পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Фф3 যাইবে । মেয়েদের অধিকাংশই আবার-পাঠশালার ছাত্রী। হিন্দুরা শিক্ষ-বিষয়ে এবং বিদ্যোৎসাহিতায় আপনাদিগকে মুসলমানদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করেন ; কিন্তু সাধারণ শিক্ষালয়-সকলে হিন্দু ছাত্রীর সংখ্যা ১,৩৫,২০৯ এবং মুসলমান ছাত্রীর সংখ্যা ১,৮১,০৩৬ ছিল। বঙ্গে মুসলমানরাই সংখ্যায় প্রধান সম্প্রদায়। মুসলমান ছাত্রীদের সংখ্যাধিক্যের ইহা একটা কারণ । অবশ্য মুসলমান ছাত্রীদের সংখ্যাধিক্য পাঠশালাতেই বেশী ; উচ্চতর বিদ্যালয়ে ও কলেজে অমুসলমান ছাত্রীর সংখ্যাই বেশী । কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষাতেও হিন্দু বালিকাদের সংখ্যা এত কম হওয়া কুলক্ষণ । বালিকাদিগকে প্রাথমিক শিক্ষাও দিতেছেন, ইহা স্বলক্ষণ । বৃত্তি ও শিল্প শিক্ষার প্রতিষ্ঠান সকলে ইউরোপীয় ও ফিরিঙ্গী ছাত্রীর সংখ্যা ২০৬, দেশী খ্ৰীষ্টিয়ান ৬৭৬, হিন্দু ৪৮১, মুসলমান ১২০, বৌদ্ধ ২৪, অন্যান্য ৫। ব্রাহ্মদিগকে বোধ হয় হিন্দুদের মধ্যে ধরা হইয়াছে ; তাহাদের সংখ্যা আলাদা করিয়া লেখা হয় নাই । বঙ্গে স্ত্রীশিক্ষার বিস্তার খুব সামান্তই হইয়াছে। এইজন্ত স্ত্রীশিক্ষার নিমিত্ত খরচ অনেক বৎসর ধরিয়া খুব বেশী করা উচিত। কিন্তু ১৯২৪-২৫ সালে পুরুষদের শিক্ষার জন্য সরকারী বেসরকারী সব রকম খরচ হইয়াছিল ৩ কোটি ১৫ লক্ষ ৬৪ হাজার ৯০২ টাকা, স্ত্রীলোকদের জন্য হইয়াছিল কেবল ৪০ লক্ষ ৮১ হাজার ৬৩৭ টাকা । ইউরোপীয়দের জন্য সকল প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট ১০৬১৬ জন ছাত্রছাত্রী পড়িয়াছিল। তাহাদের জন্য মোট খরচ হুইয়াছিল ৩৫,৩৬,৬১৬ টাকা। তাহার মধ্যে গবন্মেণ্ট দিয়াছিলেন ৯,৭৫,৪২৭ । দেশী ছাত্রསྣ་ཧྥུ།:༥༠ জন্য গবন্মেটি, মাথাপিছু এত বেশী টাকা দেন নাহ । কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্টগ্রাজুয়েট শ্রেণীগুলিতে যথাক্রমে হিন্দু ও মুসলমান ছাত্রের সংখ্যা কত, তাহ শিক্ষা-রিপোর্টে লেখা নাই। মুসলমান ছাত্রদের সংখ্যা খুব কম বলিয়াই জানি। কলেজের ২১৯১৯ জন ছাত্রের মধ্যে ১৮৬৯৭ জন হিন্দু, ২৮৫৩ জন মুসলমান । ঢাকার ইণ্টারমীডিয়েট্‌ কলেজে ১৬৪ জন হিন্দু, ১৪৭ জন মুসলমান ও ২ জন ভারতীয় খৃষ্টিয়ান ছাত্র পড়ে। সকল রকম বিদ্যালয়ে মুসলমান বালকদের সংখ্যা ৭৫৫৩৯৯, হিন্দু বালকদের ৮৭৬৪১০ । বালিকাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে মুসলমান বালিকাদের সংখ্যা কেন বেশী, তাহার কারণ অনুসন্ধান হওয়া উচিত। মুসলমানেরা কি পুরুষশিক্ষা অপেক্ষ স্ত্রীশিক্ষার বেশী অনুরাগী ? প্রবাসী—অাষাঢ়, ১৩৩৩ মুসলমানরা যে অস্তত: [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড তাহা যদি হয়, ভাল ; তাহ ন হইলে, মুসলমানরা পুরুষশিক্ষায় হিন্দুদের পশ্চাদ্বত্তাঁ কিন্তু স্ত্রীশিক্ষায় অগ্রবর্তী কেন, তাহার প্রকৃত কারণ কি ? মুসলমান বালিকাদের ষে-সংখ্যা রিপোটে আছে, তাহ নিভুল ত ? এবিষয়ে প্রকৃত তথ্যজ্ঞ কেহ কিছু লিখিলে উপকৃত হইব। সমুদয় বিদ্যালয়ের উচ্চশ্রেণীসকলে হিন্দু অপেক্ষা মুসলমান বালকের সংখ্যা খুব কম, সিকিরও কম। প্রাথমিক বিদ্যালয়-সকলে মুসলমানদের সংখ্যা ৬৮৭৩৯৯ হিন্দুদের ৫৯৭২৬৫ । আইন পড়ে ৩০৭৬ হিন্দু, ৫২৬ মুসলমান এবং ৩২ অন্ত । ডাক্তারী পড়ে ১৪৮৬ হিন্দু, ১৪০ মুসলমান, ৪১ দেশী খ ষ্টিয়ান, ১৫ অন্য । ইহাদের মধ্যে ১২ জন ছাত্রী। শিবপুরে এঞ্জিনীয়ারিং পড়ে ২৬৮ জন হিন্দু, ২৯ জন মুসলমান ; ২২ জন ইউরোপীয় ও ফিরিঙ্গী, এবং ২ জন দেশী খ ষ্টিয়ান। ঢাকার আহসানুল্লা এঞ্জিনীয়ারিং স্কুলে পড়ে ৪৩৬ জন হিন্দু, ৩৯ জন মুসলমান, এবং ৩ জন অন্ত । কলিকাতার গবর্ণমেণ্ট আট স্কুলে পড়ে ৩৪৩ জন হিন্দু, ১০ জন মুসলমান, এবং ৮ অন্ত । বাঙালীদের এই কথা সৰ্ব্বদা মনে রাখা উচিত, যে, বাংলা দেশ এখনও শিক্ষায় ভারতবর্ষের অন্য অনেক অঞ্চলের নীচে রহিয়াছে। বঙ্গে প্রতি হাজারে লিখনপঠনক্ষম ১০৪ জন, ব্রহ্মদেশে ৩১৭ জন, কোচীনে ২১৪ জন, বড়োদায় ১৪৭ জন, ত্রিবাঙ্কড়ে ২৭৯ জন । বাংলাদেশ ১৫০ বৎসরের উপর পাশ্চাত্যের সংস্পশে আসিয়াছে ; জাপান আসিয়াছে মোটামুটি ৬০ বৎসর। জাপানে হাজারকর প্রায় সব নারী ও পুরুষ লিখনপঠনক্ষম, বঙ্গে তাহার একদশমাংশ মাত্র ! ইহা হইতে আমাদের বিদ্যাকুরাগের মাত্র স্থির করিতে হইবে । সমগ্র ভারতের নূতন শিক্ষা-রিপোট বাহির হইয়াছে ১৯২৪ সালের। ঐ সালে ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের মোট অধিবাসীর শতকরা কয়জন শিক্ষা পাইতেছিল, তাহার তালিকায় দেখিতে পাই, মান্দ্রাজে শতকরা ৪.৯, বোম্বাইয়ে শতকরা ৫.২১, এবং বঙ্গে শতকরা ৪.৪০ জন শিক্ষা পাইতেছিল। বঙ্গের স্বাস্থ্য বর্তমান ১৯২৬ সালের ১৩ই মে আমরা বাংলা দেশের দুখানি সরকারী স্বাস্থ্য-রিপোট প্রাপ্ত হই। একখানি