পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রেঙ্গুনে জলক্রীড় মেটাকাট থেকে বেরিয়েই পাহাড় এবং জঙ্গলে ভরা একটা গিরিসঙ্কট পার হতে হয়। এই সঙ্কীর্ণ পথে প্রায় এক মাইল গিয়ে আমাদের গরুর গাড়ী নিবিড় জঙ্গলে পড়ল। এই জঙ্গলের মুখেই মাধ্যাহিক ক্রিয়া সমাপন ক’রে পরে অগ্রসর হব ভেবে আবার একটা পাগল-ঝোরার সন্ধান করলাম। এখানে একটা সামান্ত দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও কতকগুলি গাড়ী আমাদের সঙ্গে এসেছিল কিন্তু রসদের গাড়ী পড়েছিল পিছিয়ে। প্রায় দু-ঘণ্ট। অপেক্ষা করেও যথন তাদের সন্ধান পেলাম না তথম অন্যান্য গাড়োয়ানদের পাঠালাম তাদের খোজে। তারা গিয়ে দেখে, ঢালু পাহাড় বেছে বেছে আমাদের রসদের গাড়ীর সঙ্গেই রসিকতা করেছে । সেই বন্ধুর পথে গাড়ী গেছে উণ্টে আর গাড়োয় ন ছিটকে এক ধারে পড়ে আছে। টুকরিতে যে-সব ফল এবং তরীতরকারি ছিল তা কর্দমসিক্ত পথে পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে । গাড়োয়ানটির বুকে সামান্ত আঘাতও লেগেছিল । সেই উল্টানে। গাড়ী সোজা ক’রে যখন আমাদের দলবল ফিরে এল, তখন স্বৰ্য্যদেব পশ্চিম গগনে। ক্ষুধাতৃষ্ণায় তখন আমরা কাতর, সঙ্গে সামান্ত যা কিছু ছিল তাই দিয়ে সবার ক্ষুণ্ণিবৃত্তি করা হয়। পথের এই অনিবার্ষ্য বিপদের জন্যে আজ আমরা আর বেশ দূর যেতে পারি নি। তিন-চার মাইল যাবার পরে ‘কমথে’ ফরেষ্ট বাংলোর সন্ধান পাওয়া গেল । সেখানে রাত্রিযাপনের পর, পরের দিন বেল বারটা নাগাদ চাইডো গ্রামে পৌছলাম । চাইডে একটি সমুদ্ধিশালী এবং বৃহৎ গ্রাম ; বহু প্রবাসী ゞいこ、88 লোকের বাস । এখানকার ম. প্লষ্ট বাংলোধু আমর সকলে উঠলাম। মেটাকাট থেকে চাইডে পযস্ত প্রাপ্ত যে কি বিপজ্জনক তা চোথে না দেখলে কথনও ধারণ কর যায় না। প্রতি মুহূর্বেই গাড়ী উটে যাবার সম্ভাবআছে । আমাদের গাড়ী দু-বার এমন গড়িয়ে এসেছিল যে আমরা আজও ভাবি, কেমন ক’রে জখম না হয়ে আমর ফিরে আসতে পেরেছি । চড়াইয়ের সময় পিছন থেকে অনেকবারই কুলিদের গাটাটা ঠেলে দিতে হয়েছে । চাইডোতে এসে আমরা দু-দিন বিশ্রামের জন্যে রয়ে গেলাম। ব্যবসায়-সংক্রাস্ত আমাদের যা দু-একটা কাজ ছিল তা মিটিয়ে আমরা. আবার শু্যাম-সীমাস্তুের দিকে অগ্রসর হলাম। পাহাড়-ঝরণা এবং গভীর জঙ্গল, স্থধ্যের আলোও সেখানে পথ হারিয়ে যায় ; প্রকৃতির এই নির্জনতার এক-টানা স্বরে মন আবিষ্ট হয়ে ওঠে । চাইডোতেই গ্রাম শেষ হ’ল । এখান থেকে আমাদের কৰ্ম্মস্থল আরও ৫০ মাইল দূরে। এই ৫০ মাইলের মধ্যে আর কোন গ্রাম বা জনমানবের সমাগম নেই । এপথে, ফরেষ্ট বাংলোরও কোন সদ্ধান নেই। আমাদের কা৫ে৪ স্ববিধার জন্যে স্থানে স্থানে রাত্রিবাসের উপযোগী ঘর আমরা করিয়ে নিয়েছি। সেখানেই আমাদের কৰ্ম্মচারীরা ধাওয়:আসার পথে রাত্রিকালে বিশ্রাম করে। এখানে নানা রকমের বড় বড় গাছ মাথা উচু করে কত দিন ধরেই না বিরাজ করছে । কতকগুলি গাছ শুকিয়ে গেছে, কতকগুলি কালের স্পর্শে এবং ঝড়ের প্রভাবে ভে:ে পড়ে অাছে। বঁাশ, বেত এবং নানাবিধ লতায় পথ fব রকম দুৰ্গম ও জঙ্গলময় হয়ে আছে তা ধারণ করা যায় না । নিবিড় জঙ্গলের অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে গে-যান দিনের পর দিন চলছে—মনে করতে পারি নে, রৌদ্রের আগে স্পষ্টভাবে এপথে এক দিনও দেখেছি কি না । আমাদের গাড়ীর আগে আগে কুলিরা চলেছে, " কুডুল, করাত, বর্শা এবং বন্দুক নিয়ে, কারণ এখানে বাপ রাস্ত বলে কিছু নেই ; তার চলেছে জঙ্গল কেটে কেে গাড়ীর পথ করতে করতে। কোথাও বা গাছ প't আছে হুমুখে, আর কোথাও বঁাশঝাড় চলার পথে মূৰ্ত্তিমা বিম হয়ে দেখা দিয়েছে। এসব সাফ ক'রে এগিয়ে যাওয়া