পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

סר-6 উড়িষ্যার মধ্যযুগের আভ্যন্তরীণ ইতিহাস কিন্তু এই উক্তির প্রতিবাদ করিয়া থাকে। শ্রীচৈতন্যের সমসাময়িক বিবরণ ও উড়িষ্যার প্রাচীন ইতিবৃত্ত ওড়িয়া জাতির অধঃপতনের অপর কারণ নির্দেশ করে । আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, রাধালবাবুর ন্যায় ঐতিহাসিক পণ্ডিতের এদিকে আদেী দৃষ্টি পড়ে নাই। সেই ঐতিহাসিক প্রসঙ্গের কিঞ্চিং অবতারণা করিয়া আমরা দেখাইতে চেষ্টা করিব যে রাখালবাবুর এই উক্তি কতটা ভ্রাস্তিপুর্ণ, নিরর্থক ও অপ্রামাণিক । গৌড়ের পাঠান রাজগণ সুযোগ ও সুবিধা পাইলেই উড়িষ্য রাজ্য আক্রমণ করিতেন এবং উড়িষ্যার নরপতিবৃন্দও সেইরূপ গৌড়রাজ্য আক্রমণ করিতে দ্বিধা করিতেন না । এইরূপে যুদ্ধের জয় ও পরাজয় অনুসারে রাজ্যের সীমা নির্দিষ্ট হইত। ধর্থন পাঠানের পরস্পর বিবাদে মত্ত থাঞ্চিত তখন উড়িষ্যার রাজাদের সুবিধা ছিল। বখতিয়ারের বঙ্গবিজয়ের পর গৌড়রাজ্য ক্রমশ: দিল্লীর বাদশাহদের করতলগত হয় এবং তাহাদের অধীনে পাঠান শাসনকর্তা গৌড়রাজ্য শাসন করিতেন। কিন্তু এই ভাবে বেশী দিন চলিল না—তুগরাল খাঁ গৌড়রাজ্যের স্বাধীনতা ঘোষণা করিলেন কিন্তু বুলবন আসিয়া তাহ অচিরে দমন করিয়া গেলেন । এই ভাবে স্থানে স্থানে বিদ্রোহ হইতে লাগিল। অবশেষে ইলিয়াস শাহ, আপনাকে গৌড় ংলার স্বাধীন নরপতি বলিয়া ঘোষণা করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন এবং বহু যুদ্ধের পর দিল্লীর বাদশাহ তাহাকে সেই ভাবে স্বীকার করিতে বাধ্য হইলেন। এই ভাবে ইংরেজী ত্রয়োদশ, চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতাব্দী সুদীর্ঘ যুদ্ধ, হত্য, আত্মকলহ ও ষড়যন্ত্রের ইতিহাস । উড়িষ্যার গঙ্গা-বংশীয় রাজার এই অরাজকতার সময় গৌড়রাজ্যের অভ্যস্তরে প্রবেশ করিয়া ভাগীরথীতীর পর্ষ্যম্ভ রাজ্য বিষ্কৃত করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। ছত্রভোগ হইতে নৌকাযোগে গঙ্গার অপর কুলে শ্ৰচৈতগু উৎকল দেশে পৌছিলেন-ইহা বৃন্দাবনদাস ঐশ্রচৈতন্যভাগবতে বর্ণনা করিয়াছেন । দুই রাজ্যের মধ্যে ভাগীরথী প্রবাহিত, কিন্তু তাহার বক্ষ যাত্রীদের পক্ষে নিরাপদ ছিল না। জলাজার উৎপাত যথেষ্ট ছিল। ঐঐচৈতন্যভাগবতের অস্ত্যখণ্ডে প্রবাসী S\లి8g দ্বিতীয় অধ্যায়ে আছে— "প্রভুর জাঙ্গার Šमूकून महोचब्र । कौर्डन कtद्रन यडू (नौकांश विजह ॥ আৰু নাই বোলে "হইল সংশয় । বুঝিলাও আজি জার প্রাণ নাছি রঙ্গ । কুল উঠিলে সে বাঘে লইয়া পলায় । জলে পড়িলে সে বোল কুষ্ঠীয়েই খায় । নিরন্তুর এ পানীতে ডাকাইত ফিরে । পাইলেই ধনপ্রাণ দুই নাশ করে । এতেক বাবত উড়িয়ায় দেশ পাই । তাকত নীরব হও সকল গোসাঞি ॥” ইহা ছাড়া— “ছেনমতে মহাপ্ৰভু সঙ্কীৰ্ত্তন রসে । প্রবেশ হুইলা আলি খ্ৰীষ্ট্ৰংকলদেশে । উবরিল গিয়া নেীক প্রী প্রয়াগ ঘাটে । নৌকা হইতে মহাপ্রভু উঠিলেন তটে । প্রবেশ করিলা গৌরচন্দ্র ওড় দেশে । ইহা যে শুনয়ে সে ভাসয়ে প্রেমরসে ॥* কিন্তু এই ভাবে গৌড়ে উড়িষ্যার রাজ্য থাকিল না। কারণ পাঠানরাজ হুসেন শাহ হৃতরাজ্য উদ্ধার করিতে দৃঢ়লংকল্প করিলেন । এই ভাবে উড়িষ্যা ও গৌড়রাজ্যের মধ্যে ক্রমাগত শতাব্দীর পর শতাব্দী যুদ্ধ চলিয়াছিল— ইহাও বলক্ষয়ের ও জাতির দুৰ্ব্বলতার একট। কারণ। Domingo Pae৪—যিনি সম্ভবতঃ তাহার বিবরণ ১৫২৯ খ্ৰীষ্টাবো লিপিবদ্ধ করিয়াছেন—বলিয়াছেন যে, “And this kingdom of Orya of which I have Rpoken above is said to be inuch larger...since it marches with all Bengal and is at war with her.” প্রতাপরুদ্রকে শুধু গৌড়রাজ্যের সহিত যুদ্ধ করিতে হয় নাই। এক দিকে গৌড়ের পাঠানের, অপর দিকে বিজয়নগর এবং অন্ত দিকে দক্ষিণের বিজাপুর আলিশাহী, নিজামশাহী ও কুতবশাহী রাজ্যের মুসলমান আক্রমণ প্রতাপরুত্রের পূৰ্ব্বে রাজষ্ঠের যখন বিজয়নগর সাম্রাজ্যের কতকাংশ জয় করিয়াছিলেন, তখন দক্ষিণী মুসলমানদের শাস্ত করিতে কিছু কর দিতে হইত। আদিলশাহী যুদ্ধৰ্ব মুসলমানের সময়ে সময়ে অধিকতর অর্থাদি সংগ্রহের জন্তু যুদ্ধ করিত এবং মহারাজা প্রতাপরুদ্রকে সিংহাসনে অধিরোহণের কিছু পরে বুদ্ধযাত্র করিতে হইয়াছিল । মাদলাপঞ্জীতে আছে যে, এ রাজাঙ্ক ৮ অঙ্কে সেতুবন্ধ কটকাই কলে । গড় বিদ্যানগর ভাঙ্গি ঘউয়াই দেলে ।