পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা । প্রিয় প্রভু জলাভাবে মরিতেছেন, সে কিরূপে আপনার তৃষ্ণ নিবারণ করিবে ? সে যখন জল লইয়া ফিরিয়া আসিতেছিল তখন শক্ররা তাহার হাত, পরে পা কাটিয়া দিল, পরে মারিয়া ফেলিল । হুসেন জল পাইলেন না। এইরূপে হুসেনের অঙ্গুচরদের প্রভুভক্তি ও সাহসের নানা কথা ঐতিহাসিকের লিথিয়াছেন। হুসেন আপন মৃতপ্রায় শিশু পুত্রকে দুই হাতে উচ্চ করিয়া তুলিয়৷ ইয়াজীদের সৈনিকদের দেখাইলেন ও বলিলেন, “হে ইয়াজীদের বীর যোদ্ধাগণ, তোমরা আমাকে বাধা দিতে আদিষ্ট *হইয়াছ, আমাকে শক্র বিবেচনা কর, অতএব আমার সহিত যেরূপ ইচ্ছা ব্যবহার করিতে পার ; কিন্তু এই দুগ্ধপোধ্য শিশুটি তোমাদের রস্থল অল্লার বংশধর । * এখনও তোমাদের মধ্যে অনেক লোক আছে যাহার। রস্থা অল্পকে দেখিয়ছে, তাহার মুখে স্বৰ্গীয় স্বধাপূর্ণ উপদেশ শুনিয়াছে। এই শিশুটি তাহারই বংশধর, সে তামাদের শত্রু নহে, ইহাকে পীড়ন করিতে তোমর আদিষ্ট হও নাই। আমি আপনার জন্য কিছু চাহিতেছি ন । এই শিশুর জন্য আল্লাতাল ও রস্থলের নামে ভিক্ষণ করিতেছি, ইহাকে দয়া করিয়া, আপনাদের দুগ্ধপোষ্য শিশুদের স্মরণ করিয়া, এক গণ্ডুয জল ভিক্ষা দিয়৷ ইহার প্রাণ রক্ষণ কর।” হুসেন যখন এইরূপে বলিয়া সকলকে শিশুটি দেখাইতেছিলেন, তখন কোনও সহৃদয় সৈনিক শিশুকে লক্ষ্য করিয়া একটি তীর মারিল । শিশুর বুকে সেই তীর বিদ্ধ ইইয়া পিঠ ফুড়িয়া বাহির হইল, ও সেই আঘাতে শিশু হুসেনের হাত হইতে নীচে পড়িয়া গেল। এইরূপে, মৃতপ্রায় শিশু জলাভাব-যন্ত্রণা হইতে চির-নিষ্কৃতি লাভ করিল। হুসেন, তাহাকে তুলিয়া একবার আদর করিয়া তাহার মুখচুম্বন করিলেন, পরে তাহার গর্ভধারিণীর ক্রোড়ে দিয়া বলিলেন, “ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দাও তোমার পুত্রের কিল যন্ত্রণার অবসান হইয়াছে, এখন সে মল্লাতালা ও আপনার পূর্বপুরুষ রহুল-অল্লাহের কাছে পহুছিয়াছে।” শিশুর মৃত্যুর পর হুসেন, এমন বিপত্তিকালেও,

  • ইজরৎ মহম্মদের তিরোধীনের s৮ বৎসর পরের ঘটনা ।
6 سمسابقہ �ج

भश्द्र-ब्रभू-उल-श्ब्रोम ዓ8ፃ একাগ্রচিত্তে দুই প্রহরের নমাজ উপাসনা শেষ করিলেন, উপাসনার পর যুদ্ধ করিয়া বীরগতি প্রাপ্ত হইবার জন্য যোদ্ধাবেশ ধারণ করিলেন । এত ক্লান্তি ও কষ্টের অবস্থা সত্ত্বেও তিনি যখন যুদ্ধ করিতে আরম্ভ করিলেন, তখন শত্রুর চারিদিক হইতে এককালে আক্রমণ করিয়াও সন্ধ্যার পূর্বে র্তাহাকে নিহত করিতে পারে নাই। তিনি বহু শত্রু নিপাত করিয়া ও স্বয়ং বহু আঘাত পাইয়া বীরগতি প্রাপ্ত হইলেন । હરે ઘનિ| ૭૦ হিজরার মহরম মাসের পৃথিবীতে যেখানে মুসলমানদের বাস আছে, বিশেষতঃ যেখানে আলীর পক্ষপাতী শিয়ার বাস করেন, সেখানে প্রতিবৎসর এই নিদারুণ শোকের দৃশ্বের বার্ষিক স্মৃতি-রক্ষা অভিনয় করা হয়। এবংসর ২১ জুলাই ১৯২৬ ] ঐ ঘটনার ১২৮৪তম বার্ষিক স্মারক দিবস। এ শোক-প্রকাশ কেবল মৌখিক নহে । যদিও ১২৪৬ সৌর বৎসর গত হইয়াছে, তথাপি হজরং অলীর প্রকৃত ভক্তেরা প্রতি বৎসর এই সময়ে এমন শোকাকুল হইয়া পড়েন যে, দেখিলে বিস্মিত হইতে হয় । লোকে হুসেনের মৃতদেহ বহন করিবার আধারের অমুকরণে, নানা ভঙ্গীতে তাজিয়া নিৰ্ম্মাণ করে, মসজিদে ও ইমামবাড়ীতে এই সময়ে মজলিস করিয়া হুসেনের মৃত্যু-কাহিনীর মর্সিয়া অতি করুণ ভাষাতে করুণ স্বরে আবৃত্তি করে। সে শোক-গাথা শিক্ষিত কথকের মুখে শুনিলে মুসলমান, অমুসলমান উভয়ের অতি নিৰ্দ্দয় পাষাণ হৃদয়ও একবার বিগলিত হয়, চক্ষু অশ্বপ্নাবিত হয় । পৃথিবীর ইতিহাসে এমন করুণ রসের ঘটনা কোনও দেশে কোনও কালে ঘটে নাই। প্রতি মহরম মাসে হুসেনের পিপাসার কথা স্মরণ করিয়া মুসলমানের পথিককে স্থষাসিত নিৰ্ম্মল শীতল জল ও নানাপ্রকার শরবৎ দান করিয়া থাকেন। অল-হুসেনের মৃত্যুর পর শিবিরের পুরুষ মাত্রেই নিহত হইল। অতএব ইয়াজীদের অম্বুমান অনুসারে হজরৎ মহম্মদের বংশে আর কেহ রহিল না। কিন্তু দোলাশায়ী পীড়িত যুবকের কথা কাহারও মনে ছিল না। ঈশাদের ১০ অক্টোবর, ৬১ দশ তারিথে হুইয়াছিল ।