পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] আছে যে, তা সমস্ত ছবির স্বর অনেক উচ্চগ্রামে তুলে ফেলে। ছবির রং বেশী রকমের একঘেয়ে হওয়ার জন্যে রংয়ের টাচে সে জোর আসবে না মনে করে তিনি কোনকোন ছবিতে ছুরি দিয়ে চেছে কাগজের শাদা রং বের করেছেন। অন্যদের ছবি এই টাচের অভাবে নিতান্ত মিয়োনো এবং খেলে দেখসি । বিলাতের চিত্রকর এড মণ্ড ডলাক বাংলার অনেক আর্টিষ্টের কাছে গুরুর পদ পেয়েছে। ডলাক গল্পের বইর জন্যে ছবি একে থাকে । তার ছবি ওরিয়েণ্ট্যাল বিষয় নিয়ে। ডলাকের দোষ এই যে, ঘরবাড়ী গাছপালা অনেক সময় অর্ণামেণ্ট্যাল করে থাকে, কিন্তু তার ভি নর মানুষগুলি হ’ল স্বাভাবিক, কাজেই দু রকমের বিরুদ্ধ জিমিষে থাপ খেতে পারে না । তার রঙে বা রেখায় কোন জোর বা বিশেষত্ব নেই। বুক ইলাষ্ট্রেশনের কোঠায় এর কাজ পড়ে যায় ; ডলাক কখনো আর্টিষ্ট বলে’ গণ্য হ’তে পারে না । অজস্তা, বাঘ, কাঙর, মোগল প্রভৃতি চিত্রকলার উদাহরণ আমাদের সামনে থাকৃতে শিল্পীরা কেন যে ডলাকের মত একজন নগণ্য চিত্রকরকে আদর্শ বলে’ গ্ৰহণ করলে জানি না । এটাও লক্ষ্য করা ধায় যে, যারা ডলাপ-জাতীয় চিত্রকর তারা বাংলায় পপুলার বেশী। এর কারণ বোধ হয় এদের কাজের ভিতর সেটিমেণ্টালিজম্র বা ভাবপ্রবণতার মাত্রা বেশী । বাঙ্গালীর চিত্ত সহজেই চিত্রে বেশী আলোড়িত হয় । ছবিতে দুটে। জিনিষ রঙ ও রেখা, অথবা এর অন্তত একটা থাক চাই । রং ও রেখা নিয়েই ছবির প্রাণ। এ ছুটের একটাও যদি না রইল, তবে ছবির ভিতর থাকুল কি ? হালের অনেক চিত্রকরদের মধ্যে দুয়েরই অভাব আছে । শ্ৰীযুক্ত নন্দলাল বস্থ মহাশয়ের চিত্রে রেখার প্রাধান্ত, এবং অবনীন্দ্রনাথের চিত্রে রংয়ের বিশেষত্ব। অজস্তার চিত্রে সব রকমই পাওয়া যায়। কোনো চিত্রে রং ও রেখা দুইই আছে, আবার ওর একটি নিয়েও ছবি আঁকা হয়েছে। বাঘ-গুহার চিত্রে রংয়ের বিশেষত্ব শেড লাইট দিয়ে শরীরের ডৌল দেখান হয়েছে। এজাতীয় ংলার নুতন চিত্রকলা সম্বন্ধে কয়েকটি কথা 8ፃ› ‘ছবিব পরগ’ নামক প্রবন্ধে নন্দলালবাবু লিখেছেন, “কোনে বস্তু যখন দেখি, এই কয়টি লক্ষণ দ্বারা পরিচয় *if I Sq, cqz, ( outline drawing ) of, Wał & ব্লক, ‘য়, রং । চিত্রকরের মনোমত দু’একটি লক্ষণ নিয়ে ছবি অঁাক{ হয়েছে ।” নবীন শিল্পীদের আর্টের টেক্‌নিকের উপর অবজ্ঞা ; যেন তেন প্রকারেণ একট। ছবি দাড় করাতে পাৰ্বলেই হ’ল। তার কারণ পরিশ্রমে পারামুথত। টেক্‌নিক্‌ ভালভাবে আয়ত্ত করা আয়াসসাধ্য । যদিও খালি টেক্‌নিকে ছবি হয় না, ভাব চাই, তবুও টেক্‌নিক্‌ অপরিহার্য্য। ভাল গাইয়ে যে শুধু স্বর তান লয় ঠিক রেখে গান গায় তা ময়, তার গানের ভিতর দরদ বা ভাব আছে । কোনো গাইয়ে যদি ভাবের ঘোরে মাথা নাড়ে, আর স্থর তান লয়ের কোনো তোয়াক্কা না রাখে, তবে তার গান, গাইয়ের নিজের কাছে যতই ভাল লা গুক না কেন, অন্তের কাছে তা স্বপ্রাব্য হওয়া দূরে থাকুক অতিশয় হাস্যজনক হ’য়ে ওঠে। ছবিও তেমনি । তার কে বল ভাব থাকুলে চলবে না ; রং রেখা বিষয়-সংস্থান ( composition ) প্রভৃতি ঠিক ঠিক হওয়া চাই । ওস্তাদ গাইয়ের বোধ হয় গলা-পেকারিতেও সুর ভাল থাকে । ওস্তাদ শিল্পীর ও তেমনি হিজিবিজি একটা পেন্সিলের টানেও সৌন্দর্য্য আছে। সে কাগজে যাই টাতুক না কেন, তার ভিতর কোনো-না-কোনো সৌন্দর্যের প্রকাশ হবেই। হাত যপন দেরিস্ত থাকে, তার সঙ্গে ভাবের যোগ হ’লে ভাল ছবি না হ’য়ে পারে না । আর্টিষ্টের বিশেষ করে আশে পাশের জিনিষ পর্য্যবেক্ষণ এবং ষ্টাডি করা দরকার। ‘ষ্টাডি’ ভাল না থাকলে, খালি কল্পনার জোরে ভাল আঁকা যেতে পারে না। সকল দেশের শিল্পীরাই এই উপদেশ দিয়ে থাকেন । চীনের বিখ্যাত লাগুটসে বলেছেন, “প্রথম তুলি-সকল কবর দিতে হইবে, এবং সমাধিস্তপ নিৰ্ম্মাণ করিতে হইবে ( অর্থাৎ তুলির কাজ এত করিতে হইবে যে, রাশি রাশি অব্যবহার্য্য তুলি ফেলিয়া দিলে, এক জায়গায় জমিয় মন্ত এক গুপ্ত ইবে ) কালি গুলিবার লোহা এমন ঘষিতে হইবে, যে তাহ গুড়া হইয়া একেবারে তলানি হইয়া