পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3へ&g প্রবাসী ఫిలిః8 একসঙ্গে চমকে উঠল ; বেয়ার এল ছুটে । সাহেবের হবে। পথে গাড়ীঘোড়ার বাহুল্য নেই। উড়ে চলল এ-রকম ডাকবার কায়দায়ু বেচারা অভ্যস্ত ছিল না। কল্যাণকুমারের গাড়ী ; মন তার উড়ে গেছে আরও আগে । টুং-টাং ক’রে কলিং-বেল বেজে উঠত আর সেভ দু-চার মিনিট পরে গিয়ে উপস্থিত হ’ত ; কিন্তু আজ এ একেবারে অপ্রত্যাশিত। চাকরি আর রইল না বোধ হয় । ‘হুজুর ' পাম্বা আউর জোরসে। ভবেশচন্দ্ৰ আঙুল দিয়ে মাথার ওপরে চলম্ভ পাখাটা দেখিয়ে দিলে । বেয়ার রেগুলেটর শেষ পৰ্য্যস্ত ঘুরিয়ে দিলে। 'আঃ', ভবেশচন্দ্র গলার নেকটাইটা ঈষৎ আলগা ক’রে দিয়ে বললে, “ভাল লাগে না ছাই, দিনরাত খালি কাজ ! শুধু টাকা আর টাকা! আশ্চৰ্য্য! কি ক’রে মান্বষ এত টাকা দিয়ে— ? সেন এণ্ড লাহিড়ী কোম্পানীর সিনিয়র পাটনার মি: ভবেশচন্দ্র সেন হাতের এক ঝটকায় টেবিলের সমস্ত কাগজপত্র মাটিতে ফেলে দিয়ে উঠে দাড়াল । দেখা ষাকৃ আজকের সংবাদপত্রে কি আছে। পাশেই আরামকেদারায় চিৎ হয়ে গুয়ে ভবেশচন্দ্র পত্রিকা খুলে পড়তে লাগল, তৃতীয় পৃষ্ঠায় এক জায়গায় দেখল জষ্টিস্ সত্ব কে. সি. গাঙ্গুলীর কস্ত কুমারী অশোক গাঙ্গুলী কলকাতা ছেড়ে পল্লীগ্রামে চলে যাচ্ছে । ভবেশচন্দ্র পত্রিকাথান৷ ফেলে দিলে ছুড়ে। উঠে দাড়াল চেয়ার ছেড়ে । ট্রাউজারের পকেট থেকে সোনার সিগারেট-কেস বার ক’রে আপন মনে ভাবলে, কি হ’বে আর টাকা রোজগার করে, কে আছে তার ? কার জন্তে সে অস্বরের মত দিনরাত পরিশ্রম করে মরছে ? আর শহরের এই ধুলে, ধোয়া আর মোটরের হর্ণ। তার মোটরখানা কালই বেচে দেবে সে । পাড়াগার মেঠো রাস্তা দিয়ে গরুর গাড়ী চড়ে যাওয়ার মধ্যে অনেক মাধুৰ্য্য, অনেক সত্যিকারের থিল ! পায়ের কাছে কাগজের ঝুড়িতে একটা লাথি মেরে ভবেশচন্দ্র বাইরে বেরিয়ে এল । পরদিনের কাহিনী। উত্তর কলকাতার কোন এক রাস্তা থেকে কল্যাণকুমারের টু-সীটারখানা বড় রাস্তায় এসে পড়ল। সকাল আটট চাদরের প্রাস্ত তার উড়ছে চঞ্চল বাতাসে । জষ্টিস্ কে, সে গাঙ্গুলীর বাগানের পুষ্পরাশি আহরিত হচ্ছে ; প্রাঙ্গণ ত্যাগ ক'রে তারা যাবে প্রাচীর-অভ্যস্তরে । “ঐ বড় গোলাপটা আমায় দাও।’ গাড়ী থামিয়ে কল্যাণকুমার মালীকে বললে । স্বদর্শন এবং স্ববেশ তরুণের আদেশ পালন ক'রে বাগানপরিচারক কুতাৰ্থ হ’ল । কল্যাণকুমার প্রাসাদোপম অট্টালিকার সিড়ি অতিক্রম ক'রে উপরে উঠে এল । অশোকার সন্ধান পেতে তার দেরি হ'ল না। পরিষ্কার এক মেয়ে, পরিচ্ছন্ন—পালিশকরা নিখুঁত জীবন্ত এক পুতুল। প্রথম দৃষ্টিতে শুস্তিত এবং বিলম্বে বিস্মিত হবার কথা । ওর দেহকে কমনীয় এবং রমণীয় ক'রে তোলবার জন্তে যে পরিচ্ছদ এবং আভরণ তার উপযোগী, কেবলমাত্র সে-উপকরণ স্বারাই অশোক উন্মেষ করেছে নিজেকে ! অভাব নেই, বাহুল্যও নেই । ওদের সাক্ষাৎ হ’ল । “আমি যেন কি ভাবছিলাম, তুমি আসবার আগে বুঝতে পারি নি। অশোক বললে, “এমন সময়ে তুমি ত আস না কখনও ' ‘ভাবছিলে তুমি, কল্যাণকুমার বললে, "এক এক পাড়াগাঁ গিয়ে দিন কাটাবে কি ক’রে । আমি এমন সময়ে কখনও আসি নি বটে, কিন্তু ভাবলাম এ সময়েই তোমাক একটু নিরিবিলি পাওয়া যাবে। আপাততঃ ফুলট নাও, তোমারই জন্যে ? অশোকা হাত বাড়িয়ে ফুলটা গ্রহণ করল, এক মুহূৰ্ত্ত তুলে ধরল মাকের কাছে ; তার পর অঙ্কমনস্কের মত ঠোট দিয়ে মৃদু স্পর্শ করল। ‘তোমার সঙ্গে আরও কথা আছে!’ কল্যাণকুমার বললে । ‘বল না ।” অশোক ঈষৎ গ্রীবাভদী করল। ‘তোমার সম্বন্ধে সংবাদট। কাগজে দেখেছি ; আমিও হঠাৎ আবিষ্কার করে ফেলেছি যে আমারও মনটা শাছি চায়, আর চায় নির্জনতা ! আমাকে তোমার সঙ্গে নাও অশোকা ? কয়েক মুহূর্তের ছেদ । আমার মন তোমার