পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○S28 সমিতির বিধানকত হবার মতো জোর আছে। এই ক্ষেত্রে যুক্তির জোরের চেয়ে সেই জোরেরই জোর বেশি এ কথা আমরা মানতে বাধ্য । রেফের পর ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব বর্জন সম্বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় যে নিয়ম নিধারণ করে দিয়েছেন তা নিয়ে বেশি তর্ক করবার দরকার আছে বলে মনে করি নে। যারা নিয়মে স্বাক্ষর দিয়েছেন তাদের মধ্যে অনেক বড়ো বড়ো পণ্ডিতের নাম দেখেছি। আপনি যদি মনে করেন তারা অন্যায় করেছেন তবুও তাদের পক্ষভুক্ত হওয়াই আমি নিরাপদ মনে করি । অন্তত তৎসম শব্দের ব্যবহারে তাদের নেতৃত্ব স্বীকার করতে কোনো ভয় নেই, লজ্জাও নেই। শুনেছি ‘হুজন’ শব্দটা ব্যাকরণের বিধি অতিক্রম করেছে, কিন্তু যখন বিদ্যাসাগরের মতো পণ্ডিত কথাট। চালিয়েছেন তখন দায় তারই, আমার কোনো ভাবনা নেই। অনেক পণ্ডিত ‘ইতিমধ্যে’ কথাটা চালিয়ে এসেছেন, ‘ইতোমধ্যে’ কথাটার ওকালতি উপলক্ষ্যে আইনের বই ঘাটবার প্রয়োজন দেখি নে—অর্থাৎ এখন ঐ ‘ইতিমধ্যে’ শব্দটার ব্যবহার সম্বন্ধে দায়িত্ব-বিচারের দিন আমাদের হাত থেকে চলে গেছে । বিশ্ববিদ্যালয়-বানান-সমিতিতে তৎসম শব সম্বন্ধে ধারা বিধান দেবার দায়িত্ব নিয়েছেন, এ নিয়ে দ্বিধা করবার দায়িত্বভার থেকে তারা আমাদের মুক্তি দিয়েছেন। এখন থেকে কাৰ্ত্তিক, কর্তা প্রভৃতি দুই ত-ওয়ালা শব্দ থেকে এক ত আমরা নিশ্চিস্ত মনে ছেদন করে নিতে পারি, সেটা সাংঘাতিক হবে না । হাতের লেখায় অভ্যাস ছাড়তে পারব বলে প্রতিশ্রুতি দিতে পারব না, কিন্তু ছাপার অক্ষরে পারব। এখন থেকে ভট্টাচাৰ্য্য শব্দের থেকে য-ফলা লোপ করতে নিবিকার চিত্তে নিমম হতে পারব, কারণ নব্য বানানবিধাতাদের মধ্যে তিন জন বড়ো বড়ো ভট্টাচাৰ্য্য-বংশীয় তাদের উপাধিকে য-ফলা বঞ্চিত করতে সম্মতি দিয়েছেন। এখন থেকে আধ্য এবং অনার্ষ্য উভয়েই অপক্ষপাতে য-ফলা মোচন করতে পারবেন, যেমন আধুনিক মাধু ও চীন উভয়েরই বেণী গেছে কাটা । তৎসম শব্দ সম্বন্ধে আমি নমস্তদের নমস্কার জামাব। কিন্তু তদভব শবে অপণ্ডিতের অধিকারই প্রবল, অতএব এখানে আমার মতো মানুষেরও কথা চলবে—কিছু কিছু প্রবাসী SNご88 চালাচ্ছিও। যেখানে মতে মিলছি নে সেখানে আমি নিরক্ষরদের সাক্ষ্য মানছি। কেন না অক্ষরকৃত অসত্যভাষণের দ্বারা তাদের মন মোহগ্ৰস্ত হয় নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বানানসমিতির চেয়েও তাদের কথার প্রামাণিকতা যে কম তা আমি বলব না—এমন কি হয়তো—থাক আর কাজ নেই। তাহোক, উপায় নেই। আমি হয়তো একগুয়েমি করে কোনো কোনো বানানে নিজের মত চালাবো । অবশেষে হার মানতে হবে তাও জানি। কেন না শুধু যে তারা আইন স্মৃষ্টি করেন তা নয়, আইন মানাবার উপায়ও তাদের হাতে আছে । সেটা থাকাই ভালো, নইলে কথা বেড়ে যায়, কাজ বন্ধ থাকে। অতএব তাদেরই জয় হোক, আমি তো কেবল তর্কই করতে পারব, তারা পারবেন ব্যবস্থা করতে। মুদ্রাযন্ত্র-বিভাগে ও শিক্ষ-বিভাগে শাস্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে সেই ব্যবস্থার দৃঢ়ত নিতাস্ত আবহুক । আমি এখানে স্বপ্রদেশ থেকে দূরে এসে বিশ্রামচচার জন্য অত্যন্ত ব্যস্ত আছি । কিন্তু প্রারব্ধ কমের ফল সর্বত্রই অমুসরণ করে । আমার যেটুকু কৈফিয়ং দেবার সেট না দিয়ে নিস্কৃতি নেই। কিন্তু এই যে দুঃখ স্বীকার করলুম এর ফল কেবল একল| আপনাকে নিবেদন করলে বিশ্রামের অপব্যয়ট অনেক পরিমাণেই অনর্থক হবে। অতএব এই পত্ৰখানি আমি প্রকাশ করতে পাঠালুম। কেন না এই বানান-বিধি ব্যাপারে র্যারা অসন্তুষ্ট তারা আমাকে কতটা পরিমাণে দায়ী করতে পারেন সে তাদের জানা আবশ্বক । আমি পণ্ডিত নই, অতএব বিধানে যেখানে পাণ্ডিত্য আছে সেখানে নম্রভাবেই অমুসরণের পথ গ্রহণ করব, যে অংশটা পাণ্ডিত্যবজিত দেশে পড়ে সে অংশে যতটা শক্তি বাচালত করব কিন্তু নিশ্চিত জানব, যে একদা “অন্তে বাক্য কবে কিন্তু তুমি রবে নিরুত্তর ” আলমোড়, ১২৬৩৭ ò বিনয়সম্ভাষণপূর্বক নিবেদন, আলোচ্য বিষয়টি গুরু করবার পূবে অপ্রাসঙ্গিক ছোটাে কথাটিকে সেরে নেওয়া যাক। আপনি লক্ষ্য করেছেন যে আপনার পত্রে আমি "দায়ী' শৰে হ্রস্ব ইকার প্রয়োগ করেছি।