ষা দেওয়া হইত। তখন র্যাহারা ভৰ্ত্তি হইয়াছিলেন তাহদের মধ্যে এমন অনেকে ছিলেন যাহারা সামান্ত লেখাপড়া জানিতেন,আবার এমনও কেউ কেউ ছিলেন র্যাহীদের বর্ণপরিচয়ও ছিল না। এখানে প্রথমে কিছুদিন লেখাপড়া শিক্ষা করিয়া উীদের মধ্যে অনেকে ট্রেনিং স্কলে শিক্ষাদান প্রণালী শিখিতেছেন ও কেহ কেহ কারমাইকেলমেডিক্যাল কলেজে সেবার কাজ বা নাশিংশিখিতে গিয়াছেন। নারীশিক্ষ সমিতির প্রচেষ্টার প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন কয়েকজন ডাক্তার সকল শিক্ষাথিনীকেই আহতের সদ্য প্রতিকার ও বাড়ীতে সাধারণ রোগের ও সংক্রামুক রোগের সেবার সম্বন্ধে শিক্ষিত করিয়া তুলিবার শিক্ষা দেন। নারী শিক্ষা সমিতির উদ্যোগে ছয়চিত্র সাহায্যে {মাতৃ মঙ্গল ও শিশু-মঙ্গল সম্বন্ধে যে সব বক্তৃতাদি হইত বাণীভবনের ছাত্রীরা নিয়মিতভাবে তাহাতে যোগ দিতেন । এখন এখানে জ্যাম, জেলি, আচার, বড়ি ও নারিকেলের নানাপ্রকার মিষ্টান্ন তৈয়ারী করার প্রণালী শিক্ষা দেওয়া হয়। চর্থার স্বতীয় তোয়ালে ও গামছা-বোন, কাট ছাট শেখানে ও জাম ইত্যাদি তৈয়ারী করা, পুতির কাজ ও নানারকমের স্বক্ষ হুচশিল্প কাটায় বোন, সোণ বাধীন শাখা তৈয়ারী, সোণার পাত, পালিশের কাজ এ-সমস্ত নিয়মিতভাবে শেখান হয়, এবং এই সমস্ত কাজ করিয়৷ শিক্ষার্থিনীরা আপনাদের হাত-খরচের টাকা উপার্জনও করেন। এখানে বাঙ্গালী ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজী ভাব, ভারতবর্ষের ইতিহাস, ভুবৃত্তান্ত ও ভূগোল, মধ্যইংরেজ বিদ্যালয়ের পাঠ্য গণিত, স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান, রচনা | লেখা নিয়মিতভাবে শিক্ষা দেওয়া হয় । সম্প্রতি বাণী ভবনের শিক্ষণীয় বিষয়গুলির আরও উন্নতি করিবার চেষ্ট হইতেছে.। মনোবিজ্ঞান, শিক্ষাদান প্রণালী, etথমিক বৈজ্ঞাৰিৰু , তথ্য, বিদেশের ইতিহাস ছিটের কাপড় তৈরি, রংকর ও ছাপ, নয়; প্রস্তুত করা, সতরঞ্চি ও গালিচা প্রস্তুত করা, কাপড়-ৰোন ইত্যাদি: শিখাইবার বন্দোবস্ত হইয়াছে। ভবনের দুইটি ছাত্রী সুরুল ক্রমিকেণ্ডর হইতে কাপড় রং করা ও ছাপার এবং গালিচা, সতরঞ্চি-বোনার প্রণালী শিখিয়া আসিয়াছেন।