পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(Lo ২৪শে মার্চ অস্থায়ী রাজত্বের শেষ দিন, অতি প্রত্যুষে মৈত্ৰেয়র রথযাত্রা হইল । শোভাযাত্রার অগ্রভাগে শঙ্খ ঝণঝর লইয়া টুপি-পরিহিত ছাত্র-ভিক্ষুর দল চলিল, পরে চারিচক্রের রথে আরূঢ় মৈত্ৰেয়র স্বন্দর প্রতিমা, পিছনে দুটি হাতী। এই হাতী দুটি শৈশবে এদেশে আসিয়াছে, শীতের দেশে ইহাদের কষ্ট নিশ্চয়ই হয় কিন্তু বড়ই তোয়াজে ইহাদের রাখা হয় । 橡 嶺 彎 যুদ্ধের আশঙ্কা দূর হইলে ৩০শে মার্চ পথঘাট খুলিল । আমি আমার চিত্ৰপট পুথি সব দ্রুত জড় করিয়া দেশে ফিরিবার ব্যবস্থা করিতে লাগিলাম। মোঙ্গল ভিক্ষু ধৰ্ম্মকীৰ্ত্তি আমায় সকল কাজে অনেক সাহায্য করিলেন। ইনি ছয়সাত বৎসর যাবং সে-রা মঠে স্থায়শাস্ত্র পাঠ করিতেছিলেন । দৃঢ়শরীর এবং অধ্যয়নে মেধাবী এই ভিক্ষুকে আমি সিংহল লইয়া যাইব স্বীকার করিয়াছিলাম । সম্প্রতি র্তাহার সঙ্গে আচাৰ্য্য শাস্তরক্ষিত-স্থাপিত (৮২৬ খ্ৰীঃ, সম্রাটু ঠি-স্ৰোং-দেচন-এর সাহাযো ) এদেশের প্রথম বৌদ্ধবিহার সমূ-য়ে দেখিতে যাইব স্থির হইল। লাস হইতে সমূ-য়ে স্থলপথে ত যাওয়া যায়ষ্ট, জলপথে চামড়ার নৌকায় লাসার নদী উ-ই-ছু দিয়া চাঙ-ছুর ( চাঙস-পো=ব্রহ্মপুত্ৰ ) সঙ্গমে এবং ব্ৰহ্মপুত্রের ক্রোড়ে সম্-য়ে হইতে তিন চার মাইল দূরের ঘাটে যাওয়া যায়। আমরা জলপথে যাওয়াই স্থির করিলাম। প্রত্যেক দিন নৌকা পাওয়া যায় না । ৫ই এপ্রিল খবর পাইয়া আমরা দুষ্ট জন নৌকার ঘাটে গিয়া একটি ক! { চামড়ার নৌকা ) আরোহণ করিলাম। সঙ্গে এক বুদ্ধ সহধারিণী এবং এক জন তেইশ-চব্বিশ বৎসরের যুবক । আমি প্রথমে ভাবিয়ছিলাম ইহারা মাতাপুত্র, কিন্তু সৌভাগের বিযয় ঐক্লপ কোন কথা প্রকাশে বলি নাই, কেন-না যাত্রার fদ্বতীয় দিনে ধৰ্ম্মকীৰ্বি বলিলেন এদেশে ঐ দুইটির মত অনেক স্বামী-স্ত্রী আছে, কারণ ধনী বুদ্ধ বিধবার যুবক পতির অভাব হয় না । এদেশের নৌকা উজান চলে না, স্রোতের সঙ্গেই চলে এবং ফিরিবার সময় নৌকার কাঠ ও চামড়ার খোল পৃথক করিয়া গাধার পিঠে বোঝাই করিয়া আনা হয়। এইরূপ চামড়ার নৌকা গুৰু হাৰা নহে, নদীগর্ভস্থ পাথরে ঠেকিয়া বানচাল প্রবাসী $Nరి88 হওয়ার ভয়ও ইহাতে কম আমরা যাইতে যাইতে কয়েক বার ঐরূপ প্রস্তরের ཝནོ༈ অতুভব করিয়াছিলাম। নৌকার মাঝি ও লস্করের প্রধান কাজ নৌকাকে নদীর খরস্রোত স্থানের উচ্ছল জল ও প্রস্তররাজি হইতে তফাতে রাখী । পথে প্রখর শীত-বাতাসে এবং কাঠফাট রৌদ্রে কষ্ট যথেষ্ট ছিল। আমার ও ধৰ্ম্মকীৰ্ত্তির সঙ্গে দুইটি পিস্তল থাকায় অন্ত ভয় ছিল না। আমাদের প্রতি সন্ধ্যায় তীরের নিকটস্থ কোনও গ্রাম রাত্রি যাপন করিতে হইত। এক গ্রামে এইরূপ রাত্রি-যাপনের সময় শুনিলাম বুদ্ধার যুবকপতির উপর দেবতার আবেশ হইয়াছে। শুনিলাম ইহাদের পেশা তাই এবং পরদিন অনেক বেল পৰ্য্যস্ত অপেক্ষ করিবার পর দেখিলাম স্বামী-স্ত্রী বিলক্ষণ উপহার + ভেট লইয়া ভক্তবুন্দের সহিত আসিতেছেন । তৃতীয় দিন অপরাহ্লে তিব্বতের প্রাচীনতম বৌদ্ধ সম্প্রদাং নিগ,-ম-পাদিগের অন্যতম মঠ দোজ-ডক দেখা দিল ইহা ব্ৰহ্মপুত্রের পার্থে একটি পৰ্ব্বতশিখরে স্থাপিত । ব্ৰহ্মপুত্রের স্রোত সেরূপ প্রখর মহে, উপত্যকাও বিস্তুত দুই ধারে অনেক গ্রাম ও উদ্যান দেখা গেল। সন্ধ্যার সমঃ একটি শিলাময় পাহাড়ের নিকট পৌছিলাম। সশ্রদ্ধভাবে বলিল এই পাহাড় ভোট দেশের নহে, অতি পবিত্রজ্ঞানে ইহাকে ভারত হইতে আনা হইয়াছে বাম দিকে নদীগর্ভে তিনটি ছোটবড় শিলা ছিল, শুনিলা? সেগুলি সো-নম, ফুন ও স্বম্ ( মাতা-পিতা-পুত্র ) এং কিম্বদন্তী আছে যে, সেগুলিও ভারত হইতে আগত ! ত?ে ইহা ত সত্যই যে এ-সকলের নিকটেষ্ট সমূ-য়ে বিহার হার্চ ভারতের পণ্ডিতেরা স্বদেশের অমুকরণে নিৰ্ম্মণি করিয়াছিলেন । রাত্রে নদীর মধ্যের এক দ্বীপে আম: নৌকা বঁধিলাম, সে দ্বীপের উপর ঐরূপ আর একটি বিশাল শিলা রহিয়াছে যাহ উচ্চত্তায় প্রায় ১৫০ ফুট হইবে । এদে*ে উৎসবের সময় বিহারের কোন উচ্চ ও বিস্তৃত দেওয়ft* বিশাল চিত্রপট বিলম্বিত করা হয়। এই শিলাটির মধtধ কিম্বদন্তী আছে ধে সমৃ-য়ে বিহার নিৰ্ম্মাণের সময় এবং চিত্ৰপট টাঙাইবার স্থান প্রয়োজন হইলে এই মহাশিল ভারত হইতে জানা হয় । জুন জুলাই মাসের প্লাবশে সকলে