পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৬ প্রবাসী $లిg& তিন বছরের ছেলে গৌরকে লইয়া বাপের-বাড়ী গিয়াছে— তাই বাড়ীটাও করিতেছিল খ খ । নন্দ আসিয়া পড়ায় চৈতন্য যেন কতকটা হাফ ছাড়িয়া বাচিল । ఎ চৈতন্য বরাবরই নন্দকে বড় ভালবাসিত । এতটুকু বয়সে নন্দর যে সংসারের সকল সাধ-আহলাদ শেষ হইয়া গেল, ইহ তাঙ্গার মনে বড় বিধিত। তাই যহাতে নন্দ একটু মুখে থাকে, মনে কখনও কোন কষ্ট না পায়—সে চেষ্টা সে করিত । সেদিন থাইতে বসিয়া চৈতন্য বাটির মাছগুলা কেবল নাড়াচাড়া করিয়া ব্রাথিয়া উঠিয়া বলিল, “আজ তুই আমার পাতে খাবি নন্দ ।” •ন্দ অবাক হইয়। বলিল, “সে কেমন ক'রে হবে দাদা ? মাছের পাতে খাব কেমন ক’রে ?" —যেমন ক’রে থায় । —না দাদা, তোমার পায়ে পড়ি—সে হবে না । মামুযে শুনলে কি বলবে ? —মানুষে কি বলবে ? এই ত? তা বললেই বা । অন্যায় ত কিছু কছিস নে যে মানুযের কথায় ভয় । কে বলতে পারে ? —অন্যায় নয় তাই বা শাস্ত্রের নিষেধ। দোষ না থাকলে কি শাস্ত্রে নিষেধ করে, আর তাই দেশের লোক মানে ? বামুন-কায়েতের বিধবাদের দেখ ত ? --তুই থাম নন, তর্ক করিস নে । আমি তোপ শাস্ত্রের কথা জানি নে, কিন্তু আমার চোখের ওপরে তুষ্ট দুটো আতপ চাল আর ঘাস সেদ্ধ করে খাবি, আর আমি খাব দুধে মাছে—সে কখনও হবে না নন্দ, সে আমি সহঁতে পারব না । শাস্ত্র নিষেধ করতে পারে, কিন্তু আমার মত ভাইয়ের কাছে শাস্ত্র কি জবাব দেবে ? কচি বিধবা বোনকে আতপ চাল খাইয়ে রেখে ধে ভাই নিজে রুই মাছের মুড়ে নিয়ে খেতে বসতে পারে, সে জুনিয়ার সব পারে রে—তার মত পাষণ্ড নেই । বলিতে বলিতে চৈতন্য কাদিয়া ফেলিল। নন্দ তবুও ধরা গলায় বলিল, “কিন্তু দাদা—” —ন আর কিন্তু নয়—তুই খেতে বস নন্দ, আমি দেখি । দাদার প্রসাদ নন্দ দেবতার প্রসাদের মত থাইল । তাহার দেবতার মত দাদা---এমন দাদা কয় জনের হয় ! চৈতন্যের স্ত্রীর নাম নৃত্যকালী। চৈতন্যের স্বভাবটা যেমন নরম, নৃত্যকালীর মেজাজটা তেমনি একটু চড়া। তার উপরে মৃত্যকালীর বাবা শ-তিনেক টাকা দিয়া বছর-পাঁচেক আগে চৈতন্যকে একটা দোকান করিয়া দিয়াছেন, তাহাই খাটাইয়া চৈতন্য তাহরে অবস্থাটা একরূপ ভালই করিয়া লষ্টয়াছে । নৃত্যকালীর সেঙ্গ টুকুই গৰ্ব্ব । তাহার বাপ যদি টাক ন দিত তাহা ইলে চৈত্যকে যে আজ স্ত্রীপুত্রের হাত ধরিয়া পথে পাড়াইতে হইত—সেটা একেবারে নিশ্চিত । মৃত্যকালী ফাক পাহলে সময়ে অসময়ে এ-কথাটি শুনাহয় দিতে কখনও ভোলে না । কিন্তু চৈতন্তের সহজে কখনও ধৈয্যচ্যুতি হয় না, সে সহজ ভাবে ব্যাপারটা স্বাকার করিয়া লয়-ইহাই তাহার স্বভাব । U তিন মাস পরে নৃত্যকালী কোলের মেয়ে ও গৌরকে লক্ট্রয় ফিরিয়া আসিয়া দেখিল, তাহার ঘরদোরে মন্দরাণী দিব্যি সংসার পাতিয়া বসিয়া আছে । এখানে সে যেন বরাবরই আছে, এমনই ভাব । নৃত্যকাল সেজন্য মনে কিছু করিল ন—ভাবিল নন্দ দু-দিনের জন্ত আসিয়াছে আবার দু-দিন বাদেই চলিয়। যাইবে । বরং তাহার অল্পপস্থিতিতে সে থাকায় চৈতন্তের যে সুবিধা হইয়াছে তাহ ভাবিধা কতকটা সন্তুষ্টঙ্ক হইল । এদিকে মাস দুই পরেও যখন নন্দ যাহবার নাম করিল ন, তখন নৃত্যক লী একদিন মণকে বলিল, “তোমার শ্বশুরবাড়ার লোকগুলার আঞ্চেল কেমন গা ঠাকুরুঝি। আজ পাচ-ছয় মাস তুমি এসেছ—লোকটা ম'লে কি রইল একটা খোজ পৰ্য্যন্ত নিলে না ? নিজেদের বেী পরের বাড়ীতে এমনি ক'রে ফেলে রাখতে তাদের লজ্জ হয় না ?” মন জবাব করিল, “তুমি হয়ত জান না বউ-খোজ তার! আর করবে না ব'লেই তো এখানে পাঠিয়েছে। আর আমিও ধিরে যাব না বলেই তো এসেছি। কিন্তু তুমি পরের বাড়ী বগছ কি বউ r আপনার ভাইয়ের বাড়া কি পরের বাড়ী হ’ল ?”