পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 و& ॐ द्रां मेंौ శ్రీశ్రీశ్రీ ওঠানামা, পথচারী জনতার কোলাহল, মোটরের হর্ণ-•• কিছুতেই তার তন্দ্রার কোন ব্যাঘাত ঘটে না। মনে হয়, এই সময়টুকু ছাড়া জীবনে তাহার বিশ্রাম করিবার অবসর নাই...বাড়ী আর কৰ্ম্মস্থলের মধ্যে এই স্বল্প ব্যবধানটুকুই তাহার সমস্ত অবকাশ ও স্বপ্ন-•• বিকালের ব্যাপারটা একটু অন্ত রকম। ট্রাম ধরিবার তাড়া নাই বলিয়াই বোধ হয় হরিচরণ বাৰু আপিস হইতে বাহির হন সকলের শেষে । থাতাপত্রগুলি গুছাইয়া, ক্যাশ মিলাইয়া, আপিস-ঘরের দরজা-জানালাগুলি ঠিকভাবে বন্ধ হইল কি না দেখিয়া লইয়া যখন তিনি রজাস কোম্পানীর আপিসের তিনতলার ফ্ল্যাট হইতে মামিয়া আসেন, তখন পথের দুই ধারে সারি সারি অালো জলিয়া উঠিয়াছে । পথে আলো জলিতে দেখিয়া তিনি বাড়ী ফিরিবার সময় ঠিক করেন কি না বলিতে পারি না, কিন্তু ইহার ব্যতিক্রম ঘটে কদাচিৎ ৷ কখনও বা ট্রামে পরিচিত কোন বন্ধুর সঙ্গে দেখা হইয়। যায়। কখনও বা হয় না। যে-দিন সঙ্গী জুটিয়া ধায়, সেদিন হরিচরণ বাবুর বাড়ী ফিরিবার কথা আর যেন মনেই থাকে না । গল্পে এবং আলাপে সমস্ত পথ যেন ব্যালান্স-শীট অপেক্ষ রমণীয় হইয়া উঠে। আলোচনার বিষয়বস্তু অবশু বিবিধ—একটু বৃষ্টি হইলেই কালীতলার কাছটায় কি বিত্র জল জমিয়া উঠে, কপোরেশনের কৰ্ত্তাদের এ সব দিকে নিজেদের দৃষ্টি রাখা নিতান্তই কৰ্ত্তব্য, কলিকাতার শহরে পয়সা ফেলিয়া সিনেম দেখিবার জন্ত এত লোক কোথা হইতে আসে, তাহদের সহপাঠী রামানুজ মিত্র আঠারো টাকায় পোষ্ট-আপিসে ঢুকিয়াছিল, আজ কিন্তু তার মাহিনাট। গিয়া পৌছিয়াছে ছয়-শ’র কাছাকাছি,— "তোমার বড়মেয়ের ছেলেপুলে ক'ট ? 'মেজছেলেটাকে ইস্কুলে দিলে, ন, এখনও পাড়ায় পাড়ায় তেমনি ডাকাতি ক'রে বেড়াচ্ছে "---এমনই বিবিধ প্রসঙ্গে এবং প্রশ্নে পথ যেন দেখিতে দেখিতে ফুরাইয়া যায়। শুশমবাজার ট্রাম-ডিপোর কাছাকাছি হঠাৎ সচকিত হইয়া হরিচরণ বাবু, ফিরতি ট্রাম ধরিবার জন্য নামিয়া পড়েন । পরিচিত কাহারও সহিত যেদিন দেখা হয় না, সেদিন হরিচরণ বাৰু হয় পুরা দামে একখানি বৈকালী কাগজ, কিংবা আধা দামে সেই দিনের প্রাতঃকালীন কাগজ কিনিয়৷ ফেলেন। পাশ্ববর্তী কাহারও হাতে যদি দৈবক্রমে সেদিনের একখানা কাগজ দেখিতে পান, তাহা হইলে পয়সা খরচ করিয়া কাগজ পড়িবার প্রয়োজন আর হয় না। কেমন একটু সৌজন্য এবং বিনয় প্রকাশ করিয়া কাগজখানি তিনি তৎক্ষণাৎ চাহিয়া লন। পাতা উল্টাইতেই সৰ্ব্বাগ্রে তাহার চোখ পড়িয়া যায় শেয়ার-মার্কেটের রিপোর্টগুলির উপর । বস্তুত: নারীহরণের মামলার চিত্তাকর্ষক বিবরণের তুলনায় এগুলি তাহার নিকট অনেক বেশী লোভনীয় মনে হয় । তাহার জন্য সকলের চেয়ে বড় খবর থাকে শুধু বিশেষ একটি পাতায় । জলতিবাড়ী চা-বাগানের শেয়ারের উপর এবার কত পাসেণ্ট ডিভিডেও মিলিতে পারে তাহারই একটা আনুমানিক হিসাব কষিতে কষিতে তিনি উৎফুল্ল হইয় উঠেন। কুমারঘুবীর শেয়ারটা হঠাৎ একটু নামিয়া গেলে তিনি যাবতীয় অংশীদারের হইয়া দুঃখবোধ করিতে থাকেন । এই বিশেষ পৃষ্ঠার অতিতুচ্ছ বিবরণটুকুও যখন শেষ হইয় ধায়, তখন হরিচরণ বাবু বাধ্য হইয়া অঞ্চান্ত পৃষ্ঠাগুলির প্রতি মনোনিবেশ করেন । খবরগুলি সব দিন পড়িয়া দেখিবার সময় নয় না, হেড-লাইনগুলির উপর একবার দৃষ্টিপাত করিয়াই তিনি যেন সব বুঝিয় ফেলেন। তাহার ঠোঁটের প্রাস্তে অবিশ্বাসের একটু ক্ষীণ হালি দেখা দেয়। ট্রেনে ডাবলুঠের সংবাদ পড়িয়া বিস্মিত হইবার বয়স হরিচরণ বাবুর কবে কাটিয়া গিয়াছে ; মনে মনে একটু হাসিয়া হরিচরণ বাবু ভাবেন : খাস লিখিয়াছে। লিখিবার ক্ষমতা আছে, মাথায় কল্পনা আছে ছোকরাদের । নহিলে কাগজ বিক্রী হুইবে কেন ? বাড়ী ফিরিয়া মুখ হাত ধুইতে কোন দিন আধ ঘন্টার বেশী সময় লাগে না । তার পর কাপড় ছাড়িয়া হরিচরণ বাবু আহিকে বসেন। আহ্নিক সারিয়া উঠিতে উঠিতে রাত ন'টা। তার পর ছেলেমেয়েগুলির একটু খোজখবর, যখন যেটি সবচেয়ে ছোট তাহাকে কোলে লইয়া একটু আদর, বড় ছেলেমেয়েগুলির পড়াগুনার জন্ত মাষ্টার যথাসময়ে আসিতেছেন কি না সে-সম্বন্ধে একটু কৌতুহল প্রকাশ-ভার পরেই জাহার-পৰ্ব্ব ! আহারাদি শেষ হইবার পূর্বেই চাকর জাসিন্ম