পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষণঢ় মহাষ্ট্রমী ●sôግ বলিয়া ত মনে হয় না,—মুহাসের যা কপাল ! একটা ছোট কাজ জুটিলেও কি সত্য এত দিন চিঠি লিখিত না ! না লিখুক সে ফিরিয়া আম্বক, তাহাকে না দেখিয়া সুহাস যে আর থাকিতে পারে না। পূজার আর কত দিন আছে— মনে মনে স্বহাস একবার হিসাব করিতে থাকে, রান্নাঘরে উনানের পাশে বসিয়া দু-চোথ তাহার ঝাপস হইয় আসে । আশ্বিনের শেষাশেষি নদী ও মাঠের জল কমিতে থাকে। কিন্তু এ কমায় আর লাভ কি ? মাঠে চেষ্টা করিলেও সবুজের একটু আভাস দেখিতে পাওয়া যায় না— ত না যাক—দত্ত-বাড়ীর বৈঠকখানায় ‘মহানিশা’র রিহাসেল মুরু হইয়াছে। একইাটু কাদা মাখিয়া নদীতে জল আনিতে যাইবার সময় মেয়ের দত্ত-বাড়ীর বৈঠকখানার পিছনে দাড়াইয় তাহাদের ভাই, দেওব, স্বামীর কণ্ঠস্বর কান পাতিয়া শোনে । সন্ধ্যাকালে জল আনিতে গিয়া সুহাস সেদিন কয়েক বার মহলার আওয়াজ শুনিয়া আসিল । দাড়াইয়া মহন্স সে একেবারে শুনিতে পারে না : সত্য আজ বাড়ীতে নাই। গত বৎসর সভ্য মহলা সারিয়া রাত্রি করিয়া বাড়ীতে আসিত বলিয়া তাহার কত কষ্ট হুইত, কিন্তু সে কষ্ট এবারের তুলনায় কি ?—সেদিন রাত্রে শুইয়া গুইয়া স্বহাস কত কথা ভাবিল : সত্য লক্ষ্মণের পার্ট করিবার সময় উৰ্ম্মিলা 'গ্ৰাণেশ্বর" বলিয়৷ ছুটিয়া আসিয়াছিল,—ভাই লইয়া সত্যকে কি ঠাট্ট ! কিন্তু ঠাট্ট করিতে গিয়া স্বহাস র্কাদিয়া ফেলিয়াছিল। সত্য প্রথমে বুঝিতে না পারিয়া হতভম্ব হইয়া গেল, তার পর যখন বুঝিল, হাসিয়া বুকে টানিয়া লইয়া বলিল—এতেই লাগে ? স্বহাস সভার আলিঙ্গন হইতে মুক্ত হইতে চেষ্টা করিয়া বলিয়াছিল, জানি নে, যাও! সত্য কাতুকুতু দিয়া স্বহাসকে হাসাইতে চেষ্টা করিয়া বলিয়াছিল, যদি আমি আবার বিয়ে করি—তা’লে কি কর । মহাস রাগিয়া বলিয়াছিল,—তুমি বুঝি মনে কর— আর একজন ঘরে আস্লি তার বাদী হয়ে থাকপে,— কুমোরে জল নেই ! ثاسسسسجلإنثا সত্য স্বহাসের মুখথান দু-হাতে ধরিয়া ডিজ, হারিকেনের স্তিমিত আলোকে তাহার চোখের দিকে একদৃষ্টে চাহিয়া থিয়েটারের ভঙ্গীতে বলিয়া উঠিয়াছিল, এত হিংসে । কিন্তু ঠাট্টাই করুক আর যাহাই করুক, স্বামী তার লক্ষ্মণের পার্ট আর করে নাই,—নবমীর দিনও ত সীতা প্লে হইল । পাগলী বুড়ী যখন পুটুলি খুলিয়া বসে, তখন তার সাত রাজার ধন মাণিক দেখিয়া দেখিয়া আশ আর মেটে না,— মহাস সারা রাত ধরিয়া স্বামীর ভালবাসার কথা ভাবিল। দেরি আর সয় না, পূজার আর কত দেরি ? শাস্তিলতার ঘুম হইতে উঠিতে একটু দেরি হয়, ছেলেপিলে লইয়া বাস তার,—স্বহাসই সকালে উঠিয়া ঘরের কােজ সারে, ফেন-ভাত রাধিয়া ছোটদের খাওয়ায়, নিজে খায় । কিন্তু সেদিন রৌদ্র উঠিলে মেজবে যখন ঘুম হইতে উঠি গেল স্বহাস তথম অকাতরে ঘুমাইতেছে, ধাইবার সময় মেজবোঁ ঠোট উন্টাইয় একটা ভ্ৰকুট করিয়া গেল । এত বেলায় স্বহাস কোনদিন উঠে নাই, সারারাত ঘুম হয় নাই, প্রভাতের সময় চোখ দুইটি ভার হইয় আসিয়াছিল। লজ্জিত সন্ত্রস্ত স্বহাস ঘর হইতে বাহির হইয়াই দেখিল, পশ্চিমের ঘরের বারান্দায় বড়বোঁ স্বামীর পায়ে তেল মালিশ করিতেছে, রান্নাঘরের দাওয়ায় সকলে ফেন-ভাত খাইতে বসিয়াছে—উষা ভাতে সিদ্ধ কাঠালের বিচিতে তেল-তুন মাখাইতেছে। শাস্তিলতা একটা পিড়িতে বসিয়া তেল মাখিতে মাখিতে উষার উপর তর্জন করিতেছেন,—বুড়ো ধাড়ি মেয়ে হ’লি, একটু কাজের কাজি হলি নে,—রাধে দিলাম, মা'খে খাতি পারিস নে, —আগে মুনির সঙ্গে লঙ্কা চট্ৰকাতি হয় না ? আঞ্জ মেজবোঁ নিজে ফেন-ভাত রাধিয়াছে, আবার তেল মাখিয়া দুপুরের রায় রাধিবার জোগাড় করিতেছে, --মুহাস লজ্জায় মরিয়া ছুটিয়া গিয়া উষাকে বলিল, উষ সরো, আমি মাথ তিছি । শাস্তিলতা অস্বাভাবিক গম্ভীর হইয়া বলিল—থাকৃ থাক্, আর আধিকে দেখাতি হবি নে, ওই পারবে