পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SN939 করিয়াছে তখন উহারাও যে পরের হুকুমে চালিত বা শাসিত হইতে চাহিবে না ইহা বুঝা বিশেষ কঠিন নয়। যাহা হউক, আবিসনিয়া বিগুয়ের পর যখন ফ্রান্স, ব্রিটেন, তুরস্ক, মিশর প্রভৃতি জোট পাকা য় আত্মরক্ষার নাম কৌশল অবলম্বন করিতে লাগিয়া গেল তখন ইটালী নিজেকে নিতান্ত একাকী মনে করিতে লাগিল। আবার ফ্রান্স ও স্পেনে সমাজতন্ত্রীদের প্রাধান্ত স্থাপিত হওয়ায় নিজের স্বৈরশাসনে বিঘ্ন জন্মিবে এই আশঙ্কাও দেখা দিল। জাৰ্ম্মানীরও এই আশঙ্কা, কারণ সেখানকার নাৎসীবাদও ইটালীর ফাসিষ্ট-ভস্ত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত। ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি হওয়ায় তাহার আশঙ্ক আরও বাড়িয়া গেল । জাৰ্ম্মানী ও ইটালীতে মিলন ঘটনা পরম্পরায় একান্তষ্ট স্বাভাবিক হইয় পড়িল। এতদিন অষ্টিয়া লইয়া ছিল ইটালী ও জাৰ্ম্মানীর মধ্যে মতভেদ । মুসোলিনীর আগ্রগতিশব্যে শীঘ্রই ইহা দূরীভূত হইল। গত ১১ই জুলাই মুসোলিনীর মধ্যস্থতায় জাৰ্ম্মানী অষ্টিয়ার সাৰ্বভৌমত্ব স্বীকার করিয়াছে । ইটালী ও জাৰ্ম্মানীর মধ্যে মিলন সংঘটিত হইবার পরই উভয়ের মনোগত অভিপ্রায় হইল ভূমধ্যসাগরে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের ক্ষমতা কিরূপে হ্রাস করা যায়। ইহারা সৰ্ব্বদা গণতন্থের নিপাত কামনা করে, সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদকেও ইহার বিষদৃষ্টিতে দেখে। স্পেনের ব্যাপারে কিন্তু গণতন্ত্র ধ্বংসের দোহাই দিল না। সেখানে সাম্যবাদ আডড গাড়িতে চলিয়াছে এই অছিলায় তাহার বিরুদ্ধে প্রচার আরম্ভ করিল। পূৰ্ব্বে বলিয়াছি, স্পেনে একদল রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করিবার জন্তু ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়াছিল, ইটালী ও জাৰ্ম্মানী তাহাতে ইন্ধন জোগাইতেছিল। যাই ইটালী জাৰ্ম্মানীর মধ্যে জ্বাস্তাত প্রতিষ্ঠিত হইল অমনি এই দল চাঙ্গ হইয়া উঠিল। গত ১৮ই জুলাই স্পেনে ইহারা বিদ্রোহ ঘোষণা করিল। এই রাষ্ট্র দুইটি প্রকাঞ্চে বিদ্রোর্থী পক্ষকে সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্ৰ দিয়া সাহায্য করিতে লাগিল। স্পেনের এই বিপ্লব আঞ্জ এপ্রিল মাসেও শেষ হুইবার কোন লক্ষণ দেখা যাইতেছে না। এখন যেরূপ অবস্থা দাড়াইয়াছে তাহাতে ইহাকে ক্ষুদ্রাকারে একটি মহাসমর বলিলেও অসঙ্গত হইবে না। কারণ সরকার পক্ষে প্রবাসী ১৩৪৮ আস্থ জাম্ভিক বাহিনী নামে বিভিন্ন দেশের লোকেরা যুদ্ধ করিভেচে, বিদ্রোহী-পক্ষে লড়িতেছে জাৰ্ম্মানী ও ইটালীর স্বশিক্ষিত সেনানী। জাৰ্ম্মানীর সৈন্য-সংথ্যা ত্রমশঃ হ্রাস পাইয়াছে। সে নাকি চেকোমো ভাকিয়-সীমাস্থে সৈন্যসমাবেশে ব্যস্ত। তবে ইটালীর সৈন্য এক লক্ষের উপরে দাড়াইয়াছে। আন্তর্জাতিক বাহিনী ইহাদের তুলনায় নগণ্য। স্পেন বিপ্লবের একটা হেস্ত-নেস্ত করিতে এখন ইটালীই কেন লাগিয়া গিয়াছে তাহার রহস্য ভেদ করিবার জন্য আর একটি ব্যাপারের উল্লেপ পরে করিতেছি । এদিকে স্পেন-বিদ্রোহের আশু পরিসমাধির জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের আচকুল্যে লণ্ডনে ‘নন-ইন্টারছেনশন কমিটি’ নামে একটি কমিটি বসানো হইয়াছে। তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্থায় ইহার নিষ্ক্রিয়তাও স্বপরিস্ফুট। অতপর আর যাহাতে স্পেনে অস্ত্রশস্ত্র কিম্ব সৈন্যসামন্ত বিদেশ হইতে প্রেরিত না হইতে পারে তাহার জন্ত স্থলে ও জলে স্পেন-সীমাস্তে পাহারাদার নিযুক্ত হইয়াছে। কিন্তু এই ব্যবস্থা কতটুকু সাফল্যলাভ করিবে বা আদেী সাফল্যলাভ করিবে কি-না তাহা এখন বলা কঠিন। সোভিয়েট রুশিয়াও বৰ্ত্তমানে আমাদের কম দৃষ্টি আকর্ষণ করে নাই। তাহার ধনবল, জনবল, অস্ত্রবল প্রচুর। জার্মানী ও ইটালীর মত সেপানেও ডিক্টেটরীয় শাসন, জাপানের সমরবানী লুণ্ঠন কর্ণধার, প্রধান মন্ত্রী হায়াগী তবে ইহাদের সঙ্গে পার্থক্য এই যে, রুশিয়া সাধারণের মঙ্গলের জন্যই নিজেকে নিয়োজিত করিয়াছে। পর-রাজ্য হরণ করিবার বা সাম্রাজ্য স্থাপন করিবার কল্পনা ইহার নাই। গত নবেম্বর মাসে এখানেও গণতন্ত্রমূলক শাসন প্রবর্তনের