পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ঋগ্বেদীয় উপনিষদের ব্রহ্মবাদ bళyé অনন্তর বাকৃ এই শরীরে প্রবেশ করিল। কিন্তু ইহা বাগিন্দ্রিয় দ্বারা বাক্যোচ্চারণ-সমর্থ হইয়াও (পূৰ্ব্ববৎ ) শয়ন করিয়া রহিল। তৎপর চক্ষু এই শরীরে প্রবেশ করিল। কিন্তু বাগিন্দ্রিয় দ্বারা উচ্চারণ-সমর্থ ও চক্ষুদ্বার দর্শন-সমর্থ হইয়াও ( পূৰ্ব্ববৎ ) শয়ন করিয়া রহিল । অনন্তর শ্রোত্র এই শরীরে প্রবেশ করিল। কিন্তু ইহা বাগিন্দ্রিয় দ্বারা উচ্চারণ, চক্ষু দ্বারা দর্শনে এবং শ্রোত্র দ্বারা শ্রবণে সমর্থ হইয়াও ( পূৰ্ব্ববৎ ) শয়ন করিয়া রহিল। তদনন্তর মন এই শরীরে প্রবেশ করিল। কিন্তু ইহা বাগিন্দ্রিয় দ্বারা উচ্চারণে সমর্থ, চক্ষুদ্ধার; দর্শনে সমর্থ, শ্রোত্রদ্বার শ্রবণে সমর্থ এবং মনদ্বারা চিস্ত করিতে সমর্থ হইয়াও ( পূৰ্ব্ববৎ ) শয়ন করিয়া রহিল । তখন প্রাণ এই শরীরে প্রবেশ করিল ; তখন এই শরীর উত্থিত হইল। ইহা দেখিয়া ইন্দ্রিয়সমূহ প্রাণের শ্রেষ্ঠত্ব অবগত হইল এবং প্রাণ ই প্রজ্ঞাত্ম বলিয়া সম্যকৃ অতুভব করিয়া সকলের সহিত ইহলোক হইতে উৎক্রমণ করিল” ( কেীঃ ২৯ ) । ইন্দ্রিয়গণের মধ্যে কে বড় এই লইয়া ঝগড়া হইয়াছিল । বাকু, চক্ষু, শ্রোত্র, মন ও প্রাণ এই পাঁচ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। স্বতরাং বুঝা যাইতেছে, প্রাণও একটা ইন্দ্ৰিয় । সুতরাং ‘প্রাণ অর্থ ‘প্রাণবায়ু । এই উপাখ্যান হইতে আরও বুঝ। যাইতেছে, এই প্রাণই প্রজ্ঞাত্মা, সুতরাং সিদ্ধান্ত এই, প্রাণরূপী প্রজ্ঞাত্মাই ব্ৰহ্ম । ( ૭ ) তৃতীয় অধ্যায়ে এই তত্ত্ব আরও বিশদভাবে ব্যাখ্যাত হইয়াছে। ইন্দ্র-প্রতনি-সংবাদ একটি উপাখ্যান রচনা করিয়া ঋষি বলিতেছেন— “দিবোদাস-পুত্র প্রতদন যুদ্ধ ও পৌরুষ দ্বারা ইন্দ্রের প্রিয়ধামে গমন করিয়াছিলেন। ইন্দ্র তাহাকে বলিলেন— ‘প্রতৰ্দন ! আমি তোমাকে বর দিব” । প্রতদিন বলিলেন, ‘মমুষ্যের পক্ষে তুমি যে বর হিততম বলিয়া মনে কর, তাহাই আমার জন্ত মনোনয়ন কর’। ইন্দ্র তাহাকে বলিলেন, ‘বর (অর্থাৎ শ্রেষ্ঠ পুরুষ ) কথন অবরের জন্য ( অর্থাৎ অশ্রেষ্ঠের জন্ত ) বর মনোনীত করে না, তুমিই মনোনীত কর’ । প্রতর্দন বলিলেন, ‘এরূপ হইলে বর আমার পক্ষে অ-বর ( অর্থাৎ অশ্রেষ্ঠ ) হইবে’। তখন ইন্দ্র সত্য হইতে বিচলিত হইলেন না, কারণ ইন্দ্র সত্যস্বরূপ । তিনি বলিলেন, “আমাকেই জান ; আমি ইহাই মানবের পক্ষে হিততম বলিয়া মনে করি যে, সে আমাকে জানিবে’ ৷’’ ( ৩,১ ) । প্রাণ=আয়ু=প্রজ্ঞাত্মা ইন্দ্র এইসঙ্গে আরও বলিয়াছিলেন— “আমি প্রাণ, আমি প্রজ্ঞাত্ম। আমাকে আয়ু ও অমৃতরূপে উপাসনা কর । আয়ুই প্রাণ এবং প্রাণই আয়ু । প্রাণষ্ট অমৃত । যতক্ষণ শরীরে প্রাণ থাকে, ততক্ষণই আয়ু ; প্রাণদ্বারাই পরলোকে অমৃতত্ব লাভ করা যায়। প্রজ্ঞাদ্বারা সত্য-সঙ্কল্প লাভ হয় । যে তামাকে আয়ু ও অমৃতরূপে উপাসনা করে সে ইহলোকে পুর্ণায়ু ও স্বৰ্গলোকে অমৃতত্ব ও অক্ষয়ত্ব লাভ করে (৩২) । প্রাণ কাহাকে বলে ঋষি এখানে তাহা বুঝাইয়া দিলেন । প্রাণ ও আয়ু একই বস্তু। এস্থলে প্রাণ কেবল প্রাণবায়ু নহে ;. ইহা জীবনী শক্তি । এই প্রাণ বা আয়ুর নামই আত্ম। এ প্রাণ জ্ঞানবিহীন নহে ; ইহা প্রজ্ঞ, এইজন্ত ইহার নাম প্রজ্ঞাত্ম। এস্থলে প্রাণের শ্রেষ্ঠত্ব স্থাপিত হইল । একটি আপত্তি কিন্তু এবিষয়ে ঋষি নিজেই একটি আপত্তি উত্থাপন করিয়াছেন। আপত্তিটি এই – “এবিষয়ে কেহ কেহ বলিয়া থাকেন যে, প্রাণ-সমূহ (ইন্দ্ৰিয়-সমূহ ) একীভূত হইয় থাকে, কারণ কেহ একই সময়ে বাগিন্দ্রিয় দ্বারা নাম ( বাক্য ) উচ্চারণ করিতে, চক্ষু দ্বার দর্শন করিতে, শ্রোত্র দ্বারা শ্রবণ করিতে এবং মন দ্বারা চিন্তা করিতে সমর্থ হয় না।* স্বতরাং প্রাণ-সমূহ একীভূত হইয়। এইসমুদায় কার্য একে একে সম্পন্ন করিয়া থাকে ( অর্থাৎ প্রণসমূহ একীভূত হইলে কেবলমাত্র

  • কেহ কেহ এই অংশের এই প্রকার অর্থ করেন—প্রাণ-সমুহ একীভূত হইয়া থাকে (নচেৎ ) কেহ একই সময়ে........চিস্তা করিতে সমর্থ হইল্সন