পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سواریا লিখিত অনেকগুলি পত্র পড়িয়াছি। পত্র পড়িয়া বুঝা যায় যে তাহারা স্বামিগুহে গিয়া স্বর্থেই আছে, তাহাদের পারিবারিক জীবনে কোন অশান্তি নাই। এই পত্রগুলিতে বিবাহযোগ্য পাত্রের সংবাদ আছে, যে-পরিবারে তাহার বিবাহ হইয়াছে যদি সেই পরিবারে ভাল পাত্রের বিষয় সে জানিতে পারে তখনই আশ্রম-বর্তৃপক্ষকে তাহা জানায়, এই জন্য আশ্রম-কর্তৃপক্ষের আর এখন পাত্রের জন্ত অধিক খোজখবর করিতে হয় না। ১৯২৪ সালের পর একমাত্র যে মেয়েটির সিন্ধু প্রদেশে বিবাহ হয় নাই সেটিও সন্ত্রাস্ত বংশের কায়স্থ-কন্যা, বাড়ী হুগলী জেলায় বঁাশবেড়ে গ্রামে। ইহার পিতা স্ত্রীর মৃত্যুর পর সংসারে আর্থিক অনটন উপস্থিত হইতে দেখিয়া সাড়ে চারি বৎসরের মাতৃহীন কন্যাকে অসহায় অবস্থায় ত্যাগ করিয়া নিজের পারলৌকিক মুক্তির জন্য "কৃষ্ণলাল স্বামী এই নাম গ্রহণ করিয়া সন্ন্যাসাশ্রম গ্রহণ করেন। কোন প্রতিবেশী কন্তটিকে অনাথ-আশ্রমে পাঠাইয়া দেয়। কন্যাটি বয়স্থ হইবার পর আশ্রম-বর্তৃপক্ষ তাহার বিবাহের চেষ্টা করিলে সে সিন্ধীবিবাহে অসম্মতি জানায় । কিন্তু অনেক অস্তুসন্ধান করিয়াও তাহার জন্য কোন বাঙালী পাত্র পাওয়া যায় নাই। অবশেষে বীরভূম জেলার এক কুম্ভকারের সহিত তাহার বিবাহ দেওয়া হয়। এই পাত্রটি পটাস বুরো নামে একটি চীনা: টির কারখানায় কাজ করে । বিবাহের পর তাহার স্ত্রী তাহার স্বামীর কাজের সাহায্য করিতে আরম্ভ করিল এবং সেক্ট পল্লীর ছোট ছেলেমেয়েদের শিক্ষাদানের কার্য্যও সে গ্রহণ করিয়াছে। এই মেয়েটির জীবনের ইতিহাসে দুটি বিষয় আমরা লক্ষ্য করি। প্রথম, হিন্দুজাতির পারলৌকিক মুক্তির লোভে ইহলোকের কৰ্ত্তব্যে অবহেলা অথবা কৰ্ত্তব্যবিমুখত । দ্বিতীয়, কায়স্থ-সমাজের উপবীত গ্রহণ করিয়া ক্ষত্রিয়ত্ব-গৰ্ব্বের মোহ এবং যথার্থ অবনতির প্রতিকার চেষ্টার সম্পর্কে উদাসীনতা । বিবাহ দিবার পরও আশ্রমের পক্ষ হইতে বিবাহিত মেয়েদের খোঁজখবর লওয়া হয় এবং কলিকাতার কাছাকাছি স্থানে যে-সমস্ত বিবাহিত মেয়ে আছে তাহাদিগকে অন্ত কোন বিবাহ উপস্থিত হইলে নিমন্ত্রণ করা হয় । পত্রিপক্ষ হইতে আশ্রমের ছেলেমেয়েদের ও নিমন্ত্রিতা মেয়েদের ifכן אתe& ১৩৪৪ ভোজ দেওয়া হয়। আশ্রমের ছেলেমেয়ের এইরূপ ক্রিয়াকলাপ উপলক্ষেই মাছ খাইবার সৌভাগ্য লাভ করে। কারণ প্রথমত: মাছ দিতে গেলে ব্যয়ে কুলায় না, দ্বিতীয়ত, অনেক জৈনধৰ্ম্মাবলম্বী মাড়োয়ারী ভদ্রলোক আশ্রমে চাদ দেন, র্তাহারা তাহাদের প্রদত্ত অর্থে মাছ কেনায় আপত্তি করেন। তবে বাহির হইতে যদি কোন ভদ্রলোক ছেলেমেয়েদের জন্য মাছ পঠাইয়া দেন তাহা হইলে আশ্রমের ছেলেমেয়েরা মাছ খাইতে পারে। আশ্রমে সিন্ধী বিবাহ প্রচলিত হইবার পর একটি নিয়ম করা হইয়াছে যে, বিদেশে বিবাহিত মেয়েরা কিরূপ অবস্থায় আছে, আশ্রমের এক জন কৰ্ম্মচারী মাঝে মাঝে গিয়া তাঙ্গার খোজ লইয়া আসিবেন । এই নিয়ম অনুসারে ১৯২৬ সালে সহকারী অধ্যক্ষ শ্রীরাধিকানাথ চৌধুরী যখন মধ্যপ্রদেশ ও সিন্ধু প্রদেশে যাত্র করেন তখন আশ্রমের একটি একচক্ষুষ্টীন বালিকা তাহাকে অনুনয় করিয়া বলে, “কা কাবাবু, সকলেরই বর জুটল, আমিই কি কেবল পড়ে থাকলাম ?" রাধিকাবাবু তাহাকে আশ্বাস দিয়া বলেন যে এইবার তাহারও একটি বর খুজিয়া আনিবেন । সিন্ধুদেশে গিয়া তিনি একটি অবিবাহিত যুবক পাইলেন, তাহারও এক চোখ কানা। তাহাকে কলিকাতায় আনিয়া ঐ মেয়েটির সহিত বিবাহ দিলেন । রাধিকাবাবু প্রথমে ১৯২৬ সালে, পরে আবার ১৯৩৪ সালে সিন্ধু প্রদেশে গিয়াছিলেন । তিনি অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় সিন্ধু প্রদেশের একটি বিশেষত্ব লক্ষ্য করিয়াছিলেন যে, অন্য প্রদেশে পাত্রের বাড়ী গেলে বাড়ীর লোকের তাহাকে বিশেষ করিয়া বারণ করিয়া দিত যে তাহদের বধু যে অনাথ-আশ্রিমের মেয়ে এবং তিনি যে অনাথ আশ্রমের কৰ্ম্মচারী, ইহা যেন প্রকাশ না পায়। প্রকাশ পাইলে তাহাদের মর্য্যাদা হানি কিন্তু তিনি যখন সিন্ধু প্রদেশে পাত্রের বাড়ী গিয়াছেন তখন যেমন আদর-অভ্যর্থন পাইয়াছেন, এরূপ আর কোন স্থানে পান নাই ; পাত্রের বাড়ীর লোকের অনাথ-আশ্রমেস মেয়ে বিবাহ করিয়া আনিয়াছে একথা গোপন তো করেই নাই, বরং সগৌরবে সকলের নিকটেই প্রচার করিয়াছে। অধ্যক্ষকে সঙ্গে লইয়। তাঁহারা পরিচিত ব্যক্তিগণের ও আত্মীয়স্বজনের W হইবে।