পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\58ల প্রবণসী ১৩৪৪ মেজবে তাহার মুখের দিকে তাকাইয়া প্রথমে একটু খতমত থাইল, তার পর একটু শুষ্ক হাসি হাসিয়া বলিল— কিন্তু তুই ওরে কীনে পালি ? সুরমা হাসিয়া বলিল, ক’নে আবার পাব ?—এই ঘরেরতে চুরি করে নিয়ে গেছি। বেী তোমাগারে চুরি করিছি আমি, কিন্তু ঐ কলসীড। নিয়ে গেছেন—আর এক জন । আর এক জন তখন দক্ষিণের ঘর হইতে সিংহনাদ করিয়া উঠিল, ওর মিছে কথা শুনবেন না বৌদি—গ্রামের জামাই হয়ে আমি কখনও চুরি করতি পারি ? মেজবে কুমুদের কথায় জবাব না দিয়া সরাসরি ঘরে উঠিল—সুরম শোন—তুই যদি ছোটবেীরে নিয়ে গেলি— তয় এ বেড়া ভাঙল কেড শুনি ? মাটি ধ্বসকালে কেড ? মেজবোঁয়ের ইঙ্গিতটা স্বরম প্রথমে বুঝিতে পারে নাই, তার পর যখন বুঝিল-হাসি আর তার থামিতে চায় না—যেন কেহ একটা জলভরা কলসী উপুড় করিয়া ঢালিয়া দিয়াছে। —হাসিস্ ক্যান পোড়ারমুখী ? পোড়ারমুখী বলিল, রাগ করবেন না বৌদি—এ তালি আপনারই কীৰ্ত্তি। মুহাস আর কলসীডারে যখন নিয়ে গিছি তখন বেশী রাত্তির ত হয় নেই, আমগারে বাড়ীর সকলেই জানে। এত দিন পাহারা দিছি, কালওঁ একলা থাকপি কেমন ক’রে—তাই নিয়ে গেছি। ও ঘরেও ত ঐ কলসীটা ছাড়া জিনিষপত্তর ছিল না। রাত্তিরে ও রাঙা পিসীর কাছে ছিল—তারে জিগগেস করলিই জানতি পাবেন । হাসি দিয়া আরম্ভ করিলেও প্রসঙ্গ এখন ক্রমেই অপ্রিয় হইয়া উঠিতেছে দেখিয়া সত্য দক্ষিণের ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিল । কুমুদও তার পিছু পিছু আসিয়া স্বরমাকে বলিল, এই দিকে আ'সো—বাড়ী চলে । স্বরম পোড়ারমুখীর একটুও লজ্জা নাই, সে কুমুদের আহবানে আগাইয়া আসিতে আসিতে মেজবৌদির দিকে তাকাইয়া বলিল, কিন্তু যাই বোলেন বৌদি—আপনার বরাত ভাল—বেী ফিরে পালেন, দেওরের চাকরি হ’ল— এবার আমাগারে মিঠেই মোও খাওয়ান--মা দুগগার ওখানে ষোড়শোপচারে ভোগ দেন—মহাষ্টমী আপনার করাই সাজে । sp মেজবে অধিকতর বিস্মিত ইষ্টয় কহিল, চাকরি আবার ক'নে হ’ল ? হেমন্ত ঘটনাকে একটু সহজ করিয়া লইতে বলিলেন, তা বুঝি শোন নি ?—শোনবা ক’নতে—সত্য আলি ত তুমি ঘাটে গেলে ! আমাগারে সত্যর বেশ ভাল চাকরি হইছে—পূজোর পরেই যায়ে আরম্ভ করবি,— প্রথমেই একেবারে তিরিশ টাকা মাইনে। তুমি এক কাজ কর মেজবেী—আমি চিনি সন্দেশ আনায়ে দিচ্ছি, তুমি থালা বাসনগুলো একবার জল দে নাও-মার ওখানে ডাল দিতি হবি ৷ মেজবে স্বামীর মুখের দিকে তাকাইয়া বলিল, शांशें । উত্তরের ঘরের বারান্দায় কুমুদের অপহৃত কলসীটার উপর রৌদ্র পড়িয়া জল জল করিতেছিল, মেজবোঁয়ের ইচ্ছা করিতেছিল ঐ কলসীটা গলায় বাধিয়া সে নিজেই একবার ভরা-গাঙের তল কোথা দেখিয়া আসে।