পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

بامو ستون های প্রবাসী ১৩৪৪ তুরস্ক সাম্রাজ্যের অংশ ছিল, এবং ১৯১৪ খ্ৰীষ্টাব্বের ১৮ই ডিসেম্বর ইহার উপর ব্রিটিশ রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার ( ব্রিটিশ প্রোটেক্টরেটু ) স্থাপিত হইয়াছে ঘোষিত হয় । মিশর হইতে ব্রিটিশ সিংহের থাবা অপহৃত হইয়াছে, ইহা সত্য নহে। মিশরের উপর প্রভুত্ব কি প্রকারের ও কতটা ছিল, তাহা এখন আমাদের আলোচ্য নহে। ঐ প্রভুত্ব যে-সব উদ্দেশ্যে রাখা হইয়াছিল, মিশরের সহিত “সন্ধিতে” সেই সকল উদ্দেশু সাধনের ব্যবস্থা পুর্ণমাত্রায় রাখা হইয়াছে । এবং ব্রিটেন ও মিশরের সম্বন্ধে বাহত যেটুকু পরিবর্তন হইয়াছে, ব্রিটেন মিশরীয় ও অস্তজাতিক পরিস্থিতির চাপে তাহা করিতে বাধ্য হইয়াছে, মহানুভবতার জন্য করে নাই । ইরাকের আধুনিক ইতিহাস সংক্ষেপে এই, যে, গত মহাযুদ্ধে ইহা তুরস্কের অধীনতা-শৃঙ্খল হইতে মুক্ত হয়। তখন ইহাকে স্বাধীন রাষ্ট্র বলিয়া গণনা করা হয় এবং স্থির হয়, যে, লীগ অব নেগুন্সের আদেশপ্রাপ্ত কোন শক্তি ( “ম্যাণ্ডেটরি পাওয়ার” ) ইহার অভিভাবক হইবেন । ব্রিটেনকে এই অভিভাবকত্ব দেওয়া হয় । ১৯২৭ সালের ১৪ই ডিসেম্বর ব্রিটেনে ও ইরাকে যে সন্ধি হয় তাহার ফলে ব্রিটেন ইরাককে স্বাধীন রাষ্ট্র বলিয়া মানিতে অঙ্গীকার করেন। ১৯৩২ সালের ৪ঠা অক্টোবর ইরাক লীগ অব নেশুন্সের সদস্য হয় এবং ব্রিটেনের অভিভাবকত্ব শেষ হয়। অতএব দেখা যাইতেছে, ভারতবর্ষের সহিত ব্রিটেনের যে সম্পর্ক, ইরাকের সহিত ব্রিটেনের সে সম্পর্ক কোন কালেই ছিল না । ইরাকের রক্ষণ হইতে ভক্ষণের যে সুযোগ ব্রিটেন পাইয়াছিল, তাহা প্রকারান্তরে এখনও আছে । ব্রিটেনের “অভিভাবকত্ব” যে ইরাকে লোপ পাইয়াছে, তাহা অন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ফল, ত্রিটিশ মহানুভবতার দৃষ্টান্ত নহে। ব্রিটেন স্বেচ্ছায়, সদাশয়তাবশতঃ, মানব মাত্রেরই স্বাধীনতার মূল্য ও প্রয়োজন বুঝিয়, নিজের অধীনতা হইতে কোন জাতিকে ও দেশকে মুক্ত করিয়াছে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাসে এরূপ কোন দৃষ্টান্ত নাই। বাহির হইতে ভাসা ভাসা ভাবে দেখিলে যেখানে এরূপ মনে হইতে পারে, সেখানেও একটু তলাইয়া বিচার করিলে দেখা যাইবে, যে, অবস্থার চাপে পড়িয়া ব্রিটেন সদাশয় হইতে বাধ্য হইয়াছে। আয়ালাও যদি স্বাধীন হয়, তাহার স্বাধীনতাও ব্রিটেন স্বীকার করিবে বাধ্য হইয়া, স্বেচ্ছায় নহে। ইহাও মনে রাথিতে হইবে, যে, যেখানে যেখানে ব্রিটেন নিজের অধীন দেশগুলিকে ঔপনিবেশিক স্বাধীনতা বা ডোমীনিয়নত্ব দিয়াছে, সেখানে শ্বেতকায়েরাই প্রভু ; অশ্বেতদিগকে মালিক হইতে ব্রিটেন কোথাও দেয় নাই । ব্রিটিশ জাতির মধ্যে কতকগুলি লোক আছেন যাহারা পরাধীন দেশসকলের, ভারতবর্ষেরও, স্বাধীনতার দাবী সমর্থন করেন। কিন্তু তাহারা যদি পালে মেণ্টে তাহাদের সংখ্যাভূমিষ্ঠ দল গড়িয়া তুলিয়া গবন্মেণ্ট হইয়া বসেন, তখন র্তাহাদের সদাশয়তা টিকিবে কিনা, তাহা ভবিষ্যৎ কালে বুঝা যাইবে । মিঃ বেভান বলিতেছেন, অধীন দেশের উপর প্রভুত্ব করার সুখের বা প্রভুত্ব হইতে উৎপন্ন মুনফার জন্য ইংরেজরা অন্য দেশকে অধীন করিয়া রাখে না । অন্য একটা দেশকে অধীন করিয়া রাখিয়া তাহারা মুখ পায় কি না, তাহা তাহাদের মনের কথা । তাহাদের মনে আমাদের প্রবেশাধিকার নাই। অতএব সে বিষয়ে কিছু বলিব না। কিন্তু মুনফাটা বাহিরের ব্যাপার । সে বিষয়ে কিছু বলা যাহতে পারে । ভারতবর্ষকে অধীনস্থ রাথিয়া ব্রিটেন প্রধানত: তিন রকমে লাভবান হয় । ভারতবর্ষের সামরিক ও অসামরিক প্রধান চাকরিগুলি হইতে ইংরেজরা খুব বেশী বেশী বেতন, ভাতা ও পেক্ষান পায়। যদি সেগুলির প্রতি তাঁহাদের লোভ না থাকিত তাহা হইলে তাহারা সেইগুলি নিজেদের হাতে রাখিবার জন্য নানা অন্যায় কৌশল ও উপায় অবলম্বন করিত না । সেই সব কাজের জন্য যদি যোগ্য ভারতীয় না পাওয়৷ যাইত, তাহা হইলে ইংরেজরা বলিতে পারিত, যে, ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয় কাজ চালাইবার জন্য তাহারা বাধ্য হইয়৷ এই সব কাজ নিজেরা করে । কিন্তু প্রকৃত অবস্থা অন্তরূপ। কয়েকটি দৃষ্টাস্ত লউন । ভারতীয় সিবিল সাবিসের জন্য উপযুক্ত লোক বাছিয়া লইবার নিমিত্ত ইংরেজরাই একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রথা প্রবর্তিত করে । তাহাতে জ্ঞানবিষয়ক