পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষণঢ় নাম স্মরণীয় । নবম ও দশম শতাব্দীতে বহু গ্রস্থের, বিশেষতঃ ভম্ব-গ্রন্থের অনুবাদে ইহাদের পরিচয় পাওয়া যায়। আরও অধিক পরিচয় না পাওয়ার কারণ বোধ হয় সে সময় ভারত ইষ্টতে উচ্চ শ্রেণীর পণ্ডিত পাওয়া সহজ ছিল । ইহাতে সন্দেহ নাই যে লাসায় রাজধানী স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে নেপালী বণিকেরা আসে । তিব্বতের ইতিহাসের প্রধান উৎস ধৰ্ম্মগ্রন্থ এবং ধৰ্ম্মগ্রস্থে বাণিজ্যব্যাপারের স্থান বড় নাই, সুতরাং ইহাদের বিশেষ উল্লেখ তাহাতে পাওয়া সম্ভব বা স্বাভাবিক নহে। রোমান ক্যাথলিক খ্ৰীষ্টানদিগের ক্যাপুচিন সম্প্রদায় ১৬৬১ হইতে ১৭৪৫ খ্ৰীষ্টাব্দ পর্য্যস্ত লাসায় প্রচারকার্য্যে ব্যস্ত ছিলেন । তাহাদের পাদরীদিগের বৃত্তাস্তৈ সেকালের নেপালী সওদাগরদিগের লাসায় থাকার কথা এবং কয়েক জন নেপালীর খ্ৰীষ্টান হওয়ার কথা লিখিত আছে। ১৯০৫ খ্ৰীষ্টাব্দে ব্রিটিশ “মিশন’ লাসায় ঐ পাদরীদিগের গীর্জার একটি ঘণ্টা হস্তগত করে । ঐ বৃত্তাস্ত লিখিত হওয়ার ৪৫ বৎসর পরে নেপালী সওদাগরদিগের উপর অত্যাচারের অভিযোগেই নেপালরাজ ১৭৯০ খ্ৰীষ্টাব্দে তিববত আক্রমণ করেন । আজকাল তিব্বতে ব্যবসায়ক্ষেত্রে নেপালী ব্যাপারীfদগের কয়েকটি বিশেষ অধিকার আছে । ঐ সকল অধিকার ১৭৯০ এবং ১৮৫৬ খ্ৰীষ্টাব্দে যে দুই বার নেপাল-তিব্বতে যুদ্ধ হয় তাহারই ফল । প্রথম যুদ্ধে নেপালী সৈন্যদল গিরিসঙ্কট জয় করিয়া লাস হইতে সাত দিনের পথ দূরে শিগচীতে ( টশীল্যম্পো) পৌছায়। এমন সময় অগণিত চীন-সেনা তাহাদের আক্রমণ করিয়া হটাইতে হটাইতে নেপালে কাঠমাণ্ডু পর্যান্ত লইয়া ধাওয়ায় নেপাল ও তিব্বত উভয়েই চীন-সম্রাটের অধীনতা স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়া শাস্তি স্থাপন করে । এই যুদ্ধ-বিজয়ের উপলক্ষে উৎকীর্ণ চীন-সম্রাটের অমুশাসন এখনও লাসায় পোতলার সম্মুখে বৰ্ত্তমান । নেপালের বর্তমান মহামস্থিবংশের সংস্থাপক মহারাজা জঙ্গ বাহাদুরের সময় ( ১৮৫৬ খ্ৰী: ) দ্বিতীয় যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। এই যুদ্ধকালে নেপালরাজের সেনদল সীমাস্থিত গিরিসঙ্কট পার হুইবার পূৰ্ব্বেই, চীন-সম্রাটের মধ্যবৰ্ত্তিতায় কয়েকটি সর্তে উভয় দেশের মধ্যে নিষিদ্ধ দেশে সওয়া বৎসর 88° শাস্তি স্থাপিত হয় । ইহার ফলে ভারত-সরকারকে প্রতিবর্ষে নেপালরাজসদনে দশ হাজার টাকা দিতে হয় । শাস্তিস্থাপনের সর্বমধ্যে এই চারিটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য — ( ১ ) বিপদকালে পারম্পরিক সাহায্যের অঙ্গীকার, ( ২ ) ব্যবসায়ক্ষেত্রে উভয় দেশের মধ্যে ব্যাপারীদিগের অবাধ বাণিজ্যের অধিকার, (৩) লাসায় নেপালী রাজদূত নিয়োগের এবং ( ৪ ) তিব্বতে নেপালী ন্যায়াধীশ দ্বার) নেপালী প্রজার বিচারের অধিকার । এইরূপে, ইয়োরোপীয়েরা চীনদেশে যে-অধিকার পরে লাভ করে এবং যাহা দূর করিতে সম্প্রতি চীন এত চেষ্টা করিতেছে, তিব্বতে নেপাল ঠিক সেইরূপ বহির্দেশীয় প্রভুত্ব ( extraterritorial rights) its of:gio দ্বিতীয় যুদ্ধের পূৰ্ব্বে লাসায় নেপালী ব্যবসায়ুিগণ দশটি দলে বিভক্ত ছিল । প্রত্যেক দলের এক-এক জন সর্দার নিৰ্ব্বাচিত হইত এবং প্রত্যেকটি সঙ্ঘের একটি করিয়া বৈঠকের স্থান নিদিষ্ট ছিল । এই দলপতিদিগের নাম “ঠাকুলী” ও বৈঠকের স্থানের নাম “পালা” । যদিও সংখ্যায় এখন সাতটি মাত্র সেই ঠাকৃলি আছে যদিও দুইয়েরই পুৰ্ব্ব মাহাত্ম্য বা অধিকার হ্রাস পাইয়াছে, তথাপি তাহাদের “পালা” এখনও বর্তমান । লাসার নেপালী বণিকেরা প্রায় সকলেই তান্ত্রিক বৌদ্ধ, সুতরাং এই সকল পালায় তাহাদের তান্ত্রিক পুজার স্থান আছে এবং সেই হেতু প্রায় প্রত্যেকটিতেই লাসায় লিখিত শত শত বৎসরের পুরাতন সংস্কৃত পুথি দশ বিশ খানি করিয়া আছে । এখন নেপাল-সরকারের পক্ষ হইতে লাসায় একজন রাজদূত (বকাল ), একজন ন্যায়াধীশ (উঠা ) এবং কিছু সৈন্য আছে । ইহা ছাড়া গ্যাধী, শীগচী, নেনযু ( কুর্তী ) ও কেরঙ তেওঁ নেপালী প্রজার বিচার ও তাঁহাদের অধিকার রক্ষার জন্য এক-এক জন উীঠা আছে । নেপালী বলিতে কেবলমাত্র নেপালী ব্যবসায়ী বুঝায় না, উপরও তাহাদের ভোটীয়-রক্ষিত-জাত সস্তানদিগকেও ধরা হয়। এইরূপে লাসায় খাটি নেপালীর সংখ্যা দুই শতের অধিক না হইলেও সেখানকার নেপালী প্রজার সংখ্যা কয়েক হাজার । নেপালের নিয়ম অনুসারে নেপালীর পুত্র জন্মাইলেই সে নেপালের প্রজ, যদিও এইরূপ ভোটীয় স্ত্রীর বা স্ত্রীর পুত্র এবং