পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] ম। পরিলে তাহাকে পাওয়া যায় না । কিন্তু মন হইতে বিষয়-ত্যাগ সহজে হয় না । অনেক শক্তির আবশ্বক । ভগবান করুণা করিয়া যাহাকে শক্তি দেন, সে-ই ত্যাগ করিতে পারে — শক্তি যারে দাও বহিতে অসীম প্রেমের ভার একেবারে সকল পর্দা घू5ांग्ला ली७ उॉब्र । তার ‘মান অপমান লজ্জ সরম ভল্লু’ কিছুই থাকে না । তাহার সমগ্র হৃদয় জুড়িয়া তুমিই বিরাজ করিতে থাক । তোমাকে এমন ভাবে পাইয়া সে তোমাকে দিয়াই তাহার হৃদয় পূর্ণ করিয়া রাখে। ত্যাগেই যে পরমানন্দ লাভ হয়, তাই ভক্ত তখন বুঝিতে পারেন। বিষয়-ভোগের প্রতি তখন সম্পূর্ণ বিতুষ্ণ আসে। বস্তুর বহিরঙ্গ আর তাহাকে মুগ্ধ করিতে পারে না। রূপের পারে রূপাতীতকে পাইয়া তাহার সকল পিপাসার অবসান হয় । সকল ভ্রান্তি বিদূরিত হয় । নিখিল তত্ত্ব সুস্পষ্টরূপে বোধগম্য হয় । “যে-গান কাণে বায়ু না শোন৷” সে-গান তখন তিনি শুনিতে পান । — প্রাণের বীণাখানি নীরব হইয়া যায় !! অপূৰ্ব্ব প্রেমানুভূতির ফলেই রবীন্দ্রনাথ সহজে জীবনের চরম লক্ষ্যে পৌছিলেন। অনন্ত পুরুষ ে। ৮.প্রমের বলেই ভক্ত আপনার শান্ত হৃদয়ে নিজের মনমত করিয়া উপভোগ করিতে পারেন । ভক্তপ্রাণে ভগবানের কতই লীলা । তিনি নিত্য নব নব রূপ ধারণ করিয়া ভক্তকে নব নব আনন্দ দান করিতে থাকেন । ভগবানকে এরূপ মধুর ভাবে পাইয়। কবি প্রার্থন করিতেছেন – ঙোমায় আমি হোর সকল দিশি, সকল দিয়ে তোমার মাঝে মিশি, তোমার প্রেম জোগাই দিবানিশি, ইচ্ছ। আমার সেইটুকু থাক বাকি। ‘সকলের মধ্যে তোমাকে দেখি, সব ল অানন্দের মাঝে তোমার আনন্দ বিরাজ করুক,’—এই যে-ভাব ইহাই 5 е о-- > е গীতাঞ্জলী ও অতীন্দ্রিয় তত্ত্ব Գե Գ রবীন্দ্রনাথের ভগবৎ-প্রেমের বিশেষত্ব । তfহার প্রেমসাধনা কোন সঙ্কীর্ণ শক্তিতে আবদ্ধ ন হইয়া বিশ্ব-প্রাণের বিকাশক্ষেত্রে প্রসার লাভ করিয়াছে। এই প্রেমাচুভূতির ফলেই তিনি আজ বিশ্ব-মানবের মিলনের জন্য ব্যাকুল হইয়াছেন । শান্তিনিকেতনে সামান্য বিদ্যালয় স্থাপনে ঘে-প্রেমের উন্মেষ, কবি-জীবনের ক্রম-বিকাশের সঙ্গে, স্বদেশ-প্রেমে তাহা অঙ্কুরিত হইয়া, তাহার পরিণত জীবনে “বিশ্ব-ভারতীর” মধ্যে তাহ পূর্ণাঙ্গত। প্রাপ্ত হইল । বিশ্ব-প্রীতিতেই ভগবৎ-প্রেমের পূর্ণ বিকাশ। এই বিশ্ব-প্রীতির মূলে রবীন্দ্রনাথের অকৃত্রিম প্রকৃতি-প্রেম। শৈশব ও বাল্যের মধ্যেই তিনি প্রকৃতি-রাণীর ভুবনমোহন সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হইয় তাহাকে প্রাণের সহিত ভালবাসিয়াছিলেন । যৌবনে সেই প্রেম ঘনীভূত হইতে থাকে ; ক্রমে সাধনার ক্রমবিকাশের সঙ্গে তিনি প্রকৃতির অস্বরে প্রবেশ করিতে লাগিলেন। স্বক্ষ-অন্তদৃষ্টি-বলে তিনি দৃপ্ত-প্রপঞ্চের অভ্যন্তরে যেদিন অব্যয় সত্তার সন্ধান পাইলেন, যেদিন তাহার সকল হৃদয়তন্ত্রী একসঙ্গে বাজিয়া खेव् ि কত বর্ণে কত গন্ধে কত গানে কত ছমেদ অরূপ তোমার রূপের লীলায় জাগে হৃদয়-পুর । তখন হইতেই তিনি অনন্ত পুরুষকে “মধুর” ভাবে লাভ করিয়! ধন্য হইলেন । মোহ-মদিরা একেবারে অপসারিত হইল। প্রেমের স্বরূপ পূর্ণরূপে হৃদয়ঙ্গম করিলেন । শৈশবের প্রকৃতি-প্রেম ও বাল্যে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের কাছে উপনিষদের জ্ঞানলাভ, নিৰ্ম্মল জ্ঞান ও নিৰ্ম্মল প্রেমের মধুর সমন্বয়ে রবীন্দ্র-সাধনার এমন বিকাশ । খেয়া, নৈবেদ্য, গীতাঞ্জলি, ধৰ্ম্মসঙ্গীত, গীতালি, গান ও কবিবরের আধুনিকতম আধ্যাত্মিক সঙ্গীতগুলিতে র্তাহার ধৰ্ম্ম-জীবনের বিশিষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। এতদিন র্তাহার সাধনাদশ কল্পনার মধ্যেই ছিল, আজি “বিশ্বভারতীতে” তাহার বিকাশ হুইল ।