পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏՆՆ প্রৰণসী ్సNరి 98 লইয়া অলস স্বপ্নের জাল বোনার অভ্যাস ভুলিতে পারবে । কিন্তু দেখিল তাহার এ অনুমান মিথ্য ; “তস্মিন প্রীতি" ও “তস্ত প্রিয় কাৰ্য্য” তাহার জীবনে পরস্পরকে বাড়াইয়াত তুলিতেছে। কাজ ও অকাজের মাঝখানে ঐ চিন্তা যেন তাহাকে নেশার মত পাইয়া বসিতেছে । মনে মনে কথা বলার অভ্যাস সুধার অনেক দিনের । সে অভ্যাস কিছু মাত্র দূর হয় নাই, কিন্তু তাহাতে একটা পরিবর্তম দেখা দিয়াছে । আগে সুধার মানস-মাটো কথা বলিত অনেক জন, এখন সেখানে ক্রমে দুইটি মানুষই প্রায় সমস্ত মঞ্চ জুড়িয়া বসিয়াছে। স্বধা ও তপন মনে মনে প্রতিদিন যত কথা বলে, লিখিয়া ব্ৰাখিতে পারিলে তাহাতে বহু কাব্য রচনা হইয়া যাক্টত । বলে স্বধাই, কিন্তু সুধাই তাহা এমন তন্ময় হইয়। শোনে যে, সে-ই যে নাট্যরচয়িত্রী তাহা তাহার নিজেরই মনে থাকে না ; তপনকে লইয়। স্বধী মনে মনে চলিয়া যায় তাহাদের সেই শৈশবের নয়ানজোড়ে। সেখানে বিশালকাও মহুয়া গাছের তলায় কালে পাথরের উপরে বসিয়া তাহার। দীঘি-পাড়েব বকেদের সাদা ডানার দ্যুতি দেখে আর কত তুচ্ছ কথায় জীবনের মাধুর্ঘ্যকে উপভোগ করে । কথা বলিতে বলিতে পট পরিবর্তিত হয়, সুধা ও তপন চলিয়াছে রূপান্ত নদীর জলে প। ডুবাইয়া ওপারের ধানের ক্ষেতের দিকে । সেখানে তাহারা সাওতাল মেয়েদের নিকট দুধ কিনিয়া তৃষ্ণ নিবারণ করিতেছে। তপনের অঞ্জলিতে সুধ দুধ ঢালিয়া দিতেছে । তপন থাইতে থাইতে হাসিয়া ফেলাতে অৰ্দ্ধেক দুধ মাটিতে পড়িয়া গেল । সুধা সরেশষে ভ্রভঙ্গী করিল, কিন্তু রাগ তাহার আসে না যে ! সেও হাসিয়া ফেলিল । আবার পট-পরিবর্তন। স্নধা নয়ানজোড় হইতে ঠাটিয়া রতনজোড়ে যাইতে যাইতে ঘন মেঘ করিয়া চারিদিক অন্ধকার হইয় গেল। পথ খুজিয়া পাওয়া যায় না । সুধা অজানা পথে বিপথে চলিয়াছে, অন্ধকারে পথের মাঝখানে ত দাড়াইয়া থাকা যায় না । কে যেন গানের সুরের ভিতর স্বধার নাম ধরিয়া ডাকিতেছে। এত তাহার পরিচিত কণ্ঠ । ঐ ত তপন । সে বলিতেছে, “মুধ, তোমার এত ভয় ?” মনের ভিতর এই সকল মনগড়া গল্প জমা হইতে হইতে কতক সে ভুলিয়া যাইত, কতক বার বার দেখা দিয়া যেন অবশ, তপনের কথাগুলিও সত্য হইয়া উঠিয়া সমস্ত জীবনটা মধুর রসে ভরিয়া তুলিত । আপনি আপনার আনন্দ-নিকেতন গড়িয়া সে তাহার ভিতর সুখে বিচরণ করিত। কিন্তু জীবনের সমস্তটাই ত স্বপ্ন নয়, অৰ্দ্ধজাগ্রত মুহুর্তের মালাও নয়। এই স্বপ্নাবেশ চোখ হইতে কাটিয়া গেলে প্রকৃত মানুষটাকে কাছে দেখিতে, বন্ধু বলিয়া জানিতে যে দুরন্ত আগ্রহ তাহাকে অস্থির করিয়া তুলিত, তাহাকে সে সহজে সামলাইতে পারিত না । কিন্তু প্রকৃতি তাহার শাস্ত বলিয়া বাহিরে কোন প্রকাশ ছিল না । তাহার মনে পড়িত শৈশবে-দেখ। তাহার স্বরধুনীর কথা। মাসিমার স্মৃতির সঙ্গে রাত্রির অন্ধকারে শোনা ধে সব ছিন্নস্বত্র গল্প ও বেদনার স্বর তাহার মনের ইষ্টত যেন মিলাততে সে বুঝিতে মাসিম ভিতর এখনও জডাঠয়া আছে, তাতাতে মনে আপনাকে সে অনেকখানি সুরধুনীৰ সঙ্গেই পারিতেছে । শৈশবে ধে-সুরধুনীর দুঃখের কথা পরিত না, কিন্তু র্যাঙ্গর ঐকাস্তিকতার হব, যাহার তন্ময়তার ছবি তাহাব মনে মুদ্রিত হইয়া গিয়াছিল, সেই স্বাধনী এতদিন পরে তাঙ্গৰ হৃদয়ে জীবস্ত হয় উঠতেন, ছিন্নসূত্র সে সকল কাহিনী, গভীর মনোবেদনার সে ইতিহাস, আত্মfবলোপী সে অনুরাগ যে কেমন ছিল, সুধা তাই আপনি গড়িয়া লক্টতে পাবিত । মনে পড়িত মিলিদিদির কথা ; মিলিদিদি তাহার এত বিলাস আরাম ছাড়িয়া যোগিনী বেশে যে কোন দূবদেশে চলিয়! গেল, সে fক তাহার মত এই গভীর অন্তরাগের জন্য ? একবার মনে হয় তাহার মত এমন করিয়ু উচ্চাসনে প্রিয়কে বসতিবার ক্ষমত মিলিদিদির নাঙ্গ, আবার মনে হয় মিলিদিদির মত এমন করিয়া সব ভাসাইয়া চলিয়া যাইবার ক্ষমত! বোধ হয় স্বধার মাঠ । অন্তরাগের ঐশ্বধ্যে মিলি বড় কি স্বধা বড়, কি তাহার মাসিম সুরধুনীই বড় ছিলেন, ইহা ভাবিত্ত্ব বিশ্লেষণ করিয়া দেখিবার কোন প্রয়োজন ছিল না ; এই তিন জনের অনুরাগ একই পৰ্য্যায়ের কিনা তাহাও স্বধ সাহস করিয়া বলিতে পারে না । কিন্তু তবু তাহার মনে এ সকল কথা বারবার ঘুরিয়া ঘুরিয়া জাসিত। মনে পড়িত তাহাদের স্কুলে মনীষা ও স্নেহলতার তর্কের বিষয়। সেদিন সে ইহাদের তর্কে ঠিক কোন স্থানটি লষ্টবে