পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] বিশ্বাস যেন সে না করে । ডেভিড হলম্ সেটা লক্ষ্য করেনি। সে বললে যে, সে সেই লোকটির খোজ পেলেই জানাবে, তাকে যে আর দুনিয়াভোর টোটেক’রে ভিখিরীর মত ঘুরে বেড়াতে হবে না এ শুনে নিশ্চয়ই সে স্থখী হবে। “এই ব’লে সে চ’লে গেল এবং সম্ভবতঃ সে তার কথা রেখেছিল । অনেককাল আর তার কোনো খোজখবর পাওয়া ধায়নি। আমরা আশা করেছিলাম যে, সিস্টার ঈডিথ আর ওর সম্বন্ধে চিন্তা করবে না ও লোকটাও আর আমাদের কাছে আসবে না। আমার মনে হ’ত যে সে যেখানে যাবে সেথানেই শনিও সঙ্গে সঙ্গে ধাবে। ইতিমধ্যে একদিন একটা মেয়ে আমাদের আশ্রমে এসে সিস্টার ঈডিথের কাছে ডেভিড হল এর খোজ করলে। সে বললে যে, সে ডেভিড হলমের স্ত্রী ছিল, তার মাতলামী আর অত্যাচার সইতে না পেরে তাকে পরিত্যাগ করেছে। সে চুপিচুপি তার ছেলেপিলেগুলো নিয়ে স’রে প’ড়ে তাদের আগের বাড়ী থেকে অনেক দূরে এই শহরে এসেছে। ডেভিড হল্মও বিশেষ চেষ্টা করেনি এদের খুজে বের কবৃতে । এখন মেয়েটি এক কারখানায় কাজ করে, মাইনে মন্দ পায় না, নিজের আর ছেলেদের স্বচ্ছদে চলে যায়। মেয়েটির পোষাক-পরিচ্ছদ বেশ ভদ্র —দেখলে অভক্তি হয় না। কারখানার মেয়ে মজুরদের সে অনেকটা অধ্যক্ষের মতো এবং যা তার রোজগার ছিল ত দিয়ে বেশ ভালো বাড়ীতে দরকারী জিনিষপত্র গোছগাছ ক’রে বেশ থাকৃতে পারত। আগে যখন সে স্বামীর ঘর কর্ত, তপন তার নিজের আর ছেলেদের পেটের খোরাকই ভাল ক’রে জুট্ৰত না । “সে সম্প্রতি শুনেছে যে, তার স্বামীকে এই সহরে দেখা গেছে, আশ্রমের সিস্টারা তাকে জানেন—সে তাই স্বামীর খবরাখবর নেবার জন্যে এসেছিল। “গুস্তাভসন, তুমি যদি সেখানে উপস্থিত থাকুতে আর সিস্টার ঈডিথের সেদিনকার মূৰ্ত্তি দেখতে তা হলে তা কখনো তুমি ভুলতে পাৰ্বতে না। 姆 মেয়েটি এসে যখন নিজের পরিচয় দিলে সিস্টার স্ট্রডিথের খুণ ছাইয়ের মতো সাদা হ’য়ে গেল, মনে হ’ল যেন সে মৃত্যুশোক পেয়েছে ; কিন্তু সে অবিলম্বে সামূলে নিলে, স্বত্যু-দূত ఆ8సె তার মুখ-চোখ এক স্বগীয় জ্যোতিতে উদ্ভাসিত হ’য়ে উঠল, মনে হ’ল সে নিজেকে সম্পূর্ণ জয় করেছে, নিজের জন্তে পার্থিব কোনো জিনিষ যেন তার কাম্য নেই। সে এমন চমৎকার ক’রে ডেভিড হলমের স্ত্রীর সঙ্গে কথাবাৰ্ত্ত বললে যে, মেয়েটি কাদতে লাগল। সিস্টার ঈডিথ তাকে একটিও অমুযোগের কথা বলেনি বটে, কিন্তু সে তার স্বামীকে পরিত্যাগ করেছে ব’লে তার মনে অঙ্গুতাপ জাগিয়ে দিয়েছিল। এমন কি তার কথাবাৰ্ত্তা শুনে মেয়েটি নিজেকে নিষ্ঠুর ও বর্বর ভাবতে লাগল ; তার স্বামীর প্রতি তার প্রথম-বিবাহিত-যৌবনের ভালোবাস ফিরে এল। সিস্টার ঈডিথ মেয়েটির কাছ থেকে তাদের বিয়ের প্রথম দিককার সংসার-যাত্রাকালে তার স্বামী কেমন ছিল-সে-সব কথা জেনে নিলে—স্বামীর সহিত মিলনের বাসন। তার মনে জাগিয়ে দিলে । তুমি মনে কোরে না গুস্তাভসন, যে সিস্টার ঈডিথ হলমের বৰ্ত্তমান অধঃপতনের কথ। গোপন রাখছিল—সে কেবল হলমের স্ত্রীর মনে স্বামীকে তুলে ধরবার, রক্ষণ করার আকাজ। জাগাচ্ছিল। সে ইচ্ছায় তার নিজের আস্তর পুর্ণ ছিল।” o দরজার পাশে মৃত্যুযানের চালক পুনরায় নত হইয়া তাহার বন্দীকে লক্ষ্য করিল এবং নিঃশব্দে আবার দাড়াইয়া রহিল। তাহার পূর্বতন বন্ধুর মুখে একটা নিবিড় অন্ধকার ভাব। জর্জ তাহ! সহিতে পারিতেছিল ন, সে মুখের আবরণ টানিয়া দিয়া সোজা ভাবে দেওয়ালে ঠেসান দিয়া দাড়াইয়া রহিল । সিস্টার মেরী বলিলেন, “সিস্টার ঈডিথের সঙ্গে কথপোকথনে হলমের স্ত্রীর মনে স্বামীকে পরিত্যাগ ক’রে পাপের পথে অবাধে ছেড়ে দেওয়ার জন্যে অনুতাপ জেগেছিল। এই ভাব সে এই প্রথম অনুভব করলে। অবিখি এই প্রথম দিনই তার স্বামীকে তার ঠিকান জানতে দেওয়ার কথা হয়নি বটে, তবে পরে সেটাও ঠিক হ’ল। গুস্তাভসন, আমি বিশেষ জোর ক’রে বলতে পারি ন। সিস্টার ঈডিথ তার মত পরিবর্তন করিয়ে তাকে বিশেষ কিছু ভরসা দিয়েছিল কি না ; তবে আমি জানি যে,সে তার স্বামীকে বাড়ীতে নেমস্তন্ন করতে বলেছিল।