পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سيbچخd দেহের উপর গুন্তু ক'রে বললে, “আমাকে ক্ষমা কর পাৰ্ব্বতী—” পাৰ্ব্বতী তার মুখের উপর হাত চাপ দিয়ে, নিজের উপর শাস্ত দৃঢ় নির্ভরে, শচীন্দ্রের অজ্ঞাত ফুথের গভীর করুণায়, নিরভিমান নিঃসঙ্কোচে ধীরে ধীরে নিয়ে গিয়ে তাকে আরাম-চেয়ারে শুইয়ে দিলে । তার পর একটা মোড়া এনে পাশে বসে পরিপূর্ণ স্নেহে তার পীড়িত উত্তপ্ত ললাটে তার বিপৰ্য্যস্ত কেশের মধ্যে নিজের কোমল শীতল সান্থনায় স্নিগ্ধ অঙ্গুলি পরিবেশন করতে লাগল। অনেক ক্ষণ এমনি নিশ্চেষ্ট নিৰ্ব্বাক হয়ে পড়ে থেকে পাৰ্ব্বতীর স্নেহত্বপ্তের সেবায়ু কতকটা সুস্থ বোধ করে, তার বক্তব্যের ভূমিকাস্বরূপ শচীন্দ্র ধীরে ধীরে পাৰ্ব্বতীর হাতটা নিজের করতলের মধ্যে টেনে নিলে । সমস্ত রাস্তা সে পদব্রজে অতিক্রম ক’রে এসেছিল । তৃষ্ণায় তার কণ্ঠতল যে শুষ্ক হয়ে গিয়েছে এতক্ষণ সে কথা মনে ছিল না। পাৰ্ব্বতীর স্নেহের ছায়ায় নিজের উৎকণ্ঠিত চিত্ত শাম্ভ হতেই ক্ষুধাতৃষ্ণার স্বাভাবিক তাড়ন। তার মধ্যে জেগে উঠল । তবু এমন অসময়ে অকস্মাং আবির্ভাব এবং তার পর স্থল ক্ষুংপিপাসার আবেদন এই দুইয়ের লঙ্গায় স্মিত হাস্তে পাৰ্ব্বতীর দিকে চেয়ে বললে, “রো রে যে কষ্ট হচ্ছিল, পথের মধ্যে তা খেয়াল ছিল না। একটু ঠাণ্ড জল—” পাৰ্ব্বতী সস্ত্রস্ত বিশ্বঘ্নে বললে, “ওকি ! আপনি এই পথ হেঁটে এসেছেন এই রোদে ! ইস, করেছেন কি ? আর এতক্ষণ বলেন নি ? এখন একটা অসুখবিসুখ না করলেই বচি। বঙ্কন, জল আনছি। স্নান করবেন ত ? না নকিছু সঙ্কোচ করবেন না। আমি সব ঠিক ক'রে দিচ্ছি।” ব’লে সে দ্রুতপদে চলে গেল এবং অল্পক্ষণ পরেই একটা তেপায়ার উপর সাজিয়ে মেয়েদের তৈরি কিঞ্চিং মিষ্টান্ন এবং জল নিয়ে এল । হেসে বললে, “দেরি ত সইবে না, নইলে ষ্টোভ জেলে দুখান লুচি ভেজে দিতে পারতাম। জার অল্প একটু অপেক্ষা করুন " বলে ফিরে গিয়ে এক বালতি জল, একটা মগ, তোয়ালে, সাবান নিয়ে এসে বললে, “উ, কি রোটাই না খেতে হয়েছে ! নিন, একটু গতমুখটা ধুয়ে নিন। চলুন।" বলে শচীন্দ্রের উদ্যত আপত্তির অপেক্ষা লা রেখে, তার হাত ধরে নিয়ে কাছে প্রবাসী SN?88 একটা মোড়ার উপর বসাল। তার পর তোয়ালেট। তার গলায় জড়িয়ে দিয়ে, মাথাটা নিজের হাতে সম্বত্বে ধুইয়ে দিতে লাগল। শচীন্দ্রের আবেশজড়িত মৃদু আপত্তিতে কোন ফল হ’ল না । হাতপা ধোয়া শেষ হ’লে সে পাৰ্ব্বতীর দিকে চেয়ে স্নেহমিশ্রিত পরিহাসের সুরে বললে, “নাসের টুপি পরেই জন্মেছিলে বোধ হয়। আঃ, কি আরাম যে হ’ল । সমস্ত মাথাটায় যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল ।” পাৰ্ব্বতীর স্নেহে তার হৃদয় পূর্ণ হয়ে উঠেছিল । গৃহ থেকে কমলাপুরীর পথে যখন সে নিস্ক্রাস্ত, তখন তার মনে সংশয়, সঙ্কোচ এবং পাৰ্ব্বতীর প্রতি নিষ্ঠুরতার অপরাধজনিত ভয়ের অস্ত ছিল না । কিন্তু পাৰ্ব্বতীয় চিরজাগ্ৰত প্রীডির নিদর্শনে তার হৃদয়ু উদ্বেল হয়ে উঠেছিল । নিশ্চিস্ত নির্ভরেব এই পরম রমণীয় আশ্রয়টুকু যেন সে নূতন ক’রে আবিষ্কার করলে । তুপ্তিদানের পরিতোষে পাৰ্ব্বভীর আলন আনন্দে ব্রাড়ায় ও স্বখাবেশে রঞ্জিত হয়েছে । পাৰ্ব্বতীর সেই স্নেহশঙ্কা-লজ্জাবিজড়িত মুথের দিকে চেয়ে চেয়ে শচীন্দ্র ভার এত দিনের তার বঞ্চিত ক্ষুধাকে আর সংযত রাখতে পারলে মা । হৃদয়ের অস্তস্তলে পাৰ্ব্বতীকে আজ সে পেয়েছে অনন্ত রূপে । ভার হৃদয় দিতে চায় অস্তরে বাহিরে সেই পরম অনগুভাব অভিব্যক্তি । ভ্যন্ত সমাদরে পাৰ্ব্বতীর মুখটা নিয়ে, সম্পূর্ণ দ্বিধাশূঙ্ক সহজ প্রেমের আবেগে সে তার মুখচুম্বন ক'রে তাকে নিবিড় আলিঙ্গনে তার বুকের মধ্যে টেনে নিলে । আজ পাৰ্ব্বতী কিছুমাত্র আপত্তি জানাঙ্গ না । ভার নিজের মনে বাসনার বাধা লেশমাত্র ছিল না ; তাষ্ট কোনরূপ বাধা স্বজন ক'রে, সে ঐ একান্ত সমপিত সহজ উৎসগের দানকে অপমান করলে না । ঐ যে পুরুষটি আঞ্জ তার সমস্ত পৌরুষের অভিমান বিসর্জন দিয়ে পীড়িত তাপিত চিত্ত নিয়ে একান্ত নির্তরে একান্তরূপে তার কাছে এসেছে তার সহজ মূক্ত প্রাণের স্বাভাবিক প্রেরণায়—এই কথাটাই তার স্নেহকরুণ চিত্তকে মথিত করতে লাগল। আজ সে কমলার প্রেমে দ্বিধাকুষ্টিত মন নিয়ে তার কাছে আসে নি। তার নিঃসংশয় অকুণ্ঠ আত্মবিসর্জনের সেই সহজ প্রকাশের উপলব্ধি-মুহূৰ্ত্ত পাৰ্ব্বতীর দুই করতলের মধ্যে