পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ*o এই তাঁহার ভালবাস । রূপের মুখোসটুকুকেই fক শুধু সে ভালবাসিয়াছিল, মুখোস খুলিয়া লইলেই আর সেদিকে ফিরিয়া তাকাইবে না ? তবে তাহার এ ভালবাসার यूणा कि ? কানে আসিয়া বাজিল জলকক্সোলের মত তং নের মধুর গম্ভীর কণ্ঠস্বর। স্বধা ওই কণ্ঠস্বর কি ভুলিতে পারে ? ঘদি পুড়িয়া ঝলসিয়া যায় ওই দেবকান্তি, যদি স্বধার দুই চক্ষুও অন্ধ হইয়া যায়, তবু বুকের দরজায় আসিয়া আঘাত করিবে ওই পরিচিত কণ্ঠের মন-মাতানে স্বর। স্বধী শুধু রূপ দেখিয়া মুগ্ধ হয় নাই । তাহ হইলে এত সহজেই রূপহীনতার ভয়কে কাটাইয়া উঠিতে পারিত না । মন প্রথম শাসনে শঙ্কিত হইয়াছিল বটে ; কিন্তু পলকের : ধ্যে সে ভয় কাটাইয়া উঠিতেছে কিরূপে ? আপনার মন্ত্যত্বে স্বধার বিশ্বাস আর একটুখানি দৃঢ় হইল, আপনার প্রতি অবজ্ঞা তাহার মন হইতে দূর হইয়া মনটা অনেকখানি হান্ধ! বোধ হইল । তপনের কণ্ঠস্বরও যদি বিধাতা হরণ করিয়া লন, তবুও তপনকে সে ভুলিবে না, এ-কথা বলিংরি যোগ্যতা যেন তাহার থাকে, মনে এই প্রার্থনা তাহার জাগিয়া উঠিল । হৈমন্ত্রীর প্রতি গভীর ভালবাসা ও মমতায় স্বধা আপনার প্রেম বিশ্লেষণ করিয়া আপনাকে পরীক্ষা করিতে বসিয়াছিল । যদি তাহার প্রেমকে সে রূপের মোহ বলিয়া বুঝিতে পারে, তবে তখনই যেন হৈমন্তীর পথ উন্মুক্ত রাখিয়া দিয়, সে আপনি সরিয়া যাইতে পারে। কিন্তু পরীক্ষায় নামিয়। দেখিল আপনাকে ওই হীনপধ্যায়ভুক্ত মনে করিতেই তাহার প্রেম যেন দ্বিগুণ বলীয়ান হইয়া উঠিতেছে। মানুষের রূপ-যৌবন দুদিনের, কিন্তু প্রেম অবিনাশী এ-কথা সে বহুবার পড়িয়াছে শুনিয়াছে, কিন্তু বয়োধৰ্ম্ম এ-কথা কখনও ভাবিবার ইচ্ছা কি অবসর তাহাকে দেয় নাই। আজ যেন প্রৌঢ়ত্বের তত্ত্বজ্ঞান তাহার মধ্যে জাগিয়া উঠিল—পুষ্পের সৌরভ ক্ষণিকের হইলেও অনন্তের কণা তাহার মধ্যে জাগিয়া আছে, ঝরা ফুল হারানো ফুলের স্থতির ভিতরেও সেই ক্ষণিক সৌরভ চিরদিন থাকে । মানুষের শ্বে-রূপ আজ অতীতের গহবরে বিলীন হইয়৷ গিয়াছে, একদিন তাঁহা সত্য ছিল, তাহাকেই এই ধ্বংস প্রবাসী ●N?8経% স্তুপের মধ্যে চিরদিন সত্য বলিয়া দেখিবে এ ক্ষমতা কেন তাহার থাকিবে না ? তপনকে এমন করিয়া ভালবাসাতেই ত স্বধার ভালবাসার গৌরব । কিন্তু হৈমন্তী ? সেও কি এমনই করিয়া ভালবাসে নাই ? সুধার ভালবাসা পাখিব অর্থে হৈমন্তীর দুঃখকামনা নয় কি ? মানুষ ভালবাসার যে প্রতিদান চায়, পরস্পরের ভালবাস পরস্পরকে জানাইবার নিবেদন করিবার যে চিরপুরাতন অপূৰ্ব্ব আনন্দটুকু চায়, তাহার ভিতর তৃতীয় ব্যক্তির স্থান নাই, তাহাতে ভাগ-বাটোয়ার চালাইতে ত সে পারে না । কিন্তু বিধাতা যে তাহার ভাগ্যে তৃতীয় ব্যক্তিই লিখিয়াছেন । সুধা যদি সাধারণ মাহুষের মত ভালবাসার আদান-প্রদানের আনন্দ কামনা করে তবে সে ত হৈমন্তীর দুঃখকামনাই করিতেছে । তপন স্বধাকে ভালবামুক এই ইচ্ছাই ত হৈমস্তীর দুঃখকামনা ! হৈমন্তী স্বধার মনের কথা জানে না, সে যদি আকুল আগ্রহে তপনকে চায়, তাহীকে পাইবার চেষ্ট আ প্রাণ করে, তবে তাহাকে প্রেমধর্মের অনুকূল কামনাই বলিতে হইবে । কিন্তু স্বধা যে হৈমন্তীর মনের কথা জানিয়াছে, স্বধ যে এত দীর্ঘ দিন ধরিয়া হৈমন্তীকে এমন গভীরভাবে ভালবাসিয়াছে, সে যদি হৈমন্তীর মত কামনা করে, তবে আপনাকে যে অপরাধী মনে হয় আপন দেবতার নিকট । তপনকে আপনার অধিকারের গণ্ডী দিয়া ঘিরিয়া রাখিতে চাওয় তপনের কাছে যে কথা একদিন শুনিবার অাশা সে করিয়াছিল সে কথা আর শুনিতে চাওয়া হৈমন্তীর মুখের দিকে চাহিয় তাহাকে কি তবে ভুলিতে হইবে ? উৎসব-আয়োজনের মাঝখানে স্বধার চোখে জল আসিল । মিলি তাহার জীবনের কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইল শুধু ধৈৰ্যের জোরে, শুধু আপনার দৃঢ়চিত্ততার জোরে । হয়ত স্বধাও একদিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইবে ধৈর্য্য ওঁ দৃঢ়চিত্ততার জোরে। কিন্তু মিলির মত পুরস্কার কি তাহার জীবনে আসিবে ? অাজ ত তাহার পথ সে কোথাও দেখিতে পাইভেছে না। কেন বিধাতা তাহাকে এমন কঠিন পরীক্ষায় ফেলিলেন যাহাতে জীবনের প্রথম মুখস্বপ্নের মধ্যেই তাহাকে ত্যাগের মন্ত্র জপ করিতে হুইবে ? তাহার্স যে সোনার স্বপ্নের মধ্যে বিধাতার স্বাক্টর কি বিধানের