পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●8● দিকে আবার তাহার সংবাদ প্রচারে নানা বাধা উপস্থিত করিতেছেন। হিন্দুমুসলমানে দাঙ্গ নিশ্চয়ই সরকারী মতে ইহ অপেক্ষা কম গুরুতর ব্যাপার নহে। অথচ তদ্বিষয়ক ংবাদ সম্বন্ধে, কিম্বা নারীহরণাদির সংবাদ সম্বন্ধে, গবন্মেটি, ংবাদ পরীক্ষার প্রথা প্রবর্তিত করেন নাই । মানে কি ? মন্দির ও মূৰ্ত্তিভঙ্গাদির অনেক সত্য সংবাদ ও যে এই নিয়ম বশতঃ চাপা থাকিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। তাহাতে দুবৃত্তের আস্কারা পাইবে । ইহা কি বাঞ্ছনীয় ? যে-সব মূৰ্ত্তি ভগ্ন বা অপবিত্রীকৃত হইতেছে, তাহার কতকগুলি যদি পূজান্তে বিসর্জিত বা বিসর্জনের জন্য রক্ষিতও হয়, তাহা হইলেও সেগুলির প্রতি অশুদ্ধা প্রদর্শন বাঞ্ছনীয় নহে। ইহাতে ভদ্রতার অভাব এবং পরধৰ্ম্মের প্রতি বিদ্বেষ সূচিত হয় । কৃষ্ণনগর প্রাদেশিক কনফারেন্সে স্বরাজ্য-চুক্তি কৃষ্ণনগরে সম্প্রতি বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সের যেঅধিবেশন হইয়া গিয়াছে, তাহাতে পূৰ্ব্বনির্বাচিত সভাপতি শ্ৰীযুক্ত বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের পদত্যাগের পর শ্ৰীযুক্ত যোগেশচন্দ্র চৌধুরীকে সভাপতি নির্বাচিত করিয়া কনফারেন্সের কাজ চালান কংগ্রেসের নিয়মসঙ্গত হইয়াছে কি না, তাহার বিচার না করিয়াও ইহা বলা যাইতে পারে যে, উপস্থিত প্রতিনিধিদের অধিকাংশ বঙ্গীয় স্বরাজ্যদলের প্যাক্ট বা চুক্তির বিরোধী ছিলেন। উই৷ নাকচ করা ঠিকই হইয়াছে। এই প্যাক্টের অযৌক্তিকতা আমরা ১৩৩০ সালের মাঘ সংখ্যায় বিবিধপ্রসঙ্গে তের পৃষ্ঠা ব্যাপিয়া বিস্তারিতভাবে দেখাইয়াছিলাম। ভারতের এক এক ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের রাজনৈতিক স্বার্থ স্বতন্ত্র, ইহা আমরা মানি না । সমগ্র জাতীয় মঙ্গল যাহা, তাহাতেই প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মঙ্গল । এই মঙ্গলসাধন সমবেত ভাবে করিতে হইবে । সাম্প্রদায়িক প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচন, সম্প্রদায় অনুসারে চাকরী ভাগ, ইত্যাদি সাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় জাতীয় মঙ্গল সাধিত হইবে না । কিন্তু যদি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের স্বার্থ আলাদা বলিয়া মানিয়া ও লওয়া যায়, এবং তাহ রক্ষা করিবার জন্য সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিনিধির সংখ্যা, চাকরী প্রভৃতির একটা ভাগাভাগির প্যাক্ট বা চুক্তি করিতেই হয়, তাহ হইলে তাহ সমগ্র ভারতের জন্য একসঙ্গে হওয়া উচিত। নতুবা বাংলার প্যাক্ট অনুসারে এখানে মুসলমানদের সংখ্যাধিক্য বশতঃ তাহারা সব বিষয়ে বেশী ভাগ পাইবে, আবার লক্ষে প্যাক্ট অনুসারে সংখ্যার প্রবাসী আষাঢ়, ১৩৩৩ ইহার [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড নু্যনতা সত্ত্বেও আগ্রা-অযোধ্যা, বিহার, মান্দ্রাজ, বোম্বাই প্রভৃতি প্রদেশে তাহারা সংখ্যার অনুপাত অপেক্ষা বেশী ভাগ প্লাইবে । ইহা দ্যায়সঙ্গত নহে । লর্ড লিটনের বিলাত যাত্রা লর্ড লিটনের শাসনকাল ফুরাইয়া আসিয়াছে। তবু তিনি কয়েক মাসের ছুটি লইয়। বিলাত গিয়াছেন । বিলাত যাত্রার কারণ নাকি এই যে, তিনি বঙ্গের ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থা সম্বন্ধে ভারতসচিবের সহিত পরামর্শ করিবেন। লর্ড লিটনের বিচক্ষণতা ও রাজনীতিজ্ঞতার যে-পরিচয় বাঙালীরা পাইয়াছে, তাহাতে র্তাহার সহিত ভারতসচিবের মন্ত্রণ হইতে কোন স্বফলের আশা করা যায় না । লিটন সাহেবকে ফিরিয়া পাইতে বাঙালীর কোন আগ্রহ নাই, অনিচ্ছাই আছে । স্বরেন্দ্রনাথ মল্লিকের বিলাত যাত্রা ঐযুক্ত স্বরেন্দ্রনাথ মল্লিক ভারতসচিবের কৌন্সিলের সভ্য হইয়া বিলাত গিয়াছেন । বঙ্গের রাজনৈতিক ও অন্যান্য অবস্থা তিনি জ্ঞাত আছেন এবং সাৰ্ব্বজনিক কাৰ্য্য পরিচালনের অভিজ্ঞতাও তাহার আছে । তিনি দেশের হিত করিবার সুযোগ অনেক পাইবেন, কিন্তু যে-যন্ত্রের একটা অংশ তিনি হইতেছেন, ইচ্ছা থাকিলেও সেই কলকে ভারতহিতসাধক করিতে পরিবেন কি ন সন্দেহ । আপাততঃ ভারত-সচিব লিটন বার্কেনহেডকে যে পরামর্শ দিবেন, তাহার অহিতকর অংশের কুফলনিবারক কোন ঔষধ তিনি প্রয়োগ করিতে পারিবেন কি না, তাহাই অনুমেয় । পরে ইহা অপেক্ষাও একটা বড় কাজে তাহাকে ব্যাপৃত হইতে হইবে । তিনি ১৯৩১ সালের মাঝামাঝি পৰ্য্যন্ত ভারতকৌন্সিলের সভ্য থাকিবেন। তাহার মধ্যে, ১৯২৯ সালে বা তৎপূৰ্ব্বে, ভারত শাসন-সংস্কার আইন প্রবর্তনের ফলাফল বিবেচনা করিবার ব্যবস্থা হইবে, এবং ভারতীয়দিগকে রাষ্ট্রীয় অধিকার আরও দেওয়া হইবে কি না, তাহার বিচারও তৎপরে হইবে । এই উপলক্ষ্যে তিনি দেশহিতসাধন করিবার সুযোগ পাইবেন । ইতিমধ্যে অবশু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা ও রেষারেষি আরও ঘটিবার সম্ভাবনা আছে। সেরূপ কিছু স্বাধীন দেশে ঘটিলে তথাকার অধিবাসীদের আত্মশাসন-ক্ষমতার অভাব বা অল্পতা প্রমাণিত হয় না, আমাদের দেশে ঘটিলেই বা ঘটাইলেই তদ্বারা আমাদের অকৰ্ম্মণ্যতা প্রমাণিত হয়। এবম্বিধ তথাকথিত প্রমাণ খণ্ডন করিবার