পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 e২ বিলাতে ধৰ্ম্মঘট ও শ্রমিকধনিকের দ্বন্দ্ব বিলাতে কয়লার খনির ইংরেজ কুলিদের ও মালিকদের মধ্যে বেতন এবং শ্রমের সময়ের দৈর্ঘ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচন চলিতেছিল । তাহার স্বনিম্পত্তি না হওয়ায় খাদের শ্রমিকের ধৰ্ম্মঘট করিয়াছে। তাহাদের সহিত দরদ বশত: অন্য কোন কোন রকম শ্রমিকেরাও কাজ ছাড়িয়াছে। দাঙ্গাহাঙ্গাম চলিতেছে। এত বিরাট না হইলেও এরূপ ধৰ্ম্মঘট এবং দাঙ্গাহাঙ্গামা এবং "ধৰ্ম্ম”দাঙ্গাও বিলাতে আগেও হইয়াছে, পরেও হইবে । কিন্তু ইহা ইংরেজদের আত্মশাসন-অক্ষমতার প্রমাণ নহে ; কেবল মাত্র ভারতের দাঙ্গীতেই ভারতীয়দের আত্মশাসনে অসামর্থ্য প্রমাণিত হয় । ব্যতিহারিক সহযোগী ও স্বরাজীদের মিলন হইল না বোম্বাইয়ে যে সর্তটিতে স্বরাজী ও ব্যতিহারিক সহযোগীদের মিল হইবার সম্ভাবনা হইয়াছিল, সবরমতীতে সেই সৰ্বটির অর্থ সম্বন্ধে নেতাদের মতভেদ হওয়ায় মিল হইল না। আমাদের বিবেচনায় পণ্ডিত মোতীলাল নেহরু যেরূপ ব্যাখ্যা করিতেছিলেন, কোন অভিধান বা ন্যায়শাস্ত্র অনুসারে তাহা হইতে পারে না । চমৎকার শ্রমবিভাগ অর্থনীতিবিদ্যায় বর্ণিত আছে, যে, পণ্যদ্রব্যাদি উৎপন্ন করিতে হইলে তাহার এক একটি অংশ ও প্রক্রিয়া এক একজনের বা দলের দ্বার সম্পন্ন হওয়ায় কাজ শীঘ্র হয় ও নৈপুণ্যের সহিত হয়। ভারতবর্ষে অন্য রকম প্রয়োজনে অন্যবিধ চমৎকার শ্রমবিভাগ প্রচলিত আছে । যাহাতে সাম্প্রদায়িক ভেদ ও রেষারেষি স্থায়ী হইতে পারে, প্রতিনিধি-নিৰ্ব্বাচন, চাকরীর ভাগ, শিক্ষার স্বতন্ত্র ব্যবস্থা প্রভৃতি বিষয়ে তদনুরূপ বন্দোবস্ত করা ইংরেজদের কাজ । সাম্প্রদায়িক সদ্ভাব ও শান্তি স্থাপন বা রক্ষণ করার ভার ভারতীয়দের । তাহারা তাহা করিতে না পারিলে বনাম একমাত্র তাহাদেরই। ভেদবুদ্ধির প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩ee [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড দরুন দাঙ্গ হইলে তাহার জন্য দায়ী ভারতীয়েরা ; শান্তিস্থাপন চট করিয়া করিতে না পারিলে অপষশ ভারতীয়দের। শান্তি স্থাপনের যশট। প্রাপ্য পুরামাত্রায় ইংরেজের, যদিও শ্রমবিভাগটা আছে এইরূপ, যে, সরকারী ক্ষমতা ও অস্ত্র থাকিবে ইংরেজদের হাতে এবং “ঢালনাই খাড়া নাই ভারতীয় নিধিরাম সদর্ণর”দিগকে দাঙ্গা নিবারণ বা দমন করিতে হইবে । ammad শোকৎ আলীর আবিষ্কার মৌলানা শৌকৎআলী আবিষ্কার করিয়াছেন, যে, কাফেররা মরিতে ভয় করে, মুসলমানের মরিতে ভয় করে না। মুসলমানদের মধ্যে খুব সাহসী লোকের অভাব নাই । কিন্তু কাফেরদের মধ্যেও সেরূপ লোকের অভাব কখন ছিল না, এখনও নাই। দুৰ্দ্ধৰ্ষতা ও হিংস্রতাই যদি বীরত্বের লক্ষণ হয়, তাহা হইলে ও কাফের জঙ্গস খ৷ কি করিয়াছিল, এবং কাফের হর সিং নালুয়ার নাম এখনও আফগানিস্তানে কি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, মৌলানা সাহেব তাহা শুনিয়াছেন কি ? চন্দ্রকান্ত দেব ও যতীন্দ্রনাথ স্বর মেছুয়াবাজার স্ত্রীটে সহস্রাধিক দাঙ্গাকারীকে হটাইয়৷ লইয়া যাইতে যাইতে অকস্মাৎ কলের কামানের গুলিতে চন্দ্রকান্ত দেব ও যতীন্দ্রনাথ স্বর যুবকদ্বয়ের মৃত্যু আত্মীয়বিয়োগের শোকের মত মৰ্ম্মে বিধিয়াছে। ধন্য র্তাহাদের সাহস, ধন্য তাহীদের স্বতঃউৎসারিত মানবপ্রেম, যাহা তাহাদিগকে হেলায় প্রাণ দিতে সমর্থ করিল । ধন্য র্তাহাদের লাঠিখেলার নৈপুণ্য যাহার ভয়ে এতগুলা উত্তেজনা-উন্মত্ত লোক হটিয়া পলাইতেছিল। তাহাদিগকে প্রীতি ও শ্রদ্ধার অঞ্জলি অর্পণ করিতেছি । তাহাদের “কুলং পবিত্রম্ জননী কৃতার্থ।” “গ্রন্থকার-মাহাত্ম্য” বৈশাখের প্রবাসীর ১০৭ পৃষ্ঠায় ১৩০৮ সালের জ্যৈষ্ঠের প্রবাসী হইতে “গ্রন্থকার মাহাত্ম্য” নামক ৰে প্ৰবন্ধের কিয়দংশ উদ্ভূত হইয়াছে, তাহার লেখক জীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত।