পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Neg প্রবণসী SNSク@B স্নেহ ও ভালবাসার একান্ত অভাব ছিল। একটুও স্নেহ থাকিলে কেহ ঐরূপ অবোধ বালিকাদের কলিকাতার মত জনবহুল নগরীর পথে এক ছাড়িয়া দেয় না, এবং হারাইয়৷ যাইবার পর তাহাদের ফিরিয়া পায় বার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্ট না করিয়া থাকিতে পারে না । এইরূপ পথে-কুড়াইয়া-পাওয়া মেয়ের ভিতর উচ্চবংশের মেয়েও আছে । এক জন নিজের যে পরিচয় দিয়াছিল তাহাতে বুঝা গিয়াছিল যে সে ব্রাহ্মণকন্ত। এই মেয়েটি সংস্ব ভাবা ও সুন্দরী ছিল । লেখাপড়া ও অন্যান্য শিক্ষায় সে বেশ পারদর্শিতার পরিচয় দিয়াছিল ৷ এক জন বাঙালী ব্রাহ্মণ ইহাকে ৰিবাহ করেন । পথে-কুড়ানো মেয়ে ছাড়া বেহালয় হইতে উদ্ধার করা অনেক বালিকা অনাথ-আশ্রমে আসিয়াছে। অনাথআশ্রমের অধিকাংশ বালিকাই বেশু্যালয় হইতে উদ্ধার করা মেয়ে । বাংলা দেশে এইভাবে পাপ-ব্যবসায়ের বলিস্বরূপ কত পবিত্র নিষ্পাপ শিশু উৎসর্গীকৃত হইতেছে, হিন্দু সমাজে কে তাহার খবর রাখে ? এ বিষয়ে হিন্দু সমাজের একান্ত ঔদাসীন্য দেখিয়া বুঝা যায় যে, এরূপ কতকগুলি মেয়ে যায় বা থাকে তাহাতে সমাজের কিছু যায় আসে না । ধৰ্ম্মসাধনা করিয়া নিজের মুক্তির একটা পথ পাইলেই হইল। বেহালয় হইতে সংগৃহীত এই সমস্ত মেয়ের মধ্যে ব্রাহ্মণ কায়স্থ প্রভৃতি উচ্চ বর্ণের কন্যাও আছে, অনাথ-আশ্রমের খাত্তাপত্রে আমরা ইহাই কেবল জানিতে পারি। কিন্তু কি কারণে ঐ বালিকগুলি বেগুলিয়ে বেখ্যার হাতে গিয়া পড়িয়াছিল তাহার রহস্য কিছুই জানিতে পারি না । আমি একটি ঘটনা জানি যে, কোন এক সম্রাস্ত পরিবার অর্থাভাবে ও ম্যালেরিয়ায় একেবারে উৎসল্প হইয়া গেলে পরিশেষে কেবল এক জন বুদ্ধ ও একটি অল্পবয়স্ক বালিকা সেই পরিবারে অবশিষ্ট স্বরূপ ছিল । বুদ্ধের আর সংসারে থাকিবার ইচ্ছা ছিল না। তিনি বালিকাটিকে এক বন্ধু-পরিবারের আশ্রয়ে রাগিয়া এবং তাঙ্গর ভরণপোষণ ও বিবাহের ব্যয়ের জন্য কিছু টাকা তাহাদের নিকট গচ্ছিত রাখিয়া কাশীধামে যাত্র কfরলেন । কিন্তু তিনি যাইবার পর এই গচ্ছিত টাকা আশ্রয়দাতা নিজের জন্যই খরচ করিয়া ফেলিলেন এবং কন্যাটি এক স্থান হইতে অন্ত স্থানে স্থানান্তরিত হইতে হইতে অবশেষে বেশু্যালয়ে স্থানপ্রাপ্ত হইল । বস্তুতঃ এই বাংলা দেশে এরূপ কোন আশ্রম নাই যেখানে শিশুকন্যার একমাত্র অভিভাবক মৃত্যুকালে অথবা প্রবাসে যাত্রার সময় উপযুক্ত অর্থ দিয়া কন্যার ভরণপোষণের ও শিক্ষা এবং বিবাহের ভার দিয়া নিশ্চিন্ত হইতে পারেন। বেগুণগণ এইরূপ শিশুকন্যাকে ক্রয় করিবার জন্য বস্তু অর্থ ব্যয় করিয়া থাকে। আশ্রমের সহকারী অধ্যক্ষ আমাকে বলেন যে, একবার একটি শিশুকন্যাকে বেশু্যালয় হইতে উদ্ধার করিয়া অনাথ-আশ্রমে পাঠানোর পর এই বালিকাটি যে-বেশু্যার অধিকারে ছিল সে ইহাকে ফিরিয়া পাইবার জন্ত মোকদ্ধমা করে। যখন মোকদ্ধমায় হারিয়া গেল, তখন সে গোপন ভাবে অনাথ-আশ্রম হইতে মেয়েটিকে ফিরাইয়া লইবার জন্য সহকারী অধ্যক্ষের নিকট দুই সহস্ৰ মুদ্র ঘুষ দিবার প্রস্তাব করিয়াছিল। ইহা হইতেই বুঝা যায় যে, ব্যবসায়ের জন্য মেয়ে সংগ্ৰহ করিতে পতিতার কিরূপ ভাবে টাকা খরচ করে । আর এই দরিদ্র দেশে পয়সা খরচ করিলে মেয়ে সংগ্রহ করা তাহাদের পক্ষে কঠিন হয় না | বিভিন্ন জেলার ম্যাজিষ্ট্রেটগণ মধ্যে মধ্যে এই আশ্রমে মেয়ে পাঠাইয়া দেন । একটি মেয়ের ইতিহাস এই যে, ম্যাজিষ্ট্রেট তাহার মা ও বাবা উভয়কেই জেলে পাঠান, সুতরাং শিশুটিকে আশ্রমে পাঠানো ছাড়া উপায়ান্তর ছিল না । আমি যখন মেডিক্যাল কলেজে কাজ করিতাম সেই সময় কোন রোগিণীর হাসপাতালে মৃত্যু হইলে তাহার যেশিশু মায়ের সহিত হাসপাতালে ভৰ্ত্তি হইয়াছিল, খ্ৰীষ্টিয়ান মিশনর আসিয় তাহাকে লইয়া যাইত, এইরূপ দেখিয়ছিলাম। কিন্তু এই আশ্রমে দেখিলাম, সোস্যাল সাভিস লীগের স্থাপয়িত ডাক্তার দ্বিজেন্দ্রনাথ মৈত্র মেয়ে হাসপাতাল হইতে এইরূপ মাতৃহীন একটি ছোট ছেলে ও মেয়েকে এখানে পাঠাইয়াছেন। কলিকাতায় ক্যামাক ষ্ট্রীটে vērą szt{ã fois;foșð ofsèta (Society for Protection of Children in India) &ros woefo ছেলেমেয়ে অনাথ-আশ্রিমে পাঠানো হইয়াছে।