৬ষ্ঠ সংখ্যা ] দেবতার দান సిet মাটি ছাড়। আর কোথাও বসিত শুইত না । বসিয়া বলিল, “কাকা-মা, তোমায় একটা বুদ্ধি দিতে এলাম । তবে কাজে খাটাতে পারবে কি না, সে বাপু তুমি নিজে বুঝে দেখ।” ইন্দির হাসিয়া বলিল, “বুদ্ধিটা কি শুনি ত আগে, তারপর কাজে খাটানোর ভাবনা ভাব ব ।” লীলা বলিল, “কাকার অবস্থ৷ ত দেখছি। ভদ্রলোকের নাওয়া-খাওয়াও সবাই মিলে ঘুচিয়ে দিয়েছে। বাড়ীতে ঢুকতেই তার ভরসা হয় না। তুমিও ত শরীর পাত করতে বসেছ । ছেলেপিলে হ’ল না, এটা খুবই দুঃখের বিষয়, কিন্তু কি কবুবে বল ? সে মাই হোক, কাকার আর বিয়ে করা চলে না। সতীনের ঘর করতে হ’লে তুমি দুদিন বাদেই ময়ূবে । তোমায় এমন ক’রে হত্য করলে সেটা বংশলোপ হ’তে দেওয়ার চেয়ে কম পাপ কিছু হবে না। তবু বংশটার কথাও একটু আধটু যখন ভূবিতে হয়, তখন এক কাজ কর । এ বংশে পোষ্যপুত্র অনেক বার নেওয়া হয়েছে, তোমরাও তাই নাও । কাকার অমত হবে ব’লে ত মনে হয় না । অন্ততঃ র্ত্যকে জিগ গেস ক’রে দেখ । তোমাদের দু’জনেরই একটু শান্তি পাওয়া দরকার, যা দশা হ’য়েছে।” ইন্দিরা একটু যেন আশ্বস্ত হইয়া বলিল, “তুমি বাচালে, লীলা। আমার কোনো অমত নেই, এখন ওঁর মত হ’লেই বঁচি ” “আমি একটি ছেলে মনে মনে ঠিক ক’রেও রেখেছি। এ বাড়ীর দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের ছেলে। ছেলে ভালই ; বাপ-মারও ঘরে দু’মুঠো ভাত নেই । তাদের কাছে কী পাড় লে, তারা খুসি হু’য়েই দেবে ” এই বলিয়া লীলা চলিয়া গেল । দেবেন্দ্ৰ শুনিয়া খানিকক্ষণ চুপ করিয়া রহিলেন। তাহার পর বলিলেন, “টাকার লোভ দেখিয়ে অন্যের ছেলে কেড়ে নেওয়া, আমার.একটুও ভাল লাগে না । তবে এ মন্সের ভাল। আর-একবার বিয়ে করা আমার দ্বারা হয়ে উঠবে না, আর কিছু একটা না করলে আমার জ্ঞাতিগুষ্ঠ মিলে আর ক’দিনেই আমাদের দু’জনকে শেষ করবে । পোষ্যপুত্রই নেওয়া যাক্ । ছেলেটাকে আনিয়ে একবার ۹ سسته) ه دج দেখতে হবে, তার হাত-পাগুলো অন্ততঃ ঠিক আছে কি না ।” - সেই ছেলেটির বাপের কাছে প্রস্তাব করিতেই সে যেন লাফাইয়। উঠিল। তাহার পক্ষে এ একেবারে আকাশের চাদ হাতে পাওয়া । ছেলেকে সাজাইবার সামর্থ্য তাহাদের ছিল না, তবু যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করিয়া ছেলের মা ও ছেলেকে লইয়। ভদ্রলোক চট্পট জমিদারবাড়ীতে আসিয়া উপস্থিত হইল । বিশেষ প্রয়োজন না পড়িলে ই দর নিজের ঘর ছাড়িয়। নীচে অাসিত না । আজও সে উপরেই বসিয়াছিল । একটা ঝি গিয়া তাহীকে ডাকিয় আনিল । নীচে আসিয়। ইন্দির। দেখিল বাড়ীর যত লোক, চাকর দাপী শুদ্ধ দালানে জমা হইয়। ছেলেটিকে দেখিতেছে । সে হয়ত একদিন সকলের প্রভু হইবে, তাহাকে ত একটু ভাল করিয়া দেখিয়া লওয়া দরকার ? ছেলেট। একেবারে মুখ হাড়ি করিয়া বসিয়া আছে, তাহার বয়স বছর সাত হইবে । তাহার পিতার মুখ একেবারে আনন্দে উজ্জল, সে কৃতজ্ঞ গদগদ দৃষ্টিতে দেবেক্সের দিকে চাহিয়া আছে । ছেলের মা মেয়েদের মধ্যে বসিয়া, তাহার মুখের উপর এমন দীর্ঘ ঘোমটা যে, তাহার চেহারার কোনো আঁচ পাইবার উপায় নাই । ইন্দির নামিয়া আসিয়া দাড়াইতেই, সে মুখ তুলিয়া ইন্দিরার দিকে চাহিল। তাহার চোখে-মুখে এমন দারুণ বিদ্বেষ আর ক্রোধের চিহ্ন যে, ইন্দির ভয়েই যেন দুই পা পিছাইয়া গেল । ঐ দৃষ্টির ভিতর দিয়া সে যেন স্ত্রীলোকfটর হৃদয়ের অন্তস্তল পৰ্য্যস্ত দেখিতে পাইল । তাহার অর্থ নাই, তাই সে আজ সস্তান বিক্রয় করিতে আসিয়াছে, কিন্তু যে-নারী অর্থের বলে তাহার সস্তান হরণ করিতেছে, তাহাকে সে ক্ষমা করিতে পারে নাই । পিছন হইতে বাপের অনেক ঠেলা থাইয়। ছেলেট। এক পা দুই পা করিয়া অগ্রসর হইয়া আসিয়া ইন্দিরার কাছে দাড়াইল । তাহাকে একটা প্রণামও করিল। তাহার মুখে ভয়ের চিহ্ন ক্রমেই স্পষ্ট হইয়। উঠিতেছিল । ইন্দির আদর করিয়া তাহার মাথায় হাত বুলাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “তোমার নাম কি, বাছা ?”