পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাব্যবিচারে প্লেটো শ্ৰীমহেন্দ্রচন্দ্র রায় প্লেটোর নাম শিক্ষিত সমাজে স্বপরিচিত | তত্ত্বজ্ঞানী সক্রেটিসের শিষ্য প্লেটো জগতের এক জন শ্রেষ্ঠ চিম্ভাবীর । সক্রেটিসের চিন্তাধার এথেন্স নগরীতে ধে বিপ্লব আনয়ন করছিল তা তথনকার সমাজ সহ করতে পারে নি ; তাই তারা জ্ঞানের সাধক পবিত্ৰচেতা সক্রেটিসকে ধৰ্ম্মনাশ করবার অভিযোগে অভিযুক্ত ক’রে বিষপানের দণ্ড দান করেছিল । তাতে তার দেহের মৃত্যু হ’ল; কিন্তু তার আত্মা অমর হয়েই রইল। বিশ বছর বয়সে প্লেটো সক্রেটিসের শিষ্যত্ব গ্রহণ ক’রে প্রায় দশ বছর তার নিকট শিক্ষা গ্রহণ করেন । প্রায় চল্লিশ বছর বয়সে এথেন্স নগরীর একাডেমাস কুঞ্জে তিনি নিজের টোল প্রতিষ্ঠা করেন এবং জীবনের অবশিষ্ট চল্লিশ বৎসর কাল এইখানেই অধ্যাপনায় অতিবাহিত করেন । প্লেটো মূখ্যতঃ দার্শনিক কিন্তু তার রচনাবলীর সঙ্গে ধাদের পরিচয় আছে তারা একবাক্যে স্বীকার করেন যে প্লেটে সাহিত্যিক ও কবি ছিলেন । ‘কথোপকথন' এবং *সিম্পোসিয়াম’ গ্রন্থ দুখানির রচনারীতি, ভাষার সৌন্দর্ধ্য, ভাবপ্রকাশের আশ্চৰ্য্য সরস ভঙ্গী, এবং বাৰ্ত্তালাপরীতির উৎকর্ষ তাকে নিত্যকালের জন্তু সাহিত্যিকের আসনে প্রতিষ্ঠিত ক’রে রাখবে । প্লেটোর আলোচনার প্রধান লক্ষ্য ছিল সক্রেটিসের ভাব ও চিন্তাধারাকে এবং তার বিশিষ্ট চিন্তারীতিটিকে ভাষায় নিবদ্ধ করা এবং সেই ভাবধারাটিকে পরিপুষ্ট করা। সক্রেটিসের চিন্তার মূলস্বত্র ছিল তিনটি : প্রথম, মানবজীবনের চরম লক্ষ্য হচ্ছে দোষশৃষ্ণতা ( virtue ), একে পূর্ণতাও বলা যেতে পারে ; দ্বিতী, জ্ঞানই এই পূর্ণতার নামান্তর, অর্থাৎ যার জ্ঞান হয়েছে সে কখনও অসৎ বা অস্থায় কৰ্ম্ম করতে পারে না ; তৃতীয়, এই জ্ঞানপ্রাপ্তির ইন্দ্রিয় হচ্ছে বুদ্ধি (intellect ) । এই স্বত্র অনুসরণ করে প্লেটে "fরপরিক’, ‘রাজনীতিজ্ঞ এবং ‘শাসন-শাস্ত্র" নামক তিনখানি গ্রন্থে তার মতবাদটিকে পরিস্ফুট করে দেখিয়েছেন। সম্বন্ধে প্লেটোর রচনা সবই কথোপকথনের ভঙ্গীতে রচিত। এ-পদ্ধতি কিছু প্লেটোর উদ্ভাবিত নয় ; তার পূৰ্ব্বে এই কথোপকথনের ভঙ্গীতে এক রকমের হাস্যরসাত্মক কমেডি লেপার রীতি ছিল । প্লেটো এই পদ্ধতির সাহায্যে হাশুরসাত্মক চিত্র ন! একে, তার গুরু সক্রেটিসের ভাবধারাটিকে ব্যক্ত করবার চেষ্টা করেছেন । এই সব মতবাদের কতখানি সক্রেটিসের আর কতখানি তার নিজস্ব চিস্তার ফক্স ত৷ বলা কঠিন। সে ধাই হোক, প্লেটোর লেখায় যে-সব মত সক্রেটিসের নামে প্রকাশিত হয়েছে এখানে আমরা তার জন্ম প্লেটোকেই দায়ী ক'রে জামাদের আলোচনায় অগ্রসর হব । রিপরিক গ্রন্থে প্লেটে একটি আদর্শ রাষ্ট্রসমাজের পরিকল্পনাকে রূপ দিয়েছেন । তার অভিনব মতবাদ আলোচনা এক্ট প্রবন্ধের উদ্বেশু নয় ; রাষ্ট্রনীতির আলোচনার মূলে প্লেটোর একটি আদর্শ মতবাদ অাছে এবং প্লেটোকে তা নিয়ে আলোচনা করতে হয়েছে, কিন্তু তা নিয়ে জালোচনা জামাজের লক্ষ্য নয়। রিপক্লিক গ্রন্থে এবং অক্ষত্ৰ আর্ট অর্থাৎ চারুকলা ও কাব্যসাহিত্য সম্বন্ধে প্লেটো তার মতামত প্রকাশ করেছেন ; এখানে তার পরিচয় দেওধাই এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য । প্লেটোর কাব্যসাহিত্য সম্বন্ধে মতামতের যুক্তিগত ভিত্তি বুঝতে হ'লে তার জীবন-দর্শনের সঙ্গে পরিচিত হওয়া প্রয়োজন । সেই জঙ্ক এখানে তার একটি প্রসিদ্ধ জার্শনিক মতবাদের সামান্ত বিবৃতি আবগুক | রিপক্লিকের সপ্তম অধ্যায়ে তিনি এই মতবাদটিকে একটি স্বন্দর রূপকের সাহায্যে বোঝাবার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন যে, ইন্দ্রিয় গ্রাহ যে-সব বস্তুকে আমরা সত্য ব'লে জানি ও মনে করি সে-সব বস্তু বস্তুত: সত্য নয়, সত্য বস্তুর খও অল্পকৃতি মাত্র। একটা দৃষ্টান্ড দিলেই কথাটি স্পষ্ট হবে। রাম, স্বাম, হরি এরা সকলেই মানুষ ; এদের দেখেই মাজুৰ