পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভার “এটার আকস্মিকতাটা আমি আর ধরলাম না ; আমার মনে হ’ল দারুণ দুর্ভাবনায় ফেলা থেকে নিয়ে প্লাটফৰ্ম্মে জাছাড়-খাওয়ান পৰ্য্যস্ত সমস্তই নয়নতারার কীৰ্ত্তি,—সৎ কীৰ্ত্তি । আমার মনট নমুনতারার উপর প্রসন্নতায় ভরে উঠল এবং অক্ষয়কে চিঠি লেখবার জন্তে, আর তার চিঠির প্রতীক্ষা করবার জন্তে ধে মনে মনে একটা অভিমান এবং আক্রোশের ভাব ঠেলে উঠছিল সেটা একেবারে কেটে গেল । বুঝলাম—এক্ত যে চিঠি তার মধ্যে এই নিতান্ত অবাঞ্ছনীয় জীবটিকে প্লাটফৰ্ম্মে আছাড় খাওয়াবার একটা গৃঢ় অভিসন্ধি জমে উঠছিল। অক্ষয়ের প্রতি আমার মনের ভাবের সঙ্গে নয়নতারার মনের ভাবের এরকম আশ্চৰ্য মিল দেখে তার সঙ্গে বেশ একটা নিবিড়তর ঘনিষ্ঠতা উপলব্ধি করলাম । “তার পরদিন দুপুরের মজলিস বেশ জমাট রকম হ’ল— প্রায় ফুল হাউস্ । কিন্তু কথাবার্তা প্রশ্নোত্তর বেশীর ভাগই চাপা গলায় হওয়ায় এবং বিতর্কের ভাগট৷ কম থাকায় গোলমাল বেশী হ’ল না । আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল । আমি পুকুরের ওপারে কামিনীতলায় বসে মাঝে মাঝে হাসির হবুরা শুনছিলাম আর অক্ষয়কে আমার এই নিৰ্ব্বাসনের জন্ত দায়ী ক'রে মনের নিৰ্ব্বাণপ্রায় রাগের শিখাটিকে আবার পুষ্ট ক'রে তুলছিলাম। “প্রথম পৰ্ব্ব শেষ হ’লে তাস পড়ল । নমুনতারা আমায় বাড়ী থেকে কি একটা আনতে বললে ; এনে দিয়ে আমি দলের পাশে আমার জায়গাটিতে বসলাম । বুধ একবার আমার দিকে চেয়ে হেসে বললে--ছেলেটা কি গো — তাড়ালে যায় না !

  • কে বললে—জাতই ঐ রকম। এর পরে একবার ‘তু করলে হাটু ছেচে, রক্ত-মাখামাখি হয়ে ছুটে যাবে।--

আহ। -- - “ভাসের দান দেওয়ার মধ্যে হাসির হরর ছুটল । থানিকক্ষণ কাটল ।

  • নয়নডারার চোখের আর একটা বিশেষৰ এই ছিল যে, নীচের দিকে চাইলে চোখের স্বপুষ্ট, মন্থণ পাতা স্থটি এমন নিরবশেষভাবে চোখ দুটিকে ঢেকে ফেলত যে মনে ই'ত যেন সে চোখ বুজে আছে। পরে পড়লেখা উপলক্ষ্যে

বর্ষায় به حواوخS আমি এই জিনিষটিকে কিশলয়ে ঢাকা কুঁড়ির সঙ্গে তুলনা করেছি। বেশীক্ষণ এই ভাবে চিন্তা করলে মনে হ’ত যেন সে ঘুমচ্ছে ; কিন্তু তার চোখের গড়নই অপরের চোখে এই দৃষ্টিবিভ্রম ঘটাত ব’লে কেউ বড়-একটা টুকত না । সেদিন কিন্তু হাতের ভাসের দিকে নজর রেখে প্রায় মিনিট দু-তিন ওরকম ভাবে থাকবার পর নয়নতারার মাখাটী হঠাৎ সামনে ঢুলে পড়ল। থকু বললে—ঙমা, নয়ন, তুই যে সত্যিই ঘূমচ্ছিস লা! আমরা ভাবছি.. “নয়নতারা একেবারে হক্‌চকিয়ে উঠল ; প্রথমটা অপ্রতিভ ভাবে বললে- ধ্যাং, কই যা... সঙ্গে সঙ্গে মুখটা বিরক্তিতে কুঞ্চিত ক’রে বললে—না ভাই, সারারাত জাগিয়ে রাখা ভাল লাগে না । কবে যে যাবে-আপদ “এইটুকুই যথেষ্ট ছিল ; আমার মধ্যেকার নাইটু—ষেবীরকে তোমরা কঙ্কাবতীর সন্ধানে পাতালপুরীতে দেখে থাকবে—প্রতিহিংসায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল । আমি জাপদfবদায়ে একেবারে বদ্ধপরিকর হয়ে উঠলাম । “সেদিন সন্ধ্যার সময় জামার মধ্যে হাত গলাতে গিয়ে ছুটি লুকান বিছুটি-ডগার সংস্পর্শে যন্ত্রণা, আর শ্বশুরবাড়ীতে সে-যন্ত্রণ চেপে রাখবার ভদ্রতার মাঝে পড়ে অক্ষয় অস্থির হয়ে পায়চারি করলে খানিকট । তার পরে বোধ হয় ডাক ছেড়ে কাদ্ববার স্ববিধার জন্তে বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশে যেই জুতোয় পা ঢোকাবে—'উঃ' ক'রে এক রকম চীৎকার ক’রেই প'-টা বের করে নিলে—একমুঠো শেয়ালকাটায়ু পাট সজারুর মত হয়ে উঠেছে। “বাড়ীতে একটা হৈ-হৈ প’ড়ে গিয়ে সকলে সাবধান হয়ে পড়ায় আর তখন কিছু নূতন উপদ্রব হ’ল না ; কিন্তু অক্ষয় সন্ধ্যার পর বেড়িয়ে যেই বাড়ীতে ঢুকবে, অন্ধকারে একটা ঢিল বেঁ। ক'রে তার কানের কাছ দিয়ে বেরিয়ে গেল এবং সে চীৎকার ক'রে চালচিত্রের বেড়। টপকাবার আগেই আর একটা সজোরে এসে তার মাথায় লাগল । “সে-সময় হাজার ভল্লাস করেও আততায়ী কে ঠাওরাতে পারা গেল না বটে, কিন্তু তোমাদের বোধ হয় বুঝতে বাকী নেই যে সে মহাপুরুষটি কে । “তোমাদের আদি নিজের নিজের গায়ে হাত দিয়ে বলতে বলা হয় ত নিশ্চয়ই স্বীকার করবে যে আজন্ম কলিকাতা