পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जठीघ নেওয়া একেবারেই অসম্ভব। আপনি যে আশা করছেন— আমি হয়ত কোন দিন শিল্প-দেবতাকে স্বষ্টির পথেও অমুসন্ধান করব, তা আরও স্বপূরপরাহত। এত দিন ভুলেও কখনও সে পথের কাছ ঘেঁষেও চলি নি। অথচ এ দুনিয়ার সঙ্গে কারবার সে নেহাৎ আজকের কথাও নয়। কারবার যত দিনের, তার অৰ্দ্ধেকটা গেছে পরীক্ষ-পাসের চেষ্টায়। অপর অৰ্দ্ধেকের তিন-চতুর্থাংশ গেছে জেলে জেলে । বাকী সময়টুকু কেটেছে রাজনীতির কচকচি ও রুজি-রোজগারের দাপাদাপিতে। ছবি ও পুতুলের সঙ্গে কোন নিষ্ট আমার দেখ+সাক্ষাৎ নেই । কোন শিল্প-প্রদর্শনীর ছায়াও মাড়াই নি কোন দিন। এমন কি, এত বছর কলকাতায় থেকেও একটি বারের ভরেও থিয়েটারে, কিংবা খেলার মাঠে যাওয়া হয়ে ওঠে নি বেউল্লা সময় নষ্ট হবে ব'লে। এই সব কারণে জীবনটা বড়ই একপেশে হয়ে গড়ে উঠেছে। বয়সটা য হয়েছে, তাতে এখন বন-গমনের উদ্যোগ করলেই হয়—বড়জোর আর দু-তিন বছর জের টানা চলে । এখন আবার আগাগোড়া ভোল ফিরিয়ে জীবনটাকে নূতন করে শিল্পস্বষ্টির উপযুক্ত ক’রে তোলা-তা কি আর সম্ভব ? রাজনীতির ঘোট পাকাবার ফাকে ফঁাকে কখনো মনে হয়েছে—দেশ বলতে কি বুঝি--আমাদের সংস্কৃতি বলতে কি বুঝি ? তার ফলে পুরনো ভারতের পুঞ্জি খুঁজতে গিয়ে আট-সাপ বেরিয়ে পড়েছে এবং তার বিষ-ক্রিয়াঙ কিছু কিছু আরম্ভ হয়েছে। তাই কু-চার থান বই পড়েছি । এখন বই-পড়া সম্বন্ধে আমার কিছু বক্তব্য আছে । ১৯২৭ সালে মাদ্রাজ কংগ্রেসের পরে ও-দেশের কতকগুলি প্রসিদ্ধ প্রসিদ্ধ স্থান দেখতে বেরিয়েছিলাম—তীর্থ করতে অবগু নয়। তীর্থের পরে আস্থা হারিয়েছি অনেক আগে, গয়ায় তীর্থ করতে গিয়ে । সে কথা ধাকৃ। ফেরার পথে রামেশ্বর ষ্টেশনে যখন ময়মনসিংহের শ্ৰীযুক্ত অমরেন্দ্রনাথ ঘোষ মহাশয় বললেন, “ও মনোরঞ্জন ! মুরলাম ত অনেক, কিন্তু দেখলাম কি ?” তখন আমি জবাব দিয়েছিলাম, “দেখবার যে কিছু নেই, তা ত দেখলেন । একটা বিষয় সম্বন্ধে অন্ততঃ ল্যাঠা চুকলো !" অথচ সেবারে কাঞ্চি, মহাবলীপুর, তামোর, ত্রিচিনাপল্লী, ঔরঙ্গম, মাছরা, রামেশ্বর প্রভৃতি যে-সব স্থান দেখেছিলাম, সেখানে অম্ভরীনের পত্র : ভারত-শিল্পের অনুশীলন SෂONE ভারতীয় শিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শনের অনেকগুলি এখনও অটুট অক্ষুণ্ণ আছে। দেখেছি সবই, অথচ শিল্পকলার সাক্ষাৎ মেলে নি কোথাও । না দেখেছি ভক্তের চোখে—না কলারমিকের চোখে । কিন্তু এখন কয়েকখানা বই পড়ে বুঝতে পারছি ষে অমর বাবুর ল্যাঠা যদি সত্যি চুকেও থাকে, তৰু আমার ল্যাঠা চোকে নি—মনে হচ্ছে, এখন যদি আর একবার যেতে পারতাম তবে হয়ত সত্যি দেখবার মত কিছু দেখতে পেতাম । আসল ছবি ও আসল পুতুল কিংবা সে সকলের খুব ভাল প্রতিলিপি দেখা যে অত্যাবগুক, তাতে সন্দেহমাত্র নেই । কিন্তু আমার মনে হয়, আমার মত অনভিজ্ঞ অনুসন্ধিৎসুর পক্ষে বই পড়ে আট সম্বন্ধে খানিকট ধারণা করে না নিলে, আটের রস গ্রহণ করা মুক্ষিল । বই পড়ে শিল্প-স্মৃষ্টি হয় না সে আমি বুঝি। সত্যিকারের শিল্প-সৃষ্টি হয়ত কতকটা (unconscious creation) wo–c5& Ntaz oréz's cost: উদ্ভূত হয়ে আপনার গরজে আপনি ফুটে ওঠে কমল হয়ে চৈতন্ত-সরোবরের প্রকাগুতায় । কিন্তু শিল্প-স্বষ্টির আস্পদ্ধ যার নেই—ষে চায় শুধু শিল্পের মর্শ্বকথাটি বুঝতে ও সম্ভব হ’লে তার রসের ভাণ্ডার লুটতে, সে লোকের পক্ষে তা কেমন ক’রে সম্ভবপর হবে, ভাল মন্দ বুঝবার ক্ষমতা না থাকলে ? ছবি দেখে সবাই-ভালও তাদের লাগে বটে ; কিন্তু উচ্চত্তৰ শিল্প-সৃষ্ট্রির রস-গ্রহণ সম্ভব কি শিল্পের তত্ত্বাংশ ও টেকনিক সম্বন্ধে কিছুমাত্র জ্ঞান না থাকলে ? প্রখমশিক্ষাথীর পক্ষে এ সব নটখটে বিষয়ের ভিতরে ঢোকা শিক্ষার অহুকুল নয় মনে করেই বোধ হয় আপনি বইপড়া সম্বন্ধে উৎসাহ দেন নি। কিন্তু এ বিষয়ে আমার মনে যতটুকু রুচি জেগেছে, তার উৎস কোথা থেকে উৎসারিত জানেন —ি আমরা আজ যদিও পতিত, তবু আমাদের গৌরব করার কিছু আছে কি না, তা জানবার আকাঙ্ক্ষা থেকে। তাই শিল্পের তত্ত্বাংশ, উৎপত্তি, ইতিহাস, পুরাতত্ত্ব ইত্যাদি সম্বন্ধে জানবার আগ্রহই আমার বেশী । তবে আমি যে এ-রসের রসজ্ঞ হ'তে চাই নে, তা নয়, বরং সেদিকে একটা ঝোক আস্তে আস্তে ক্রমেই বাড়ছে । বর্তমান অবস্থায় আমার পক্ষে ষা সম্ভব, তা করবার চেষ্টাও জামি করি। বই পড়ে ও তার ভিতরকার খেলেী