পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ogo গবল্পেটিকে অনুভব করাইবার নিমিত্ত তাহারা প্রায়োপবেশন করিয়াছে মনে হয়। ভারতবর্ষে অ-বর্মী আমরা অনেকে কাগজে লিখিয়া, সভা করিয়া, সমিতির অধিবেশন করিয়া গবন্মেণ্টকে ঐক্লপ অনুরোধ জানাইয়াছি বটে ; কিন্তু গবয়েণ্ট সেই সব অনুরোধ রক্ষা না-করিলে আমরা প্রাণ রাখিব না, বিষয়গুলি এরূপ গুরুত্বপূর্ণ মনে করি নাই—অস্ততঃ মনে ষে করি তাহার কোন প্রমাণ দিই নাই। বাংল-গবন্মেন্টের পক্ষ হইতে যে বলা হইতেছে, যে, প্রায়োপবেশন বন্ধ ন হইলে র্তাহারা কিছু করিবেন না, তাহার মানে কি এই, যে, প্রায়োপবেশন না-করিলে তাহারা যুক্তিযুক্ত কথা শুনেন ? তাহা হইলে অ-বন্দীদের ঠিকৃ ঐরূপ অঙ্গুরোধগুলিতে এত দিন কর্ণপাত করেন নাই কেন ? যদি বন্দীরা প্রায়োপবেশন ত্যাগ করিলে এখন বর্ণপাত করেন, তাহা হইলে বলিতে হইবে, প্রায়োপবেশনরুপ চাপের প্রয়োজন ছিল। জনগণের (তাহার মধ্যে আমরাও আছি ) মনের উপরও যদি এই প্রায়োপবেশনের চাপের ফলে বিষয়গুলির ঠিৰু গুরুত্ববোধ জন্মে, তাহা হইলে বন্দীদের প্রায়োপবেশন বুথা হইবে না। যথেষ্ট গুরুত্ববোধ জন্মিলে জনগণ ভাল করিয়া প্রতিকার চেষ্টা করিবে । প্রশ্ন হইতে পারে, “তবে কি আপনি প্রায়োপবেশনকে অন্যের মন প্রভাবিত করিবার একটা বৈধ উপায় মনে করেন " উত্তরে বলি, “সাধারণতঃ, মোটের উপর ইহাকে শ্রেষ্ঠ ও যুক্তিসঙ্গত উপায় মনে করি না।” কিন্তু তাহার সঙ্গে সঙ্গে ইহাও বলি, যে, আমাদের মত যাহারা পৃথিবীতে কোন বস্তুর জন্যই প্রাণপণ করে না, তাহার, যাহার কোন-লা-কোন ইষ্টবস্তুর জন্য প্রাণপণ করে তাহাদিগকে পাতি দিভে অধিকারী নহে। আবার প্রশ্ন হইতে হইলে কি বিচারাস্তে অপরাধী বলিয়া প্রমাণিত ও দণ্ডিত এই কয়েদীদিগকে মানবহিতৈষী স্বদেশপ্রেমিক বীর মনে করিতে হইবে ।” উত্তরে নিবেদন করি, “আমরা অ-বন্দী, আমরা কখনও আদালতের বিচারে অপরাধী বলিয়া প্রমাণিত ও দণ্ডিত হুই নাই, অতএব আমরা সকল বিষয়ে ঐ বন্দীদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ জীব, এবং তাহাদের মধ্যে ভাল কিছু থাকিতে পারে 'डोथ्1 পারে, প্রবাসী | ●N?88 ন, এই ভ্ৰাম্ভ অহঙ্কার ত্যাগ করুন। এক-একটি মানুষের সমগ্র ব্যক্তিত্বের বিচারকের উচ্চ আসনে বসিবেন না কোন মানুষ বন্দী বা অ-বন্দী, দশ জনের চক্ষে পাপী ব: পুণাত্মা বলিয়া বিবেচিত, তাহার বিচার না-করিয়া তাহার কাজটি ভাল না মন, অনুরোধটি ভাল না মন্দ, তাহাই ভাবিয়া দেখুন ;–নাই বা সে মানবহিতৈষী স্বদেশপ্রেমিক বীর হইল। আমেরিকার কবি লাওয়েন্স য়ে বলিয়া গিয়াছেন, “Right for ever on the scaffold, Wrong for ever on the throne', তাহা সৰ্ব্বত্ৰ সৰ্ব্বদা ও সাধারণত: সত্য দণ্ডিত ব্যক্তিদের সম্বন্ধে আদঞ্চিত ব্যক্তিদের বিনম্র মনোভাব উৎপাদনে সাহায্য করে ” রাষ্টীয় বা শাসনসম্বন্ধীয় পরিবর্তন ঘটাইবার জন্য : তিনটি পথ ও উপায়ের উল্লেখ আগে করিয়াছি, আওীমানের বন্দীরা তাহার মধ্যে প্রথম উপায় অবলম্বন করিয়াfচল তাহাতে সিদ্ধকাম না হইয় তাহার তৃতীয় উপায় অবলম্ব, করিয়াছে। প্রথম বা তৃতীয়, কোন পথই ধৰ্ম্মনীতিবিষ্ণুদ্ধ অবৈধ উপায় নহে। তবে, কথা উঠিতে পারে, গবন্মের্ণ কিছুই করিবেন না, সুতরাং তাহাদের প্রাণপণ করা থে! এবং যদি তাহাদের প্রাণ যায়, তাহাও হইবে বুথ ; অতএব, প্রায়োপবেশন না-করাই উচিত ছিল । কিন্তু আমরা ও গবন্মেন্টের অনেক কাজের ও অনেক না-করার বাচনিক প্রতিবাদ করি । এই বন্দীর মুদি অষ্ঠের ক্ষতি না-কf: নিজেদের প্রাণাস্ত কাৰ্য্যগত প্রতিবাদ করিতে দৃঢসংকল্প হইয় থাকে, তাহা হইলে তোমার জামার কি বলিবাং আছে ? দুঃখভারপীড়িত নিরাশ জীবন এই ভাবে উৎসর্গ করা যদি তাহার শ্রেয় ভাবিয়া থাকে, তাহা হইলে তাহাদিগকে নিবৃত্ত করিবার ইচ্ছা আমাদের মনে থাকিলেও উপদেশ দিবার অহঙ্কার নাই, এবং এ কথা বলিতেওঁ আমাদের সঙ্কোচ বোধ হইতেছে, “তোমরা প্রায়োপবেশন ত্যাগ কর, আমরা তোমাদের ইচ্ছা পূর্ণ করিবার জন্ম যথেষ্ট চেষ্টা প্রাণপণ চেষ্টা করিব।” কারণ, সেরূপ চেট হইতেছে বা হইবে কি ? যেরূপ চেষ্টা হইতেছে, তাং | নিশ্চয়ই প্রশংসনীয়, কিন্তু তাহা যথেষ্ট, বলিতে পারি না। ন-ইষ্টমে ৪