পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চেকোস্লোভাকিয়ার উদ্ধারকর্ড প্রেসিডেন্ট মাসারিক শ্ৰী অমূল্যচন্দ্র সেন, ডক্টর-ফিল (হামবুর্গ), এম-এ, বি-এল মহাযুদ্ধের পর হইতে আজ পর্য্যস্ত ইউরোপে ধে কয়জন রাষ্ট্রগঠনকারী জননেতার অত্যুদয় হইয়াছে তাহাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য লেনিন, মুস্সোলিনি, হিটলার ও মাসারিক। প্রথম তিন জনের কথা বাঙালী পাঠকের কাছে অতি পরিচিত। ইহাদের চেয়ে চরিত্রে ও প্রকৃতিতে সম্পূর্ণ বিভিন্ন হইলেণ্ড মাসারিক নিজ বুদ্ধি ও চেষ্টায় অষ্টিয়ার হাপসবুর্গ রাজবংশের চেকোস্লোভাকিয়ার স্বাধীনতাযজ্ঞে পৌরোহিত্য করিয়া এই দেশ ও জাতিকে স্বাধীনতা দান করেন ; এই অসাধারণ কুতকৰ্ম্ম পুরুষের কিছু পরিচয় দিব। টোমাস মাসারিকের বয়স এখন প্রায় ৮৬ ৷ যুদ্ধের পর নবগঠিত গণতান্ত্রিক চেকোস্লোভাকিয় রাজ্যের ন্যাশাল অ্যাসেম্রি তাহাকে প্রথম প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত করেন। কনষ্টিটিউশন অনুসারে প্রেসিডেন্টের কfয্যকাল ৭ বৎসর ধার্য হয় ও কনষ্টিটিউশনে স্পষ্ট নির্দেশ থাকে ধে এক মাসাfরক ছাড়া আর কোন ভবিষ্যৎ প্রেসিডেণ্ট একাধিক বার নিযুক্ত হইতে পারিবেন না। মাসারিক কাৰ্য্যভার করিবার অব্যবহিত পরেই ন্যাশনাল অ্যাসেম্রি এই হুকুমনাম জারি করেন—“টোমাস মাসাfরক যে স্বাধীন গণতন্ত্রের নায়ক তাহার প্রত্যেক চেক প্রজা ধেন আজিীবন স্মরণ রাপেন যে এরূপ লোকের সামনে বাস করা, এরূপ লোকের মৃত্ত দেখ, তাতার জ্ঞানময়ী বাণী শ্রবণ করা আমাদের সকলের গৌরবের বিষয় ।” যুদ্ধের পর বিবর্ণ সাজসজ্জাহীন স্পেশাল ট্রেনে মাসারিক প্রাহী শহরে প্রথম প্রেসিডেণ্ট রূপে যখন পৌছিলেন, তখন রাজ্যের আবালবৃদ্ধবনিতা তাহাদের উদ্ধারকর্তাকে অভিনন্দন করিয়াছিল । হাপস্বুর্গ রাজাদের ব্যবহৃত স্বর্ণরৌপ্যমণ্ডিত প্রকাণ্ড জুড়িগাড়া ষ্টেশনের দরজায় দাড়াইয়। জুহাকে হাপুৰুর্গ রাজপ্রাসাদে (এখনকার প্রেসিডেন্ট-আলয় ) লইয়। যাইবার জন্য প্রতীক্ষা করিতে অধীন গ্ৰহণ ছিল। মাসারিক ষ্টেশনে পৌঁছিয়া জুড়িগাড়ী বিদায় করিয়া দিয়া যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত সামান্য একখানি মোটরে চড়িয়া শহরের মধ্য দিয়া জনতার জয়ধ্বনিতে অভিনন্দিত হইয়া প্রেসিডেন্ট-ভবনে পৌছিলেন। মাসরিক দুইবার প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হইয় অসাধারণ ন্যায়পরায়ণতা ও কৰ্ম্মঠতার সঙ্গে রাজ্যের কর্ণধারত্ব করেন ; তৃতীয়বার তিনি বাৰ্দ্ধক্যবশত: এই পদ পুনঃগ্রহণে অস্বীকৃত হইয়া তাহার সহকৰ্ম্মী ডাঃ বেনেশকে প্রেসিডেন্টরূপে সুপারিশ করিয়া কৰ্ম্মক্ষেত্র হইতে অবসর গ্রহণ করেন। মাসারিক গাড়োয়ানের ছেলে। তাহার পিতা হাপস্থবুর্গ রাজবাড়ীর অধীনে মফস্বলে গাড়োয়ানের কাজ করিতেন ; সেকালে এদেশে বড়লোকদের চাকরদের অবস্থা প্রায় ক্রীতদাসের মতই ছিল। মলিবের খেয়াল ও হুকুমমত তাহাকে সপরিবারে স্থান হইতে স্থানান্তরে গাড়ী লইয়া ঘুরিয়া বেড়াইতে হইত। তাহার মা আগে ভিয়েনার একটি বড়লোকের বাড়ীতে ঝি-গিরি করিতেন। বড়লোকের জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় থাকায় ও তাহাদের সংসর্গে ভদ্রজীবন সম্বন্ধে ধারণা হওয়ায় মা’র ইচ্ছা ছিল ছেলেকে লেখাপড় শিখাইয়৷ ভদ্রলোক করেন। মা'র উচ্চাশ ও অপেক্ষাকৃত আলোকপ্রাপ্ত মন মাসারিককে জীবনে বহু সাহায্য করিয়াছিল। বস্থ বৎসর পরে প্রাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকৰূপে মাসারিক একবার বলিয়াছিলেন, “আমার সব রকম উন্নতির জন্য আমি আমার পুণ্যবতী মাতার যত্ন, আত্মত্যাগী প্রেম ও নিপুণ শিক্ষার কাছে ঋণী ; জীবনের বহু ছুদিনে মাতপিতা ও আমার দুই ভাইয়ের ভালবাস আমার প্রাণে বল সঞ্চার করিয়াছে।" * মাসারিক গ্রামের হস্থলে সামান্ত লেখাপড়া শেখেন। মা'র কাছে তিনি জাৰ্ম্মান ভাষা শেখেন। সেকালে এদেশে