পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8bや পূৰ্ব্ববঙ্গ ও আসামে ইহা অপেক্ষাও অধিকতর ক্ষতি ও দুর্ঘটনা হইয়াছিল । শিলং সহরের নিকটই ইহার কেন্দ্রস্থল ছিল বলিয়া ভূতত্ত্ববিদেরা নিৰ্দ্ধারণ করিয়াছেন ; কাজেই ইহার অধিকাংশ বলই জনশূন্ত পাৰ্ব্বত্য-প্রদেশে ব্যয়িত হইয়াছিল । মুরমের দিন ; এক শ্রেণী মুসলমানগণ লাঠি-খেলাদি নানা প্রকার আমোদ-আহলাদে ব্যস্ত, এমন সময় কম্পনের বেগে সমস্ত স্তব্ধ করিয়া দিল । পূৰ্ব্ববঙ্গ ও আসামের অনেক স্থানে একটিও আটালিকা রহিল না, টেলিগ্রাফের তার ছিড়িয়া বিদেশস্থ আত্মীয়-স্বজনের সংবাদ গ্রহণ ও দুষ্কর করিয়া তুলিল, দুই একস্তানে রেলের পুৰ্ব্ব ভূমণ্ডলার্গের ভূমিকম্প প্রবণ স্থান সমূহ ( কাল অংশ ) গাড়ী লাইনচ্যুত হইয় পড়িল ৷ শ্ৰীহট জিলার প্রায় সৰ্ব্বত্র মাটি ফাটিয়া পৃথিবী, বালি, ছাই, জল প্রভৃতি উদগীরণ করিতে লাগিল এবং তাহারই ফলে ২।১ বং সরকাল ম্যালেরিয়ার ভয়ানক প্রকোপ হইল । বোম্বাই সহরে প্লেগের প্রথম আগমনে হাজার-করা ১৮ জনের মৃত্যু ঘটিয়াছিল, কিন্তু শ্ৰীহটে ১৮৯৮ সালে কেবল জরেই হাজার-করা ২৬ জনকে শমন-সদনে গমন করিতে হইল । কাহারও কাহারও পুষ্করিণী বালিতে ভরিয়া সমৎস্য জল বাড়ীতে ঠেলিয়া উঠিল, স্থানে স্থানে উচ্চ ভূমি নিম্ন জলায় পরিণত হইল। তাহার ৮ বৎসর পরে অর্থাৎ ১৯০৫ খৃষ্টাব্দে ৪ঠা জুলাই কাঙ্গর উপত্যকায় যে প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ ১ম খণ্ড ভূমিকম্প হয় তাহা তাহার পূর্ববৰ্ত্তী ভূমিকম্পের ন্যায় ভীষণ না হইলেও তাহাতেও প্রায় ২০,০০০ লোকের মৃত্যু ঘটে । কাদর উপত্যকায় ইহার কেন্দ্র ছিল বলিয়া ইহা ‘কাঙ্গরা-ভূমিকম্প’ নামেই বিজ্ঞান জগতে খ্যাতি লাভ করিয়াছে। সৰ্ব্বংসহ বসুন্ধর কি নিদারুণ মৰ্ম্মপীড়ায় সহসা এই ভীষণ কম্পনে স্বীয় বক্ষোবাসী সন্তানগণের সমূহ বিপদ ঘটাইয়া তুলেন তাহার কারণ জ্ঞাত হইবার আকাজক্ষা অন্তত তৎসময়ে অনেকেরই মনে উদয় হয় । রেলওয়ে ট্রেন চলিয়া যাইবার কালে নিকটে দাড়াইলে ভূমিকম্পন অনুভব করা যায়। কোন ভারী জিনিষ উপর হইতে মাটিতে নিক্ষেপ করিলেও স্থানীয় কম্পন অনুভূত হয়। কিন্তু এইসব অনৈসগিক সামান্য কম্পন ভূমিকম্প নামে অভিহিত হয় না । অতি পুরাকালে বিশ্ববিয়ুস নামক আগ্নেয়গিরির ভীষণ অগ্ন্যুৎপাতে ইটালীর অন্তর্গত হার্কুলেনিয়াম ও পম্পীআই নামক দুইটি সমৃদ্ধিশালী নগরী ভস্মস্ত,পে একেবারে প্রোথিত হইয়া গিয়াছিল । অধুনা ঐ নগরীদ্বয় আংশিকৰূপে খুড়িয়া বাহির করা হইয়াছে। সেই অগ্ন্যুৎপাতের সময় মুহুর্মুহু ভূমিকম্প হইয়াছিল । সেই ভূমিকম্প এবং অন্যান্য আগ্নেয়গিরির আলোড়নেও ভূমিকম্প হইতে দেখিয়া পুথিবীর আভ্যন্তরিক উত্তাপের সহিত ভূমিকম্পের একটা নিকট সম্বন্ধ তৎকালীন পণ্ডিতগণ স্থির করিয়া রাখিয়াছেন । এমনকি গন্ধক মাটিতে প্রোথিত করিয়া অগ্নিসংযোগ করিলে তাহা দহন কালে স্থানীয় কম্পন, দৃষ্টান্তস্বরূপ গৃহীত হইয়াছিল। ভূমিকম্পের স্থান ও তাহার কেন্দ্র সম্বন্ধে আধুনিক জগৎ যে-সব জ্ঞান লাভ করিয়াছে তাহাতে ইহা নিশ্চিত বলা যাইতে পারে যে, কোনও স্থানে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুদগম ও ভূমিকম্পন একই সময় সংঘটিত হইলেও ইহাদের পরস্পর-সম্বন্ধ অতিশয় বিরল। অগ্ন্যুদগমকালে অনেক সময় সামান্য ভূমিকম্প হইয়া থাকে সত্য, কিন্তু তাহাতে যে বহুদূর ব্যাপক ভীষণ ভূমিকম্প সংঘটিত হইতে পারে না এই কথা একরূপ নিশ্চিত । জাপান যখন পাশ্চাত্য প্রণালীতে শিক্ষা-বিস্তারের