পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SやBの প্রবাসী ●いこ88 ঈর্ষ, মান, বিরহ প্রভৃতি কবির পীযুষ-বাণীতে মধুর ভাবে ব্যক্ত হয়েছে । দুটি কবিতায় কবি নারীর প্রতি নারীর অস্তলীন এবং সদাআত্মপ্রকাশোন্মুখ সন্দেহ ও ঈর্ষার একটি স্বন্দর চিত্র অঙ্কিত করেছেন। নায়িকা নায়কের কাছে দূতী প্রেরণ করছেন। সে দূতী তার অতি প্রিয় ও বিশ্বস্ত সখী, তথাপি র্তার সন্দেহের অভাব নেই। দূতীকে প্রিয়ের কাছে পাঠাবার সময়ে নায়িকা বলছেন—দৃতি ! তুমি তরুণী, সেও যুব ও চঞ্চলচিত্ত, তোমার সঙ্গে তার দেখা হবে নির্জন কাননে, দশ দিকও অন্ধকার হয়ে আসছে, বসন্তবাতাস মন হরণ করে বইছে, আমার কাছ থেকে মধুমিলনের বার্তা বহন ক’রে তুমি তার কাছে যাও, তোমার দেবতারা তোমাকে রক্ষা করুন। আবার দূতী যখন ক্লাস্ত হয়ে ফিরে এল, তখন নায়িকার সন্দেহাকুল ও ঈর্ষাদগ্ধ চিত্ত বাধা মানল না—তিনি তখনই দূতীকে জেরা আরম্ভ করে দিলেন—দৃতি ! তোমার দীর্ঘশ্বাসের কি কারণ, বেণী ঢ’লে পড়েছে কেন, মুখ ঘৰ্ম্মাক্ত কেন। দূতীও তাড়াতাড়ি উত্তর দিল—ত্বরিত প্রত্যাবৰ্ত্তন হেতু, শুভবাৰ্ত্তা হেতু, ইত্যাদি। তথাপি নায়িক মুখের উপর বলে দিলেন—দৃতি । বাজে অজুহাত দিচ্ছ, তোমার অধরযুগল যে স্নান পদ্মের আকার ধারণ করেছে, সে সম্বন্ধে তোমার কি বলবার আছে ?২ স্বকোমল চিত্তবৃত্তির রাজ্যে নারীর হৃদয় প্রেমের শেষ সীমানাটুকু পর্যন্ত অকাতরে অমৃদ্বেগে অধিকার করে সগৌরবে বিজয়-পতাকা উডডয়মান করে, পুরুষ এক্ষেত্রে যেন কোণ-ঠাসা। কিন্তু পুরুষে পুরুষে যে প্রীতির সৌধ অভ্রংলিহু হয়ে মাথা তুলে খাড়া থাকতে পারে, নারীতে নারীতে এ সম্পর্কের গঠন সে তুলনায় একেবারে কুড়ে (১) সুভাষিত-রত্ন-সার হস্তলিখিত পুথি রয়াল এশিয়াটিক সোসাইট অব বেঙ্গল-১০ ৫৬৬-১৩-সি-৭. ফলিও ৪ • (क), কবিতা-সংখ্যা ৫৪, ইত্যাদি । (২) সুভাবিত-সার-সমুচ্চয়, হস্তলিখিত পুথি, রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইট অব বেঙ্গল—১-৫৬৬-১৩-সি ৭, ফলিও ৪e (খ) ; বল্লভদেবের স্বভাবিতাবলী কবিতা-সংখ্যা ১৪৪• ; हेछा ि। ঘর—তার পাতার ছাউনির ভিতর দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। নারীর-হৃদয়—শতদল উদীয়মান রবির আবির্ভাবগৌরবে এমনি এক দিকে ঝুকে পড়ে যে তা অন্য সব দিকের প্রতি আত্মবিশ্বত হয়ে যায়—তাতে তার পূৰ্ব্বসঞ্চিত স্নেহপ্রীতির শিশির-কণ কিছু বা ঝরে যায়, কিছু বা রবি-রশ্মিতে শুকিয়ে যায়। এতে নারীর অগৌরবের কিছু নেই, এটি স্বাভাবিক। এই বৃহত্তর সত্য বিশ্লেষণ করতে করতে এ সত্যও ধরা পড়ে যে দৈনন্দিন কাৰ্য্যক্ষেত্রে পুরুষ পুরুষকে যে-পরিমাণে বিশ্বাস করে, নারী নারীকে সেপরিমাণে করে না, প্রেমের রাজ্যে তো কথাই নেই । কবি শলা তার নারীদের দিয়ে এই কথা উপলব্ধি করেছেন । আর একটি কবিতায় শীল একটি মজার কথা বলেছেন— সেটি হচ্ছে পুরুষের মান । কাবো নায়িকার মানের কথাই সৰ্ব্বত্র দৃষ্ট হয়—নায়ক মাণিনী নায়িকার মান ভঙ্গ করেন । কিন্তু শীলার কবিতায় বিরহজর্জরিত-ভঙ্গু নায়িকাই নায়কের মান-ভঙ্গে রত। নায়িক বলছেন—হে নাথ ! বিরহানলে শরীর আমার জলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে, নিষ্করণ যমও আমায়ু ভুলে আছে, তুমিও মানব্যাধিগ্রপ্ত হ’লে—এমন ক’রে কুসুমকোমল নারী আমি কি ক’রে বেঁচে থাকি ও মহিলা-কবি যে পুরুষের মানের কথাই শুধু বলেছেন তা নয়, পুরুষের বিরহ-অবস্থাও বর্ণন করেছেন। কবি বলেছেন–প্রিয়া-বিরহিত ব্যক্তির হৃদয়ে চিন্ত সমাগত হয়েছে, তা দেখে নিন্দ্র। ঐ ব্যক্তিকে ছেড়ে পলায়ন করেছে । অন্যান্ত রাত্রিতে মিত্র থাকে একেশ্বরী দেবী হয়ে, আজ তার স্থান চিস্ত এসে অধিকার করেছে ; তাই চিন্তাকে সতীন ভেবে নিদ্রা সেই কৃতঘ্ন পুরুষকে গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। বিরহী পুরুষের মনস্তত্ত্ব-বিশ্লেষণে নারী-কবির এ আত্মনিয়োগ স্বমধুর। একটি স্বমধুর কবিতায় কৰি অসতী নারীর চাপল্য ও তরলতাপূর্ণ জীবনের বিষময় ফল দেখিয়েছেন। ষে-নারীর (৩) শাঙ্গ ধর-পদ্ধতি, কবিতা-সংখ্যা ৩৫৭২ । (৪) বল্লভদেবের স্বভাৰিতাবলী, কবিতা-সংখ্যা ১১১৭ ৷