পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ཅི་༤༤ জার্মান ভাষা বিদেশীয় রাজার ভাষা ছিল, শুধু বিশিষ্ট ভদ্রলোকেরাই জাৰ্ম্মান জানিতেন, সাধারণ লোকের ভাষা ছিল চেক্ । তাহাকে ইস্কুলে পাঠাইবার জন্য মাসারিকের পিতাকে মনিবের দ্বারে কাতর প্রার্থনা জানাইয় অনুমতি লইতে হইয়াছিল। তাহার পিতা ও সেই জমিদারীর অন্য চাকররা কি ভাবে কঠিন পরিশ্রমে ও ঘোর দারিত্র্যে মনিবের কাছে কুকুরের মত জীবন কাটাইতেন তাহাও মাসারিক বাল্যকালে প্রত্যহ দেখিতেন। অল্প একটু লিখিতে পড়িতে শিথিয়াই মাসারিক না বুঝিলেও নানারূপ বই লইয়া ঘাটিতেন । বিভিন্ন দেশের মানচিত্র তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্ট। তন্ময় হইয় দেখিতেন, জ্যামিতির অঙ্ক কষায় আত্মবিস্তৃত হইয়া যাইতেন । চেকু ও জাৰ্ম্মান বই ঘাটিতে ঘাটিতে লাটিন কথা পাইয়া না বুঝিলেও তাহাতে পুলকিত হইয় সসন্ত্রমে তাকাইয়া থাকিতেন, ন জানি উহাতে কি রহস্য আছে । মাসারিক যে নিম্নপ্রাথমিক স্কুলে পড়িতেন সেখানে একবার এক জন বড় পাদরী স্কুল পরিদর্শন করিতে আসেন ( সেকালে এদেশে প্রাথমিক স্কুলগুলি ক্যাথলিক পাদরীদের হাতে ছিল ) । ছেলেদের পাদরীর সম্মুখে নানারূপ আবৃত্তি করিতে হইত। মাসারিকের মুখে আবৃত্তি শুনিয়া পাদরী বলিয় গেলেন ইহাকে যেন মাধ্যমিক স্কুলে পাঠান হয়, এ ছেলেটি ভবিষ্যতে শিক্ষক হইবে । বলা যত সহজ, কর তত নয় ; ছেকোভিটসূ গ্রামে (এখানে তখন মাসারিক-পরিবার বাস করিতেছিলেন) মাধ্যমিক স্কুল নাই, অন্যত্র পাঠাইবার তাহাদের সঙ্গতিই বা কোথায় ? কিন্তু মাতার উচ্চাশা বাধfর সীমা মানে না। দরিদ্র মাতা নিজের উদ্যমে বাধা দূর কfরলেন। দূরবর্তী হস্টোপেটুস নামক এক গ্রামে তাহার এক ভগ্নী থাকিতেন। ভগ্নীপতির ছোট একটি দোকান ছিল, এই গ্রামে একটি মাধ্যমিক স্কুলও ছিল । ভগ্নীর বাড়ীতে গিয়া মাতা ব্যবস্থা করিলেন যে মাসারিক মাসীর বাড়ীতে থাকিবেন, মেসোর দোকানে সাহায্য করিবেন । ভগ্নীর একটি ছোট মেয়ে ছিল, মাতা তাহাকে আনিয়া নিজের tাড়ীতে রাখিয়া তাহার ভরণপোষণের ভার গ্রহণ করিবেন। এইরূপে মাসাfরকের মাধ্যমিক স্কুলের পথ পরিষ্কার হইল । গহার বাপের পুরাতন গাড়োয়ানের পোষাক কাটিয়া প্রবাসী a8ه و ওয়ার মা একটা "নূতন স্বট” তৈরি করিয়া নিলেন। এই পোষাক পরিয়া মাসারিক নূতন স্থলে ঢুকিলেন। সমপাঠীরা তাহার এই নূতন স্কট দেখয় ঠাট্টা করিত। তাহাতে আবার মাসারিক কোথা হইতে "চেহার হক্টতে চরিত্র নির্ণয়” সম্বন্ধে একটা বই সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন, সমপাঠীদের নাক মুখ চোখ প্রভৃতি দেখিয়া সৰ্ব্বদাই তাহাদের চরিত্র সম্বন্ধে নানারূপ আবিষ্কার করিতেন। এই সব কারণে সঙ্গীর তাহাকে একটু অদ্ভুত বলিয়া ঠিক করিয়া তাহাকে এড়াহয় চলিত। এই স্কুলের ভাষা ছিল জাৰ্ম্মান, তাহাও মাসারিক ভাল রকম বুঝিতেন না, তাই প্রথম মাস-কয়েক তিনি প্রত্যেক বিষয়ের দৈনিক পাঠের প্রত্যেক লাইন মুখস্থ করিয়া ফেলিতেন। সমবয়সীদের সঙ্গ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া মাসারিক শিক্ষকদের সঙ্গে মিশিতে লাগিলেন। একটি তরুণ শিক্ষক তাহার বিশেষ বন্ধু হইলেন । স্কুলের শেষে অবকাশের সময় যখন অন্য ছেলেরা থেলায় মাতিত বা বাঁধারের দোকাণে আড় দিত, মাসাfল্পক তপন বই লহয় তন্ময় ইতয়া থাকিতে ন অথবা তরুণ শিক্ষকটির সঙ্গে নানা আলোচনায় ব্যাপুত থাকিতেন । মাধ্যমিক স্কুলে মাপাfবক দুই বৎসর পড়িয়া'&লেম, ইহার মধ্যে একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য । সেকালে এদেশে ইহুদীদের সম্বন্ধে খ্ৰীষ্টানদের নানারূপ কুসংস্কার ও মিথ্যা ধারণা ছিল । লোকে হহুদী-বাড়ার সামনে দিয়া যাহবার সময় রাস্তার ওঁধার দিয়া যাহঁত ! স্কুলে জন-কয়েক ইহুদী ছেলে থাকিলেও এবং তাহার। ভদ্র ব্যবহার কfরলেও মাসারিক তাহদের সঙ্গে মিশিবার ভরস পাহঁতেন না। একবার ছেলেরা একটা চড়ুইভাতিতে গিয়াছিল. দলে এক জন ইহুদী ছেলেও ছিল । দুপুরে খাবার তৈরি দেখিয়া যখন সকলে হুড়াছড়ি করিতেছে, তখন হঠাৎ ইহুদী ছেলেটির খোজ পাওয়া গেল না। ব্যাপার কি দেখিবার জন্য মাসারিক হৈ হৈ করিতে কfরতে তাহার খোজে বাহির হইলেন। যাহা দেখিলেন তাহাতে কিন্তু মাসারিক একেবারে নিৰ্ব্বাক হইয়া ফিরিয়া আসিলেন। ছেলেটি খামারের এক নিরাল কোণে দরজার পিছনে দাড়াইয়া দেওয়ালে মাথা রাখিয়া ইহুদীদের মাধ্যাহিক উপাসনার মন্ত্ৰ পড়িতেছে। এই ঘটনায় মাসারিক বুঝিলেন