পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఢ రిఆ9 ৰিমলা মুখ নীচু করিয়াছিল। মুখ তুলিয়া হাসিয়া ফেলিল । “হাসলে কেন ?" “বুঝতে পারলেন না ? সত্যি ?" “sil f” “আমি এখানে রোজ যদি আসি, হয়ত আপনাকে অনেক অপ্রীতিকর কথা শুনতে হবে। দরকার কি ?” শেষের দিকে তাহার কণ্ঠস্বর যেন অভিমানে ছল ছল - করিয়া উঠিল। আর বিশেষ কিছু না বলিয়া ক্ষুদ্র একটি নমস্কার করিয়া সে দ্রুতপদে চলিয়া গেল । ve বিকালবেলায় পুকুরে গা ধুইতে গিয়া লীলা একাকী একটি ছায়াচ্ছন্ন বনপথ দিয়া বিমলাদের বাড়ীতে গিয়া উঠিল। বিমলার মা দাওয়ায় বসিয় ছেড়া কাপড় সেলাই করিতেছিলেন। বিমলা ছোট একটি নিড়ানি হাতে উঠানের শাকের ক্ষেত এবং বেগুনের চারাগুলির তত্ত্বাবধান করিতেছিল। লীলাকে দেখিয়া সে হাতের কাজ রাথিয়া স্নিগ্ধ হাস্যে একখানি জীর্ণ আসন পাতিয়া দিল । তার পর আবার আপন কাজে প্রবৃত্ত হইল। বিমলার মা মৃদুস্বরে তাহার সহিত সাংসারিক সুখদু:খের নানাবিধ গল্প স্বয় করিলেন । লীলা দেখিয়া অবাক হইল, র্তাহার ব্যবহার এবং কথাবাৰ্ত্ত। কি স্বন্দর সহজ এবং স্বচ্ছ । এক ধনীর গৃহিণী দরিদ্রের কুটীরে আসিয়াছেন বেড়াইতে ; তবু না আছে কোন লোক-দেখানে হৈচৈ, না আছে কোন বুখা লজ্জ বা সঙ্কোচের ভান । বিমলার মা নিজের শৈশব জীবনের কথা গল্প কfরতেছিলেন । র্তার বাবা ছিলেন এক জন বিখ্যাত অধ্যাপক । ছেলে এবং মেয়েতে কখনও তফাৎ করেন নাই । তাদের দুই বোনকে যথাসাধ্য ধত্বে শিক্ষা দিয়াছিলেন । হঠাৎ তিনি মারা গেলেন। তবুও বিমলার মামের যখন বিবাহ হয়, তখন তাহাদের শ্বশুরবাড়ীর অবস্থা এত খারাপ ছিল না। ওঁর স্বামী তখন কলিকাতার কলেজে বি-এ পড়েন । তার পর ভাগ্যের আবর্তনে সবই বদলাইয়া গেল। সরিকী মামলায় অত্যন্ত জেদী প্রকৃতির খণ্ডর বিষয়-সম্পত্তির শ্লেষণসী ১Ne৪৪ অধিকাংশই প্রায় উড়াইয়া ফেলিলেন। স্বামীর নিউমোনিয়া ধরিল শক্ত করিয়া। যদিবা অনেক কষ্টে প্রাণটা বাচিল, সেই হইতে চিরকুঞ্জ হইয়া আছেন। লেখাপড়ার কথা ওঠায় কহিলেন, “দেখুন, ছেলেমেয়ের স্থখদু:খ সে তো তাদের ভাগ্য। বাপ-মা হাজার চেষ্টা করলেও ভাগ্য বদলে দিতে পারে না। আমার জীবনেই তার প্রমাণ দেখলেন । কিন্তু ছেলেমেয়েকে একটা বস্তু মা-বাবা দান ক'রে যেতে পারেন—সেটা শিক্ষা। জীবনে যেমন ভাবে যে অবস্থাতেই থাক, যথার্থ শিক্ষিত হ'লে অহুন্দরতাকে সে প্রাণপণে পরিহার ক'রে চলবেই । বিমলাকে ম্যাটিক আই-এ পাস না করাতে পারি, এইটুকু শিক্ষাই আমি যথাসাধ্য দিতে চেষ্টা করেছি।" সন্ধ্য হইয়া আসিয়াছে। বিমলাজের ছোট তুলসীপ্রাঙ্গণে একটি মাটির প্রদীপ মৃদু জলিতেছে । বিমলার মা বলিলেন, “বিমলা যাও তোমার মাসীমাকে পৌছে দিয়ে এস। সন্ধে হয়ে গেল, অচেনা পথ । না-হয় মন্দির অবধি পৌঁছে দিয়ে এস। সেখামে এতক্ষণ হয়ত আরতি শুরু হয়ে গেছে । আমি আজ জার আরতি দেখতে যাব না। ওঁর শরীরটা ভাল নেই ।” প্রখম শুক্লপক্ষের মৃদুস্কট জ্যোৎস্না আঁকাবঁকা রাস্ত ও তেঁতুলের ঝাড়, বাশঝাড়ের উপর পড়িয়া কি এক রকম দেখাইতেছিল। নির্জন রাস্তায় চলিতে চলিতে লীলার মনটি তৃপ্তিতে ভরিয়া উঠিল । এখানে আসার পর হইতে এখন এমন এক বাড়ীর সহিত আলাপ হইল যেখানে আসাযাওয়া করিলে যথার্থ তৃপ্তি ও আনন্দ পাইবে । বিমলার মায়ের মুখের কথাটি তাছার বারংবার মনে পড়িতে লাগিল, মা বাপ একটি বস্তু সস্তানকে দান করিতে পারেম, সে এমন শিক্ষা যাহা জীবনে সকল অবস্থাতেই সৌন্দৰ্য্যকে স্বীকার করে । কোন প্রকারেই যেন অমৃদরতাকে মানিয়া না লয়। বিমলাদের বাড়ীর সহিত তুলনা করিতেই এ-কথাটার অর্থ পরিস্ফুট হইয় উঠে। সেদিন পাশের বাড়ীতে লেজখুড়ীমাদের ওখানে বেড়াইতে গিয়াছিল। তখন বাড়ীতে একট। ফলস্থূল বাধিয়া গিয়াছে । সেজখুড়ীমা একটা জাট কাত শুদ্ধ কাপড় পরিখা রণরঞ্জিী মূৰ্ত্তিতে কৃষ্ঠাতলায় চর্কিবাণীর মত ঘুরিতেছিলেন। র্তাহার