পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ፃ ó প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড করিল তাহ লং ষ্ট্ৰীট দিয়া বাজারের দিকে আসিতেছে । গাড়াখানির যে জীর্ণ দশ সে বিষয়ে আর সন্দেহ নাই । এখন শুধু চাকার ক্যাচকোচ নয়, কাঠের কাঠামোটির ঘটু ঘটু শব্দ ও শোনা যাইতেছে ; কাঠের রাস্তায় ঘোড়ার প! পিছ লাইবার শব্দ পৰ্য্যস্থ স্পষ্ট শোনা যাইতেছে ; ঘুমের গাড়ীখানির শব্দ ও বুঝি ইহা অপেক্ষ কদর্য্য ঘমের গাড়ীর কথা মনে হইতেই জর্জের ভয়ের কথা মনে পড়িল । ডেভিড ভাবিল, “একটা পুলিশ ও আসে ন ছাই ! তাদের ওপর আমার খুব ভালবাসা নাই বটে, কিন্তু বাবা জীদের কেউ এসে যদি এই অশান্তিকর শব্দট। বন্ধ ক’রে দেয় তবে তাকে আক্ষরিক ধন্যবাদ দি ” নিজের মনের জোরের উপর ডেভিডের খুব আস্থা ছিল, কিন্তু তাঙ্গর ভয় গুইতে লাগিল, আজিকার রাত্রির ঘটনায় বিশেষ করিয়৷ এই জঘন্য শব্দে তাহার সমস্ত শক্তি ওলট-পালট গুচয় গিয়াছে । এই অবস্থায় তাহাকে পড়িয় থাকিতে দেখিয়া যদি কেই মৃতদেহ-সন্দেহে তাহাকে গোরস্থানে লইয়া গিয়া কবর দিয়া ফেলে ! সে ভযে শিহরিয়া উঠিল । বাপ রে । তাহার দেহের চারিপাশে লোকে হা-হুতাশ করিবে, মৰ্ম্ম-তন্ত্র পাঠ করিলে আর সে সজ্ঞানে তাঁহাই শুনিবে। এই চাকার আওয়াজের অপেক্ষ তাহা বেশী মিষ্ট শুনাইবে না । হঠাৎ তাহার সিস্টার ঈডিথের কথ। মনে পড়িল । তাহার বিন্দুমাত্র আত্মপ্লানি হইল না, সিসটার ঈডিথের উপর ভীষণ রাগ হইতে লাগিল ; সেই বেটাই তো তাহার এই দুরবস্থার কারণ ; তারই জন্য তো তাহাকে এই ভাবে জব্দ হইতে হইতেছে । আবার সেই বাতাস-চের কর্কশ শব্দ ! তাহার কানে তাল লাগিয়া গেল। এই হতাশ অবস্থায়, জীবনে অন্যের প্রতি সে যত অন্যায় করিয়াছে তজ্জন্ত বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করিল না । অন্তে তাহার প্রতি যত অন্যায় করিয়াছে সেই কথাই মনে করিয়া সে ক্রুদ্ধ হইয়। छेठेिल । নিজের দুরদৃষ্টের কথা চিন্তা করিয়া তাহার মন হইবে না । তিক্ততায় ভরিয়া গেল। সে মিনিটখানেক স্তব্ধ হইয় মনোযোগসহকারে সেই শব্দ শুনিতে লাগিল,—ন, নিশ্চয়ই সে মরে নাই ; গাড়ীপানি লং ষ্ট্রীট ছাড়িয় বাজারের দিকে তো যায় নাই ; শান-বাধানে রাস্তায় ঘোড়ার খুরের শব্দ হইতেছে না ; খোয়া-বিছানে৷ রাস্তার উপর ঘোড়ার পায়ের শব্দ আসিতেছে। তাই তো, তাহার দিকেই গাড়ীখানি আসিতেছে—এই ঝোপের পথেই তাহ প্রবেশ করিল। সাহায্য পাইবার আশায় খুশী হইয়া সে উঠিয় বসিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু তাহার সমস্ত দেহ পূৰ্ব্ববং অচল। শুধু তাহার চিস্থারই গতিশক্তি আছে, দেং অসাড় । সে স্পষ্ট শুনিতে পাইতেছে সেই কালজীৰ্ণ গাড়ীপানি নিকটে আসিতে ছে। তৈলহীন চাকার কায়, কাঠামোর কাঠগুলির আর্তনাদ, ঘোড়ার সাঙ্গের থটু পটু ঝন ঝন শব্দ, সমস্ত মিলিয়া গাড়ীপানির এমন দুরবস্থার পরিচয় পা ওয়া যাইতেছিল সে, মনে হইল বুঝি বা তাহাব কাছ পৰ্য্যন্ত আসিয়া পৌছিবার পূৰ্ব্বেই তাহ টুকুর টুকুর। হইয়া ভাঙ্গিয়া পড়িবে। গাড়ীখানির গতি মুছু । গাড়ীটি তাহার নিকটে অসিতে আসলে মতখানি সময় লাগিল এক পড়িয়া থাকার দরুণ মানসিক অসহিষ্ণুতায় ডেভিডের কাছে সময়ট তাই। অপেক্ষ অনেক দীর্ঘতর বলিয়া বোধ হইল । সে বুঝিয়। উঠিতে পারিল না এষ্ট পৰ্ব্বদিনে গীর্জার ভিতরের একটা ঝোপের পারে গাড়ী চালাইয় আনার কি কারণ, ঘটিতে পারে। কোচোয়ান নিশ্চয়ই মাতাল হইয়া থাকিবে —ন তইলে এই বেপথে সে গাড়ী ইকাইত না । হায় হায়, মাতালের কাছে তো সাহায্যের প্রত্যাশ। মাই ! সে নিজেকে নিজেই আশ্বস্ত করিতে লাগিল— “সম্ভবতঃ এই চাকার কান্না শুনেই আমি এমন হতাশ হ’য়ে পড়ছি ; গাড়ীটা এদিকেই আসছে ; সাহায্য ও পাওয়া যাবে নিশ্চয় ।” গাড়ীখনি তাহার কয়েকগজের মধ্যে আসিয়া পড়িল ; চাকার শব্দে আবার তাহার মন খারাপ হইতে লাগিল, “আজ অদৃষ্টট দেখছি ভারী খারাপ, গাড়ীটা যেমন ভাবে