পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وا\-b-b আত্মপ্রকাশ করে তাহ দেখি । এইরূপ অসিত-বাবুর প্রত্যক চিত্রেই আমরা তাহার তৃলিকামুখে ভাবকে রূপ দিবার কল্পনা বর্ণরেখায় ফুটাইয়া তুলিবার এবং প্রাচীন ভারতের স্বপ্ত স্মৃতি, লুপ্ত ঐতিহকে চিত্রকলায় ধরিয়া রাখিবার প্রচেষ্টা দেখিতে পাই । ভারতের যে-সম্পদ কত শত বৎসর ধরিয়া অজস্তার গুহাগৃহে আত্মগোপন করিয়াছিল, আচাৰ্য্য অবনীন্দ্র-শিষ্যমণ্ডলীর মধ্যে র্যাহারা বিদুৰ্মী লেডী হারিংহামের সহযোগে তাহার উদ্ধার সাধন করিয়া জগতে পরিচিত করিয়া দিয়াছেন এবং তাহার পশ্চাতে ভারতীয় সভ্যতা ( culture ) রূপে যে পুঞ্জীভূত ঐশ্বৰ্য্য যুগযুগান্ত ধরিয়া বিরাজ করিতেছে তাহার স্বদুঢ় ভিত্তির উপর নূতন সৌধ নিৰ্মাণ করিয়া ভারতমাতাকে যাহারা সম্পন্ন ও গৌরবমণ্ডিত করিতেছেন, ত্রযুক্ত অসিতকুমার হালদার তাহদের অন্যতম । গবলোটি স্বীয় চিরাচরিত প্রথার অন্যথা করিয়া তাহাকে একটি প্রাদেশিক কলাশিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার করিয়া দেওয়ায় একদিকে নব্যভারতীয় শিল্পকলাকে যেমন স্বীকার করিয়া লইয়াছেন, অন্যদিকে তেমনি কলাবিদ হালদার-মহাশয়ের প্রতিভার উপযুক্ত মর্যাদ দান করিয়াছেন। অসিত-বাবুর বয়স এখন ৩৬ বৎসর। এই বয়সে তিনি যুক্ত প্রদেশের গবন্মেণ্ট কর্তৃক “School of Arts and Crafts” Rixo oiforârşā or নিযুক্ত হইয়া লক্লে প্রবাস করিতেছেন। ভট্রপল্লী এবং শুামনগরের মধ্যবর্তী গঙ্গাতীরস্থ জগদল র্তাহার পৈতৃক নিবাসস্থান। কিন্তু কলিকাতায় তাহার জননীর মাতামহ স্বনামধন্য মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাসাদে ১৮৯০ অকের ১০ই সেপ্টেম্বর তাহার জন্ম হয়। অসিত-বাবুর পিতামহ ছিলেন ছোটনাগপুর রাজ্যের ভূতপূৰ্ব্ব সৰ্বকারী ম্যানেজার এবং স্পেশাল কমিশনর, স্বনাম-প্রসিদ্ধ স্বৰ্গীয় রাখালদাস হালদার, যিনি ভারতের প্রথম সিবিলিয়ান ভসতেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূৰ্ব্বে ১৮৬১ খৃষ্টাব্দে বিলাত যাত্রা করিয়াছিলেন, এবং যাহার জীবনী বহুবর্য পূৰ্ব্বে আমরা যুরোপ-প্রবাসী বাঙ্গালী শীর্ষক প্রবন্ধে প্রবাসীতে প্রকাশ করিয়াছিলাম। অসিত-বাবুর খুল্লতাত বাবু নিৰ্ম্মলচন্দ্র হালদার ৮ বৎসর হইল ৩২ বৎসর মাত্র বয়সে তাহার গৌরবময় জীবনের প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড অবসানে স্বৰ্গবাসী হুইয়াছেন । তিনি ১৯০১ অকে বিলাতের কুপাস্হিল কলেজ হইতে এঞ্জিনীয়ার হইয়। ভারতে ডিষ্ট্রিক্ট ট্রাফিকৃ সুপারিন্টেণ্ডেণ্টের কৰ্ম্ম গ্রহণ করেন এবং অল্পবয়সেই এদেশীয়দের দুলভ রেলওয়ে বোর্ডের এসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারীর দায়িত্বপূর্ণ ও সম্মানিত পদে উন্নীত হন । ১৯১৮ অব্দের ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী বাঙ্গালীর এই গৌরব-রত্ব হরণ করে । অসিত-বাবুর পিতা শ্ৰীযুক্ত স্বকুমার হালদার মহাশয় ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেটের কৰ্ম্ম হইতে অবসর লইয়া এক্ষণে দেরাস্বলতানপুরে রাজার সরকারী - তরফের অভিভাবক নিযুক্ত আছেন। বঙ্গমাতার এই মুখউজ্জলকারী এবং বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালীর জাতীয় গৌরবপ্রতিষ্ঠাপক কুলে জন্ম লইয়া বাবু অসিতকুমার হালদার স্বীয় কৃতিত্ব দ্বারা তাহার বংশগত ঐতিহ্য অক্ষুঃই রাখিয়াছেন । দেশীয় চতুপাঠ, বিলাতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি, আক্ষরিক বিদ্যা অথবা ব্যাংিষ্টারের গাউন অধিত বাবুকে মুগ্ধ করিতে পারে নাই, তাহার সহজাত প্রবণতা অল্পবয়স হইতেই তাছাকে ললিতকলার বাণিক ও রৈখিক সৌন্দর্য্যে অfকৃষ্ট করিয়াছিল। কিন্তু এই সুকুমার কলা তখন দেশে ভদ্রুপ মানদ এবং অর্থকরী না থাকায়, প্রথমে তিনি অভিভাবকদিগের উৎসাহ হইতে বঞ্চিত ছিলেন। তথাপি তাহার অন্তনিহিত রূপকলাকুরাগ যখন র্তাহার এক-একটি ভাবময়ী মানস-প্রতিমাকে বর্ণ ও রেখায় রূপ দিয় তাহার কবি-হৃদয়কে অভিব্যক্ত করিতে লাগিল, তখন র্তাহার আরব্ধ পথে তার বাধা রহিল না। অসিতবাবুর নিজের ভাষায় বলিতে হইলে— "ছেলেবেলায় ১৫ বৎসর বয়সেই প্রজ্ঞদেবীর সেবা ছেড়ে দিয়ে কলদেবীর আরাধনায় মন দিলুম এবং সৌভাগ্যক্রমে ঠিক সময় পুঞ্জনীয় অবনীন্দ্রনাথের মত ব্যক্তিকে গুরুরূপে পেলুম। লেখাপড় ছাড়াত আমার পিতা আমার ভবিষ্যৎ জঙ্ককার বিবেচনা করলেন এবং আমার খুড়া-মহাশয়ও এ-দেশে আর্টের বা আর্টিষ্ট্রের কদর নেই জেনে আমাকে শিল্পকলা শিক্ষায় উৎসাহিত করতে পারলেন না। ১৯০৬ সালে আমি সব বধ এড়িয়ে কলিকাতা গবমেন্ট, আর্ট স্কুলে প্রদ্ধের জবনী-বাবুর চরণে আশ্রয় গ্রহণ করি। আমার জীবনে গৌরব করবার মধ্যে এই আছে যে, ঈশ্বরেচ্ছাঃ রামানঙ্গ-বাবু, রবি-বাবু, অবনী-বাবু, সার স্কুগদীশচন্দ্র, শ্রন্ধেয় ভগ্নী নিবেদিত, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যেন্দ্র ও জ্যোতিরিন নাথ ঠাকুর, কাউন্ট একীকুর প্রভৃতি জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিয় স্নেহলাভ করেচি এবং তাদের সংসর্গে থাকৃবার সৌভাগ্য লাভও করেচি। শিল্পকলায় কবি রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথকে যে খুনী