পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6t్భశి করিয়া থাকিবে ? আমার মন ত দেহ-বিরহিত হইতে পারে না । প্লেটে প্রত্যেক পদার্থকেই এক-একটি ideaর অতুভব-যোগ্য বলিয়া মনে করিতেন । কবির এই spirit কি সেই ideaর অনুরূপ ? বোধ হয় ইহার মধ্যে আরও গভীর দার্শনিক তত্ত্ব নিহিত আছে। এস আমরা তাহাই গবেষণা করিয়া দেখি । এই চার প্রকার সমালোচার নমুনা দেওয়া গেল। আমাদের দেশের সমস্ত কাব্য সমালোচনাই ইহার কোনে। না কোনো এক শ্রেণীর মধ্যে পড়িবে। কিন্তু ইহার কোনোটিই কাব্য-সমালোচনা নহে। যোগ্য ব্যক্তিগণ এই সমালোচনার প্রকৃত আদর্শ আমাদিগকে দেখাইয়া দিবেন, সেই প্রতীক্ষায় রহিলাম। ইতিমধ্যে আমরা অযোগ্যের বিষয়টি খুব সংক্ষেপভাবে একটু বুঝিতে চেষ্টা করিব । নিন্দী, প্রশংসা বর্ণনা এবং দার্শনিকত। সমালোচনায় আসিতে পfরে। কিন্তু এই সমস্ত কখনই সমালোচনার লক্ষ্য বা মুখ্য উদৃেশ্য হইতে পারে না। এই উদ্দেশ্য অতি সহজ ও স্বাভাবিক । কবি তাহার কাব্যে আমাদিগকে যাহ দিয়াছেন তাহাই ষোল আনা বুঝিয়া লওয়াই কাব্য-সমালোচনার উদ্দেশ্য । সমালোচনা কথার মানে সম্যকৃরূপে দেখ–ভিতরে বাহিরে—to view comprehensively and rightly fog coa বাদও না পড়ে, আবার মনগড়া কিছু যেন আরোপ ও না করা হয় ! এই দুই সীমানার মধ্যে সমালোচনার গতিবিধি। সমালোচনার ‘লোচনের ব্যবহারটা খুব সাবধানে করা আবশ্যক। কথাটির একটা ভুল মানে আমরা ধরিয়া লইয়াছি । ছোট বড় প্রত্যেক কবিতাতেই একটি আছে প্রাণবস্তু আর একটি আছে তাহার দেহ । এই দেহ বহুঅবয়ব-বিশিষ্ট, বহু অঙ্গের সমাবেশ। প্রাণকে ধরিয়া অঙ্গগুলিকে বুঝিবারও চেষ্টা করা যাইতে পারে। অথবা যেখানে প্রাণটি অতিশয় গুঢ় বলিয়া বোধ হয় সেখানে অঙ্গ-সংস্থান, অঙ্গ-ভঙ্গী এবং অঙ্গের অভ্যস্তরস্থ স্বায়ু-নিচয়ের স্পন্দন অতুভব করিয়া প্রাণের পরিচয় করিতে হয়। এই প্রাণটি কোনো রস-জাতীয় হইতে প্রবাসী শ্রাবণ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড

  • |†—Costal emotion or sentiment—Cotto ভগবাবেগ বা কোনো ভাবাদশ । অথবা ইহা জ্ঞানাত্মক বা বিচারাত্মক হইতে পারে—কোনে thought বা চিন্ত৷ কিংবা কোনো সংকলন। যদি রসাত্মক না হইয় জ্ঞানাত্মক হয় তবু প্রকৃত কবিতায় তাহ কোনে-নাকোনো প্রকার রসের দ্বারা নিশ্চয় অভিসিঞ্চিত থাকিবে। শুষ্ক জ্ঞান দ্বারা কখনো কোনো কবিতা হইতে পারে না । প্রত্যেক জ্ঞান-মাত্রাকেই রসে সিক্ত করিয়া নরম করিয়া লইতে হইবে, নতুবা তদ্বারা কোনো বিশেষ রূপ রচিত হইবে না। কাব্য যে ‘রসাত্মকং বাক্যং’ ইহা চূড়ান্ত সত্য কথা, মনে হইতে পারে, শুদ্ধ বর্ণনামূলক কবিতগুলিতে কোনো আস্তরঙ্গ রস থাকে না । কেবল বিষয়ের বর্ণনা মাত্র থাকে। কিন্তু তাহী নহে। কোনো বিষয় বা বস্তু যতক্ষণ কবির হৃদয়ে কোনো ভাব বা রস উদ্রিক্ট ন করে ততক্ষণ তাহী কবিতার উপাদান হইতে পাবে না। এই ভাবটুকুই এই জাতীয় কবিতার প্রাণ। বস্তুবর্ণনার অভ্যস্তরে সস্তপণে এই ভাবের প্রবাহ খেলিতে

থাকে । এই যে কবিতার প্রাণভূত রস বা রসায়িত ভাব-বস্তুটি ইহার সঙ্গে কবিতার অবয়ববান দেহটির সম্বন্ধ বিশেষ করিয়া বুঝিতে হইবে । মানুষের প্রাণের সঙ্গে দেহের সম্বন্ধ কি ? প্রাণই এই দেহ রচনা করিয়া বিকসিত করিয়া তুলিয়াছে। আবার এই প্রাণই দেহের সর্বত্র শিরায়-শিরায়, স্নায়ুতে-স্নায়ুতে, ধমনীতে-ধমনীতে ওতপ্রোতভাবে বিরাজ করিতেছে। ঠিক এইরূপ কবিতার যাহা প্রাণভূত তাহাই কবিতার মূৰ্ত্তিখানি রচন করিয়া তাহাকে পূর্ণরূপে প্রস্ফুটিত করিয়া তুলিয়াছে। আবার এই প্রাণই ইহার অঙ্গে অঙ্গে ক্রিয়াশীল ভাবে বৰ্ত্তমান থাকিয়া প্রত্যেক অঙ্গ সজীব সতেজ ও সরস রাখিতেছে। প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ এই দেহরচনায়, এবং এই অঙ্গ-সঞ্জীবনে । আবার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অস্তিত্বের উদেখা ঐ প্রাণের কার্য্যের পরিপূর্ণতা . সাধনে । ইহাই হইল প্রত্যেক কবিতার মূলীভূত, কথা ! সমালোচনার প্রথম কাৰ্য্য কবিতার প্রাণের আবিষ্কার