পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> হে চির নূতন, আজি এ দিনের প্রথম গানে জীবন আমার উঠুক বিকাশি’ তোমার পানে। তোমার বাণীতে সীমাহীন আশা, চির দিবসের প্রাণময়ী ভাষা, ক্ষয়হীন ধন ভরি’ দেয় মন তোমার হাতের দানে ॥ এ শুভ লগনে জাগুক গগনে অমৃত বায়ু, আমুক জীবনে নব জনমের অমল আয়ু । জীর্ণ যা কিছু, যাহা আছে ক্ষীণ, নবীনের মাঝে হোক তা বিলীন, ধুয়ে যাক যত পুরানো মলিন নব আলোকের মানে । ૨ আপনারে দিয়ে রচিলি রে কি এ আপনার আবরণ ? খুলে দেখ দ্বার —অস্তরে তার আনন্দ-নিকেতন । মুক্তি আজিকে নাই কোন ধরে, আকাশ সেও যে বঁধে কারাগারে, বিষ-নিঃশ্বাসে তাই ভরে আসে নিরুদ্ধ সমীরণ 0 ঠেলে দে আড়াল, ঘুচিবে আঁধার, 母 আপনারে ফেল দূরে । সহজে তখনি জীবন তোমার অমৃতে উঠিবে পুরে । শুপ্ত করিয়া রাখ, তোর বঁাশী, বাজাবার যিনি যাঙ্গাবেন আসি’, ভিক্ষণ না নিাব, তখনি জানিবি ভরা আছে তোর ধন ॥ \3 বাধন-ছেড়ার সাধন হবে ; ছেড়ে যাব তীর মাভৈঃ রবে । র্যাহার হাতের বিজয়-মালা রুদ্রদাহের বহি জ্বালা, লমি নমি নমি সে ভৈরবে। কাল-সমুদ্রে আলোর যাত্রী শুন্তে যে ধার দিবস রাত্রি । ডাক এল তার তরঙ্গেরি, বক্ষে বাজে বজ্রভেরী অকুল প্রাণের সে উৎসবে। ( শাস্তিনিকেতন, বৈশাখ ১৩৩৩ ) শ্ৰী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পত্র রবিবার প্রিয় নন্দলাল ! আজ গোটা-কতক কথা মনে এল ;–শিল্পের ‘ক’ ‘খ’ জানতে হ’লে এর চেয়ে সহজ উপায় আর নেই :– (ক) যে-ছবিকে লোকে পাথরে কাটলে, কাঠে কুন্দলে, স্বচ দিয়ে তুল্লে কিম্বা আঁচড়ে বার করে আনলে তারা এক জিনিষ, আর— (খ ) যে-ছবি ফুটলে পটে সে আর-এক জিনিষ । কারণ, (ক) সে মানুষের শক্তির পরিচয় ছাড়িয়ে উঠতে সম্পূর্ণভাবে পারলে না ; মামুষ-ছোয় হয়ে রইলো অনেকখানিই । যে তাদের ফোটালে তার বাহাদুরি কতকটা মনে পড়াতে থাকৃলো—যে-ভাবে কাগজের ফুল সেই ভাবের কাজ এর । { থ ) কিন্তু অস্তভাবে কাজ করতে থাকৃলো, কেননা, সে সত্যি ফুটলে পটে । কেউ যে তাকে ফুটিয়েছে যত্নে-চেষ্টায় এটা লোপ গেয়ে গেল কাজ থেকে । একমাত্র চিত্রে সুকুমার সমস্ত পরশ দিয়ে এই ভাবে রস ফোটানো চল্লো—অন্ত কিছুতে নয় । কাজটি ফুটলো চমৎকার। কাজ যে ফোটালে সে বাতাসে মিলিয়ে গেল পরিষ্কার—এ হ’ল চিত্র-বিদ্যার চরম সার্থকতা। সবাই এটা পারে না । নদীর জলে মাছ থাকে কিন্তু জল অণস-গন্ধ পায় না । কুণ্ডের জলে মাছ থাকে—জল পৰ্য্যন্ত মাছের গন্ধে দূষিত হয় । (ক) তেমূনি একরকম ফুলও আছে যা মালি-মালি গন্ধ করে, কাজও আছে যা মানুষ-মানুষ গন্ধ করে ! (খ ) আর এক রকম কাজ আছে যা ফুটন্ত ফুল-ফুল-ফুল গন্ধ করে । ( শাস্তিনিকেতন, বৈশাখ ১৩৩৩ ) শ্র অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়তের কথা আমাদের শাস্ত্রে বলে, সংসারটা উৰ্দ্ধমূল অবাঙশাখ । উপরের দিক থেকে এর স্বর, নীচে এসে ডালপালা ছড়িয়েছে ; অর্থাৎ নিজের জোরে #াড়িয়ে নেই, উপরের থেকে ঝুলচে। আমাদের পলিটিক্সও সেই জাতের। কনৃগ্রেসের প্রথম উৎপত্তিকালে দেখা গেল, এই জিনিটি শিকড় মেলেছে উপর-ওয়ালাদের উপর-মহলে,—কি আহার কি আশ্রয় উভয়েরই জন্তে এর অবলম্বন সেই উৰ্বলোকে ।