পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৭০ হৈমন্তী বলিল, “তুমি বলছ বটে জ্যাঠাইমা, কিন্তু জ্যাঠামশায় ত এখনও তোমার কথায় সায় দিলেন না ।" পালিত-গৃহিণী বলিলেন, “থাক্, থাক, তোকে আর পাকামি করতে হবে না। তুই না হয় ষা, ওর গয়না কটা উদ্ধার করে নিয়ে আয় ।” হৈমন্তী বলিল, “আচ্ছা, তাই না হয় যাচ্ছি। কিন্তু আমার সঙ্গে কে যাবে ?” ছেলেরা পরস্পরের মুখের দিকে চাহিল। নিখিল বলিল, “যাকে আপনি হুকুম করবেন। আমরা সবাই রাজি আছি, কিন্তু যাকে আপনি না নিয়ে যাবেন সেই কাল থেকে কাজে আসা বন্ধ করবে।” হৈমন্তী বিপদগ্ৰস্ত মুখ করিয়া বলিল, “তাহ’লে ত সকলকে নিয়ে যেতে হয় দেখছি। সেই ভাল, এখানকার কাজকৰ্ম্ম ফেলে সবাই যাওয়া ষাক দিদির গমুনা ওমানতে ” স্বধা একটু ইতস্ততঃ করিয়া বলিল, “আমি ভাই থাকছি। আমার দ্বারা যতটা হয় কাজ এগিয়ে রাখব।” নিখিল বলিল, “আমি প্রথম আপনাকে সমস্তামু ফেলেছিলাম, আমিও থাকছি।” হৈমন্তী ভীত মুখ করিয়া বলিল, “আস্তে আস্তে সবাই থেকে যেও না, আমি কি শেষে একলাই যাব।” তপন ও মহেন্দ্র তখনও 'না' বলে নাই, স্বতরাং তাহারাই দুইজনে ধাইবে ঠিক হইল। তপন চলিয়া গেল, হৈমন্তীও চলিয়া গেল । সুধার ইচ্ছা করিতেছিল সেও সঙ্গে সঙ্গে উঠিয়া চলিয়া যায়। কিন্তু সে যে কাজ করিবে কথা দিয়াছে এখন ত আর কথা ফিরানো যায় না । স্ট্রোর করিয়া খুশী মুখ করিয়া সে কাগজকলম কালি লহয়া বসিল । দলের অর্ধেক মানুষ উঠিয়া যাওয়াতে মিলিকেও একটু স্নান দেখাইতেছিল। একমাত্র খুশী দেখা গেল নিখিলকেই । সে আবার একতাড়া খাম লইয়া কলম চালাইতে চালাইতে বলিল, “দিদি ত উমার তপস্তায় মগ্ন, আর সবাই মহোৎসাহে দিল an৬, ভাগ্যিসূ আপনি রইলেন, নাহলে আমি বেচারী একলা মাঠে মারা যেতাম।” প্রৰণসী SN288 কুধা বলিল, “এমন উৎসব-আয়োজনের ঘটাকে আপনি মাঠ বলেন !” কিন্তু মনে মনে তাতারও উৎসব-গৃহকে আজ শূন্ত মাঠ বলিয়া মনে হইতেছিল। হৈমন্ত্রীদের বাড়ীর উৎসব এই কয়দিন ধরিয়া তাহারও নিকট যে উৎসব সমারোহে উজ্জ্বল হইয়া উঠিতেছিল তাহা ত এই বাহিরের আয়োজন দেখিয়া নয়। তাহার মনে যে একটা উৎসবের পৰ্ব্ব আসিয়াচে । এ-বাড়ীতে এই কয়দিন যতবার আসিয়াছে ততবারই তপনের পেপ মিলিয়াছে, তপনের সঙ্গে বসিয়া কাজ করিয়াছে, পরস্পর পরস্পরের সাহায্য করিয়াছে, ইহাই ত উৎসব সমারোহ ! গামূলার ভিতর জল ঢালিয়া কিসমিস ভিজাতীয় তাহারা সকলে মিলিয়া কিসমিস বাণ্ঠিয় ডালায় তুলিত, তোলা রূপার বাসন বাহির করিয়া সকলে পালিশ করিত । তপনের পালিশ সকলের চেয়ে ভাল হঠত, কারণ তাহার হাতথাটানো অভ্যাস আছে । কিন্তু বাকি আর সকলের চেয়ে স্বধারই কাজ হইত ভাল, ইহা ছিল মধার একটা মস্ত আনন্দের বিষয় ! অন্যদের হারানোর আননের চেয়ে বেশ আনন্দ ছিল তাহার তপনের প্রায় সমকক্ষ ওয়ার আনন্দ । তপন বলিত, “আমার চেয়ে আপনাহে কাঞ্জ ভাল ।” অবশু, স্বধ তা স্বীকার কfরত ন! । থামের ঠিকান লিখিতে গিয়াও দেথা গেল মৃধা ও তপনের হস্তাক্ষরঙ্গ সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ । নিখিল বলিত, “তোমরা আমাদের সব বিষয়ে হারাবে ঠিক করেছ ?” এই যে দুইজনকে একসঙ্গে "তোমরা" বলিয়ু উল্লেখ করা হহাতে স্থধার মনে পুলকের শিহরণ থেলিয়া যাহত । যে কোন কারণেই হউক না কেন, তাহারা দুই-এক জায়গায় এক পধ্যায়ের ত মাঙ্গুষ । এই একজাতীয়তা যদি তাহাদের সৰ্ব্বত্র তহঁত ! সুধা আত্মচিস্তায় মগ্ন হহয়! গিয়াছিল । আপনার কথার উত্তরের অপেক্ষ ৪ করে নান্ত । হঠাৎ তাহার চমক ভাঙিল নিখিলের কথায় । নিখিল বলিতেছে, “আপনি যেখানে আছেন তাকে আর মাঠ বলি কি ক’রে ? সে ত মালঞ্চ ।” সুধা বলিল, “আপনি সব কথাতে ঠাট্টা করেন ।” নিখিল বলিল, “মহেন্দ্রের মত আমারও কপাল খারাপ ।