পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

بحوا في وهS প্রৰণসী ১৩৪৪ পরিত্রাণেরই উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন। কিছুক্ষণ পরে মুহুরী আসিয়া একখানা রায়ের নথি সম্মুখের টেবিলটার উপর নামাইয়া দিয়া বলিল, “রায়ের নকলট কাল চেয়েছিলেন। কিন্তু বাজে খরচ কিছু বেশী হয়ে গেল । কুটুবাবু সজাগ হইয়া উঠিয়া বসিলেন। একটা দায়রা মোকদ্দমার রায়ের নকল। মোকদ্দমাটায় ফুটুবাবুর অপ্রত্যাশিত ভাবে পরাজয় ঘটিয়াছে। তাহার কয়েকটি স্বাক্ষ যুক্তি বিচারক অন্যায়ভাবে অগ্রাহ করিয়াছেন। ভ্র কুঞ্চিত করিয়া তিনি রায়খানা তুলিয়া লইলেন। মুহুরীটি চলিয়া গেল। রায়খানা পড়িতে পড়িতে কুটুবাবুর মুখ চোখ রাঙা হইয়া উঠিল । বিচারকের মস্তব্য এবং বিচারপদ্ধতির বক্রগতি দেখিয়া ঠাহার ক্রোধের আর পরিসীম। রহিল না। দারুণ উত্তেজনাবশে রায়খানা ছড়িয়া ফেলিয়া দিয়া উঠিয়া ঘরের মধ্যে পায়চারি আরম্ভ করিলেন। উপরের ঘরটাতেই জুমদাম হুটপাট শব্দে ঐ আত্মীয়দের ছেলেগুলি যেন মগের উপদ্রব আরম্ভ করিয়া দিয়াছে । কুটুবাবু অভ্যস্ত বিরক্তিভরে উপরের দিকে চাহিয়া বলিলেন, ভগবান, রক্ষে কর । চাকরট ঘরের মধ্যে আসিয়া কতকগুলা চিঠি টেবিলের উপর রাখিয়া দিল। চিঠিগুলা দেখিতে দেখিতে একখানা অতি পরিচিত হাতের লেখা খাম দেখিয়া সাগহে খুলিয়া ফেলিলেন। ই-পুরাতন বন্ধু সেই বৃদ্ধ মুন্সেফবাবুরই চিঠি ! এই বিবাহে আসিতে অক্ষমতার জন্ত ক্ষমা চাহিয়া তিনি লিথিয়াছেন— “ষাবার বাতিক অসম্ভব রূপে প্রবল হ'লেও বাতের সঙ্গে যুঝে উঠতে পারলাম না, পরাজয় মানতে হ’ল । বিছানায় শুয়ে গুয়েই আপনার ছেলে ও বেীমাকে আশীৰ্ব্বাদ করছি। ডাকযোগে আশীৰ্ব্বাদীও কিছু পাঠালাম, গ্রহণ করবেন ।” পরিশেষে লিথিয়াছেন, “আজ একটা কথা বলব, রাগ করবেন না । একদিন আপনি বলেছিলেন ম-লক্ষ্মীর অভ্যেস হ’ল লোকের মাথার ওপর দিয়ে পথ করে চল । র্তার চরণ দুখানি আপনি পথের ধুলোয় নামাব বলেছিলেন। কিন্তু টেনে টেনে নিজের মাথাতেই চাপালেন যে ! লঙ্গ। পাবেন না, চরণ দুখানি এমনই লোভনীয়ই বটে, মাথায় না ধরে পারা ধায় না ! মাথায় কি দেবীর রজত-রথের উপযোগী রাজপথ তৈরি হয়েছে, বলি টাক পড়েছে— ीक ?” চিঠিখানার কথাগুলি যেন তীরের মত র্তাহার মস্তিক্ষে গিয়া বিঁধিল । উত্তেজিত অন্ধস্থ মনের মধ্যে অকস্মাৎ একটি অদ্ভুত মুহূৰ্ত্ত আসিয়া গেল । সমগ্র জীবনট। এই মুহূর্তের মধ্যে ছায়াছবির মত র্তাহার মনশ্চক্ষুর সন্মুখ দিয়া ভাসিয়া গেল। এই ঘর এই ঐশ্বৰ্য্য সমস্ত যেন কুৎসিত ব্যঙ্গে হিহি করিয়া হাসিতেছে । আবার মনে হইল, ঘরের দেওয়ালে ঝুলানো ছবিগুলির মধ্যে সমস্তগুলিতেই মুন্সেফবাবুর ব্যঙ্গ-হান্ত-বক্র মুখ ভাসিয়া উঠিয়াছে । রতনপুরের কালীর মা—পারুলের খামাঠাকরুণ উপরতলায় বিজয়োল্লাসে কি তাণ্ডব নৃত্য জুড়িয়া দিয়াছে ! তিনি থর থর করিয়া কঁাপিতে কঁাপিতে একখানা আসনে বসিয়া লুটাইয়া পড়িলেন। চাকরটা শঙ্কিতভাবে ডাকিল, ‘বাবু ! কোন উত্তর নাই । দেখিয়া শুনিয়া চাকরটা চীৎকার করিয়া উঠিল । ডাক্তার আসিয়া বলিল, 'ব্ৰেন ষ্টীভার।’ তিন দিনের দিন মুটুবাবু মারা গেলেন। মৃত্যুর পূৰ্ব্বে সামালুক্ষণের জঙ্ক জ্ঞান ফিরিয়াছিল। প্রবীণ ব্যক্তিগণের অন্তরোধে তাহার পুত্র তাহাকে বলিল, “বাবা, ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করুন।” স্থির দৃষ্টিতে চাহিয়া ভ্র কুঞ্চিত করিয়া কুটুবাবু বলিলেন, ‘মনে পড়ছে না ? এক জন বলিলেন, ‘তুমি সরে বস, তোমার মাকে বসতে দাও । উনি বলে দিন কানে কানে ইষ্টমন্ত্র ? গৃহিণী আসিয়া অশ্রুরুদ্ধকণ্ঠে স্বামীর কানে ইষ্টমন্ত্র উচ্চারণ করিলেন। কিন্তু ততক্ষণে মুটুবাবু আবার জ্ঞান হারাইয়া প্রলাপ বকিতে আরম্ভ করিয়াছেন। প্রলাপের মধ্যেও তিনি যেন কোন মোকদ্দমার সওয়াল করিতেছিলেন— “My Lord, go through the eye of a needle than for a it is easier for a camel to rich man to enter into the Kingdom of God,” [ ধনীর পক্ষে স্বৰ্গরাজ্যে প্রবেশ অপেক্ষ স্থচের মুখে উটের প্রবেশও সহজ ]