পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষণচ ত্রিবেণী Nరిట్రNరి তৃষ্ণ, তার মিলনের সুনিশ্চিত সম্ভাবনার আকস্মিক আঘাতে কেমন নিস্তেজ হ’য়ে পড়ল । এতদিন তার জীবনে যে বিরাট তীব্র বিরহকে নিজের চিত্তের একান্ত অবলম্বনরূপে জাগিয়েরাখা দুঃসাধ্য-সাধনার আত্মপ্রসাদে সে মগ্ন ছিল, সহসা তার সেই মহত্ত্বের অধিকারে অপ্রত্যাশিতভাবে বঞ্চিত হয়ে, পাওয়ার আনন্দের মধ্যেও একটা সৃষ্টিছাড়া কৰ্ম্মস্থত্রবিচ্ছিন্ন নিরবলম্বত তার চিত্তকে এসে অধিকার করলে । কয়েক মুহূৰ্ত্ত সে চিন্তালেশশুন্য নিষ্ক্রিয় চিত্তে স্থির হয়ে বসে রুশল । নিখিলনাথের কাছ থেকে শোনা কমলার অভূতপূৰ্ব্ব কাহিনী শেষ করে ভুলু দত্ত বললে, ‘শচীনবাবু, নিখিল একটা অন্তরোধ জানিয়েছে আপনাকে ডাক্তার হিসেবে । আপনি হঠাৎ গিয়ে দেখা স্ত্রীর পক্ষে সেটা ক্ষতিকর হওয়া সম্ভব । অভাবনীয় আনন্দের ঘা করলে আপনার আচমক একটা পেলে তার স্মৃতি কিম্বা তার স্নাযু সে আঘাত সহ নাও করতে পারে । তাই আপনাদের সকর ভোলানাথের সহায়তায় ধীরে ধীরে সাবধানে একটু এগোনে দরকার । পড়েই রয়েছে—fক বলেন ? কিন্তু কি অদ্ভুত ব্যাপার বলুন ত ? ভাগ্যিস আমি ঠিক সময়ে গিয়ে পড়েছিলাম, নইলে হা: হা: হা: একেই বলে কারু পৌষ মাস কারু সৰ্ব্বনাশ । আমি তা হ’লে আসি এখন । নমস্কার ।” ভুলু দত্তের কথার ধাক্কায় অতিরিক্ত ক'রে ভুলুকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা লাগল, অপ্রাসঙ্গিকভাবে কমলার জন্যে এই কয় বছর যে মে কি রকম মনোবেদন সহ করেছে, এবং স্বী যে তার সমস্ত জীবনের কতখানি অধিকার ক’রে ছিল, এমন কি তার প্রতি একান্ত প্রেমে সে যে কমলাপুরী নারী-প্রতিষ্ঠানের স্মৃতিমন্দির রচনা ক’রে একান্ত চিত্তে তারই ধ্যানে নিমগ্ন ছিল এই কথা বলতে বলতে তার স্তিমিতপ্রায় প্রেমকে আনন্দ-উৎসব ত যেন সচেতন গুয়ে সে জালাতে এবং এক প্রকার লজ্জিত হয়েই যেন নিতাস্ত যেন সে সঞ্জীবিত ক'রে তুল - হুলু দত্ত মনে মনে একটু অশ্রদ্ধাপূর্ণ কৌতুক অনুভব ক'রে ভাবলে, “আচ্ছা বেী-পাগলা লোক ত! খেয়ে দেয়ে কাজ নেই। পয়সা থাকলে কত সখই না যায়।” ভুলু দত্ত বিদায় হয়ে গেলে সে ম্যানেজার এবং ভোলানাথকে ডেকে দস্তুরমত উচ্ছসিত হয়ে উত্তেজিত কণ্ঠে কমলার সংবাদ জানালে। ম্যানেজারকে তখন কমলাপুরী পাঠিয়ে দিলে পাৰ্ব্বতীর কাছে সংবাদ বহন ক’রে এবং একটা বিরাট উৎসবের আয়োজন করতে । এতদিনের হারানো গীপুত্রকে পাওয়ার আনন্দের নেশায় সে রীতিমত নিজেকে মাতিয়ে তুললে। বললে, “ভোলাদ, তোমাকেই ত সব করতে হবে । কি করব ন-করব আমি কিছু ভেবে পাচ্ছি নে। এখনি চল, যাওয়া যাক । তুমি কিন্তু মাথা ঠিক রেখ ভোলাদ, নইলে আবার একটা কি কাণ্ড হবে । বুঝতেই ত পারছ।” ভোলানাথ তার কাছ থেকে প্রথম শুনেই হেসে কেঁদে একেবারে অস্থির হয়ে উঠেছিল। “খোকন বাবু ? আহা কত বড়টি হয়েছে না জানি। মা কি ছেড়ে যেতে পাবে বাবু ? আহা মা আমার জগদ্ধাত্রী ! মাথায় ক'রে নে আসবখন । খোকন বাবু কি চিনতে পারবে ? কত পুণিা করেছিলেম, বাবু, যে আবার মাকে খোকনবাবুকে ফিরে পেলাম " তত্যাদি শচীন বললে, "ভোলাদ, সেই ওর হারানোর দিন কি রকম পোষাক তোমার ছিল মনে আছে ? ঠিক সেই রকমটি সেজে তোমায় যেতে হবে । নইলে,—ণ্ডর আবার সব ভুল হয়ে গেছে কি না । কি জানি শেযকালে যদি চিনতে ন পারে ।” শচীন্দ্রনাথের নিজের মনে এতদিনকার অদর্শনজনিত অপরিচয়ের যে দ্বিধা সঞ্চিত হয়ে উঠছিল ভোলানাথের উচ্ছসিত চিত্তে কমলা সম্বন্ধে সে সন্দেহ তার লেশমাত্র ছিল না। সে সগৰ্ব্বে বললে, “মা কি ছেলেকে ভুলতে পারে বাবু? দেখে, আমি গিয়ে একবাব মা বলে ডাকলে সব মনে পড়ে যাবে । কিন্তু খোকন বাবু কি চিনতে পারবে ? বড়ই ছেলেমানুষ ছিল কি না।” খোকন যে চিনতে পারবে না সে সম্বন্ধে ভোলানাথের সঙ্গে শচীন্দ্রের মতদ্বৈধ ছিল না। কিন্তু কমলার মন এতদিনের পরও তার প্রতি আসক্ত থাকবে বা তাকে ফিরে পেতে চাইবে তার নিশ্চয়তা কি ? এমন কি এতদিনকার বিস্তৃত পরিত্যক্ত গার্হস্থ্য জীবনের বন্ধনকে ধে